০৩:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইবিতে ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেসবুক পোস্টে সনাতন ধর্মকে অবমাননার অভিযোগে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এই মানববন্ধন করে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই; অসাম্প্রদায়িক বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার ঠাই নাই; ৭১ এর বাংলায় ধর্ম অবমাননাকারীর ঠাই নাই; ২৪ এর বাংলায়, ধর্ম অবমাননাকারীর ঠাই নাই; এক দফা এক দাবি, ধর্ম অবমাননাকারী বহিষ্কার বহিষ্কার হবি ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

জানা যায়, জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে পাঠ করা হলেও অন্য কোন ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়নি। এ ঘটনায় অনুষ্ঠানস্থলেই তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানায় ইবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী। এসময় শিক্ষার্থীদের একাংশ তাকে ভুয়া স্লোগান দেয়৷ পরবর্তীতে রাত ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনলাইন প্লাটফর্ম ‘ইবিয়ান ফ্যামিলি’ গ্রুপে আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল মুহাইমিন ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী একটি পোস্ট করেন যেখানে শ্রীমদ্ভগবদ গীতার কয়েকটি অংশ দিয়ে পোস্ট করেন। সেখানেই সনাতন ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, চব্বিশের আন্দোলনে বড় একটা দাবি ছিলো যে আমরা ধর্ম বর্ণ, শ্রেণী পেশা নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে সুন্দর বাংলাদেশ গড়বো। কিন্তু গতকাল প্রশাসনের অনুষ্ঠানে একটি ধর্মগ্রন্থ ব্যতীত অন্য কোন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়নি, ইবি ছাত্র ইউনিয়ন যার প্রতিবাদ জানায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সনাতনী ধর্মালম্বীদের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা ও আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করা হয়েছে যেটা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সহ সমগ্র হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হেনেছে। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই এবং অবশ্যই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।

সৌরভ দত্ত বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হলেও এখানে মুসলিম ছাড়াও হিন্দু-বৌদ্ধ সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। এতগুলো বছর চলে গেলেও আমরা এখনো বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্থায়ী মন্দির পাই নাই। টিএসসির মধ্যে একটি ছোট রুমে আমরা আমাদের পূজা অর্চনা করি। চব্বিশের এক বছর পূর্তি হয়েছে গতকাল কিন্তু আমরা বুঝতে পারছিনা আর কতটা ২৪ গেলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী মন্দির পাব। আমরা ধর্ম অবমাননাকারী বহিষ্কার চাই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা স্থাপনের দাবি জানাই।

সুকান্ত দাস বলেন, গতকাল রাতে ইবিয়ান ফ্যামিলি গ্রুপে আল হাদিস বিভাগের এক শিক্ষার্থীর পরিষ্কার ভাবে আমাদের ধর্মকে অবমাননা করে পোস্ট দিয়েছে। অনেকেই কথায় কথায় গালি দেন, ক্রিটিসাইজ করেন, কটুক্তি করেন কিন্তু ধর্মের তো কোন সীমানা নেই। এই দেশে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ, অন্য দেশেই হয়তো তারা সংখ্যালঘু। আপনারা কথায় কথায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যালঘুর ব্যাপার নিয়ে আসছেন আর অন্য ধর্মকে অবমাননা করছেন, এটা কাম্য নয়। ধর্মকে আঘাত করলে অনুভূতি কেমন হয় সেটা তো আপনারা জানেন তাহলে আপনারা অন্য ধর্মকে কেন আঘাত করেন। আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তি এবং ইবিয়ান ফ্যামিলি গ্রুপের এডমিনের বহিষ্কার চাই।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘সনাতন ধর্মকে অবমাননার বিষয়ে আমরা একটি লিখিয় অভিযোগপত্র পেয়েছি। কোম ধর্মকে নিয়েই এমন কোন কটূক্তি বা অবমাননা আমরা বরদাস্ত করব না। আজকেই আমাদের প্রক্টরিয়াল বডির সাথে মিটিং করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষে ৮ জন নিহত

ইবিতে ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদে মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৫:০৫:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেসবুক পোস্টে সনাতন ধর্মকে অবমাননার অভিযোগে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এই মানববন্ধন করে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই; অসাম্প্রদায়িক বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার ঠাই নাই; ৭১ এর বাংলায় ধর্ম অবমাননাকারীর ঠাই নাই; ২৪ এর বাংলায়, ধর্ম অবমাননাকারীর ঠাই নাই; এক দফা এক দাবি, ধর্ম অবমাননাকারী বহিষ্কার বহিষ্কার হবি ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

জানা যায়, জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে পাঠ করা হলেও অন্য কোন ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়নি। এ ঘটনায় অনুষ্ঠানস্থলেই তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানায় ইবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী। এসময় শিক্ষার্থীদের একাংশ তাকে ভুয়া স্লোগান দেয়৷ পরবর্তীতে রাত ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনলাইন প্লাটফর্ম ‘ইবিয়ান ফ্যামিলি’ গ্রুপে আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল মুহাইমিন ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী একটি পোস্ট করেন যেখানে শ্রীমদ্ভগবদ গীতার কয়েকটি অংশ দিয়ে পোস্ট করেন। সেখানেই সনাতন ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, চব্বিশের আন্দোলনে বড় একটা দাবি ছিলো যে আমরা ধর্ম বর্ণ, শ্রেণী পেশা নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে সুন্দর বাংলাদেশ গড়বো। কিন্তু গতকাল প্রশাসনের অনুষ্ঠানে একটি ধর্মগ্রন্থ ব্যতীত অন্য কোন ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়নি, ইবি ছাত্র ইউনিয়ন যার প্রতিবাদ জানায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সনাতনী ধর্মালম্বীদের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা ও আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করা হয়েছে যেটা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সহ সমগ্র হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হেনেছে। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই এবং অবশ্যই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।

সৌরভ দত্ত বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হলেও এখানে মুসলিম ছাড়াও হিন্দু-বৌদ্ধ সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। এতগুলো বছর চলে গেলেও আমরা এখনো বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্থায়ী মন্দির পাই নাই। টিএসসির মধ্যে একটি ছোট রুমে আমরা আমাদের পূজা অর্চনা করি। চব্বিশের এক বছর পূর্তি হয়েছে গতকাল কিন্তু আমরা বুঝতে পারছিনা আর কতটা ২৪ গেলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী মন্দির পাব। আমরা ধর্ম অবমাননাকারী বহিষ্কার চাই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা স্থাপনের দাবি জানাই।

সুকান্ত দাস বলেন, গতকাল রাতে ইবিয়ান ফ্যামিলি গ্রুপে আল হাদিস বিভাগের এক শিক্ষার্থীর পরিষ্কার ভাবে আমাদের ধর্মকে অবমাননা করে পোস্ট দিয়েছে। অনেকেই কথায় কথায় গালি দেন, ক্রিটিসাইজ করেন, কটুক্তি করেন কিন্তু ধর্মের তো কোন সীমানা নেই। এই দেশে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ, অন্য দেশেই হয়তো তারা সংখ্যালঘু। আপনারা কথায় কথায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যালঘুর ব্যাপার নিয়ে আসছেন আর অন্য ধর্মকে অবমাননা করছেন, এটা কাম্য নয়। ধর্মকে আঘাত করলে অনুভূতি কেমন হয় সেটা তো আপনারা জানেন তাহলে আপনারা অন্য ধর্মকে কেন আঘাত করেন। আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তি এবং ইবিয়ান ফ্যামিলি গ্রুপের এডমিনের বহিষ্কার চাই।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘সনাতন ধর্মকে অবমাননার বিষয়ে আমরা একটি লিখিয় অভিযোগপত্র পেয়েছি। কোম ধর্মকে নিয়েই এমন কোন কটূক্তি বা অবমাননা আমরা বরদাস্ত করব না। আজকেই আমাদের প্রক্টরিয়াল বডির সাথে মিটিং করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমআর/সবা