১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিলেন বাংলাদেশের সাগর-হিমেল

সফলতা অর্জনের পর হিমেল ও সাগর (ডানে)। ছবি : সাগরের ফেসবুক

আজ (২৯ জুলাই) ৩৭ বছর পর সফলভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার নাজমুল হক হিমেল এবং পাবনা জেলার মাহফিজুর রহমান সাগর। অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা দেশের দুই সাঁতারুর জন্য। বাংলাদেশ ও ভারতের ৪ জন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে রিলে সাঁতারে অংশ নিয়েছিলো। তাদের সময় লেগেছে ১২ ঘন্টা ১০ মিনিট।

কাঙ্খিত সফলতা অর্জনের পর সাগর নিজের ফেসবুকে লেখেন, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর অশেষ রহমত এবং আপনাদের সকলের নিরন্তর সমর্থনে, বাংলাদেশ দল ৬ জনের রিলে সাঁতারে ইংলিশ চ্যানেল জয় করেছে। ইংলিশ চ্যানেল আর কোনো কল্পকাহিনী নয়। ৩৭ বছরের অপেক্ষার পর, আমরা শেষমেশ পেরেছি। বাংলাদেশ এসে গেছে — দৃপ্ত পদক্ষেপে। আজ ইতিহাস রচিত হলো ‘

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার আগে ভারত ও ইংল্যান্ডের ছয় সঙ্গীর সঙ্গে বাংলাদেশে দুই সাঁতারু মাহফিজুর রহমান (সামনে বাঁয়ে) ও নাজমুল হক (পেছনে ডান থেকে দুইয়ে)

৬৭ বছর আগে ১৯৫৮ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছিলেন ব্রজেন দাস। শুধু একবার নয়, ছয়বার তা অতিক্রম করে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান কিংবদন্তি এই সাঁতারু। তার দেখানো পথ অনুসরণ করেন আব্দুল মালেক (১৯৬৫) ও মোশাররফ হোসেন (১৯৮৮)-ও। কিন্তু এরপর কেটে গেছে ৩৭ বছর।

সেই খরা কাটাতে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে অবশেষে সফল হয়েছেন বাংলাদেশের দুই সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর ও নাজমুল হক হিমেল। গত ৭ জুলাই ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে যুক্তরাজ্যে যান তারা।

যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে বিভক্ত করা আটলান্টিক মহাসাগরে এই চ্যানেল অতিক্রম করার লড়াইয়ে তাদের সঙ্গে ভারতের আরও দুই সাঁতারু ছিলেন। তারা চার জন যুক্তরাজ্যের ডোভারে শেক্‌সপিয়ার বিচ থেকে সাঁতার শুরু করে ৩৭ কিলোমিটার দূরে ফ্রান্সের কাপ গ্রিস নিজ বিচে যাত্রা শেষ করেন।

এর আগে ইংলিশ আবহাওয়ায় কয়েকদিন অনুশীলনও করেন তারা। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বেশ কয়েকবারই তাদের স্লটে পরিবর্তন করা হয়।

‎নাজমুল কিশোরগঞ্জের ছেলে। তাঁর বাবা আবুল হাসেম ছিলেন আশির দশকের জাতীয় সাঁতারু। জাতীয় পর্যায়ে একাধিক পদক জিতেছেন নাজমুল। এর মধ্যে আছে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে ২০টি সোনা, ১৫টি রুপা। এ ছাড়া ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে জাতীয় সাঁতারে জেতেন পাঁচ সোনা ও চার রুপা।

‎বিকেএসপির সাবেক ছাত্র নাজমুল উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান চীনে। বেইজিং স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি থেকে শারীরিক শিক্ষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ২০১২ সালে চীনে অল বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল ফরেন স্টুডেন্টস সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন হন।

আরেক সাঁতারু মাহফিজুর ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেছেন। ২০১৬ সালে রিও ডি জেনিরোর পুলে নেমেছেন। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ৫০টির মতো সোনা জিতেছেন। ২০১০ এসএ গেমসে দুটি রুপা ও একটি ব্রোঞ্জ, ২০১৬ গুয়াহাটি এসএ গেমসে সাতটি ব্রোঞ্জ, ২০১৯ নেপাল এসএ গেমসে একটি ব্রোঞ্জ জেতেন। ২০১৬ থাই ওপেনে সোনা জেতেন মাহফিজুর।

আরকে/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিলেন বাংলাদেশের সাগর-হিমেল

আপডেট সময় : ০৯:৪২:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

আজ (২৯ জুলাই) ৩৭ বছর পর সফলভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার নাজমুল হক হিমেল এবং পাবনা জেলার মাহফিজুর রহমান সাগর। অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা দেশের দুই সাঁতারুর জন্য। বাংলাদেশ ও ভারতের ৪ জন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে রিলে সাঁতারে অংশ নিয়েছিলো। তাদের সময় লেগেছে ১২ ঘন্টা ১০ মিনিট।

কাঙ্খিত সফলতা অর্জনের পর সাগর নিজের ফেসবুকে লেখেন, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর অশেষ রহমত এবং আপনাদের সকলের নিরন্তর সমর্থনে, বাংলাদেশ দল ৬ জনের রিলে সাঁতারে ইংলিশ চ্যানেল জয় করেছে। ইংলিশ চ্যানেল আর কোনো কল্পকাহিনী নয়। ৩৭ বছরের অপেক্ষার পর, আমরা শেষমেশ পেরেছি। বাংলাদেশ এসে গেছে — দৃপ্ত পদক্ষেপে। আজ ইতিহাস রচিত হলো ‘

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার আগে ভারত ও ইংল্যান্ডের ছয় সঙ্গীর সঙ্গে বাংলাদেশে দুই সাঁতারু মাহফিজুর রহমান (সামনে বাঁয়ে) ও নাজমুল হক (পেছনে ডান থেকে দুইয়ে)

৬৭ বছর আগে ১৯৫৮ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছিলেন ব্রজেন দাস। শুধু একবার নয়, ছয়বার তা অতিক্রম করে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান কিংবদন্তি এই সাঁতারু। তার দেখানো পথ অনুসরণ করেন আব্দুল মালেক (১৯৬৫) ও মোশাররফ হোসেন (১৯৮৮)-ও। কিন্তু এরপর কেটে গেছে ৩৭ বছর।

সেই খরা কাটাতে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে অবশেষে সফল হয়েছেন বাংলাদেশের দুই সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর ও নাজমুল হক হিমেল। গত ৭ জুলাই ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে যুক্তরাজ্যে যান তারা।

যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে বিভক্ত করা আটলান্টিক মহাসাগরে এই চ্যানেল অতিক্রম করার লড়াইয়ে তাদের সঙ্গে ভারতের আরও দুই সাঁতারু ছিলেন। তারা চার জন যুক্তরাজ্যের ডোভারে শেক্‌সপিয়ার বিচ থেকে সাঁতার শুরু করে ৩৭ কিলোমিটার দূরে ফ্রান্সের কাপ গ্রিস নিজ বিচে যাত্রা শেষ করেন।

এর আগে ইংলিশ আবহাওয়ায় কয়েকদিন অনুশীলনও করেন তারা। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বেশ কয়েকবারই তাদের স্লটে পরিবর্তন করা হয়।

‎নাজমুল কিশোরগঞ্জের ছেলে। তাঁর বাবা আবুল হাসেম ছিলেন আশির দশকের জাতীয় সাঁতারু। জাতীয় পর্যায়ে একাধিক পদক জিতেছেন নাজমুল। এর মধ্যে আছে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে ২০টি সোনা, ১৫টি রুপা। এ ছাড়া ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে জাতীয় সাঁতারে জেতেন পাঁচ সোনা ও চার রুপা।

‎বিকেএসপির সাবেক ছাত্র নাজমুল উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান চীনে। বেইজিং স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি থেকে শারীরিক শিক্ষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ২০১২ সালে চীনে অল বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল ফরেন স্টুডেন্টস সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন হন।

আরেক সাঁতারু মাহফিজুর ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেছেন। ২০১৬ সালে রিও ডি জেনিরোর পুলে নেমেছেন। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ৫০টির মতো সোনা জিতেছেন। ২০১০ এসএ গেমসে দুটি রুপা ও একটি ব্রোঞ্জ, ২০১৬ গুয়াহাটি এসএ গেমসে সাতটি ব্রোঞ্জ, ২০১৯ নেপাল এসএ গেমসে একটি ব্রোঞ্জ জেতেন। ২০১৬ থাই ওপেনে সোনা জেতেন মাহফিজুর।

আরকে/সবা