০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
যমুনায় ধসে গেলো ৩৫ মিটার বাঁধ

সিরাজগঞ্জে বাড়ছে যমুনার পানি, বেড়িবাঁধে ধস

সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে যমুনার পানির চাপে ধসে গেছে ৩৫ মিটার বাঁধ। গতকাল সোমবার ভোরে উপজেলার জনতা স্কুল সংলগ্ন চৌদ্দ রশি এলাকায় এ বাঁধ ধসে পড়ে। এতে মুহূর্তের মধ্যেই বিলীন হয়ে যায় বাঁধের পাশে থাকা ফসলি জমি। পরে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

স্থানীয় লোকজন জানান, ওই বাঁধটি চৌহালী উপজেলা শহরকে রক্ষা করার জন্য ২০১৫ সালে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু আজ যমুনায় স্রোতে ৩৫ মিটার বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণ হিসেবে নাম প্রকাশ না শর্তে এক স্কুল শিক্ষক জানান, শুষ্ক মৌসুমে তীর রক্ষা বাঁধের কনক্রিটের ব্লকগুলো কিছু অসাধু লোকজন তুলে বাড়িতে নিয়েছিল। মূলত এ কারণে চৌদ্দ রশি এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোলায়মান ভূঁইয়া জানান, বাঁধের প্রায় ৩৫ মিটার এলাকা ধসে গেছে। এ ধস ঠেকাতে জরুরি কাজ শুরু করা হবে। তবে এ নিয়ে স্থানীয়দের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যমুনায় পানি বৃদ্ধি ও স্রোতের কারণে বাঁধের ব্লকসহ জিও ব্যাগ নদীগর্ভে চলে গেছে। পাউবোর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে আবার বাড়তে শুরু করেছে। এতে চৌহালী উপজেলার জোতপাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধের দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে দুপুরে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। পরিদর্শন শেষে ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জোতপাড়া নদীর ঘাটের পশ্চিমে চৌদ্দরশি এলাকার দুটি স্থানের একটিতে প্রায় ৩৫ মিটার এবং পাশের আরেকটি স্থানের ৭ থেকে ৮ মিটার এলাকার বেড়িবাঁধের ব্লক নদীতে ধসে গেছে। বিষয়টি সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, চৌহালীতে বাঁধ ধসের স্থান দেখতে রওনা দিয়েছেন তিনি। ধস ঠেকাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। ২৯ অগাস্ট থেকে যমুনা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এতে সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার নদীতীরের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। এসব এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন নদী তীরের বাসিন্দারা। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১১০ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানি বাড়লেও এই মুহূর্তে বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পাউবোর এই কর্মকর্তা।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

যমুনায় ধসে গেলো ৩৫ মিটার বাঁধ

সিরাজগঞ্জে বাড়ছে যমুনার পানি, বেড়িবাঁধে ধস

আপডেট সময় : ০৭:২৩:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে যমুনার পানির চাপে ধসে গেছে ৩৫ মিটার বাঁধ। গতকাল সোমবার ভোরে উপজেলার জনতা স্কুল সংলগ্ন চৌদ্দ রশি এলাকায় এ বাঁধ ধসে পড়ে। এতে মুহূর্তের মধ্যেই বিলীন হয়ে যায় বাঁধের পাশে থাকা ফসলি জমি। পরে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

স্থানীয় লোকজন জানান, ওই বাঁধটি চৌহালী উপজেলা শহরকে রক্ষা করার জন্য ২০১৫ সালে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু আজ যমুনায় স্রোতে ৩৫ মিটার বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণ হিসেবে নাম প্রকাশ না শর্তে এক স্কুল শিক্ষক জানান, শুষ্ক মৌসুমে তীর রক্ষা বাঁধের কনক্রিটের ব্লকগুলো কিছু অসাধু লোকজন তুলে বাড়িতে নিয়েছিল। মূলত এ কারণে চৌদ্দ রশি এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোলায়মান ভূঁইয়া জানান, বাঁধের প্রায় ৩৫ মিটার এলাকা ধসে গেছে। এ ধস ঠেকাতে জরুরি কাজ শুরু করা হবে। তবে এ নিয়ে স্থানীয়দের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যমুনায় পানি বৃদ্ধি ও স্রোতের কারণে বাঁধের ব্লকসহ জিও ব্যাগ নদীগর্ভে চলে গেছে। পাউবোর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে আবার বাড়তে শুরু করেছে। এতে চৌহালী উপজেলার জোতপাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধের দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে দুপুরে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। পরিদর্শন শেষে ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জোতপাড়া নদীর ঘাটের পশ্চিমে চৌদ্দরশি এলাকার দুটি স্থানের একটিতে প্রায় ৩৫ মিটার এবং পাশের আরেকটি স্থানের ৭ থেকে ৮ মিটার এলাকার বেড়িবাঁধের ব্লক নদীতে ধসে গেছে। বিষয়টি সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, চৌহালীতে বাঁধ ধসের স্থান দেখতে রওনা দিয়েছেন তিনি। ধস ঠেকাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। ২৯ অগাস্ট থেকে যমুনা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এতে সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার নদীতীরের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। এসব এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন নদী তীরের বাসিন্দারা। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১১০ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানি বাড়লেও এই মুহূর্তে বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পাউবোর এই কর্মকর্তা।