০৬:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঋণের কিস্তিতে চাপে সরকার

  • ড় কমছে, বাড়ছে পরিশোধের বোঝা
  • ডলারের রেট ও সুদের হার দুই দিক থেকেই চাপ
  • এলডিসি উত্তরণে বাড়বে বৈদেশিক অর্থনীতির ঝুঁকি

‘আমাদের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ কমে গেছে। তার ওপর দীর্ঘ মেয়াদে নেয়া বিদেশি ঋণ এখন ঘাড়ে চেপে বসেছে। ফলে সুদের হার ও আসল পরিশোধের বোঝা দুই-ই বাড়ছে’- ড. শহীদুল জাহীদ, অধ্যাপক, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন অর্থবছরের শুরুতেই বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে এক বড় ধাক্কার মুখোমুখি হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৪৪ কোটি ৬৬ লাখ ডলার, যেখানে এই সময়ের মধ্যে ঋণ ছাড় হয়েছে মাত্র ২০ কোটি ২৭ লাখ ডলার। অর্থাৎ ঋণ ছাড়ের তুলনায় পরিশোধ হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা একে উদ্বেগজনক প্রবণতা হিসেবে দেখছেন। এই ঋণ পরিশোধের মধ্যে আসল অর্থ ৩২ কোটি ৭৭ লাখ ডলার এবং সুদ বাবদ ১১ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের বছরের তুলনায় এই পরিমাণ ব্যয় প্রায় ১৬ শতাংশ বেড়েছে। পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে কারণ ঋণ ছাড়ের হার কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধের চাপও বেড়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, গত এক দশকে মেগা প্রকল্পগুলোর জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এসব ঋণের বেশিরভাগেরই গ্রেস পিরিয়ড এখন শেষ। ফলে এখন নিয়মিত আসল ও সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে, যার পরিমাণ প্রতিবছরই বাড়ছে। একই সঙ্গে অনেক ঋণের শর্ত কঠিন ও সুদের হার তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এই বোঝা আরও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ওপর আরও চাপ সৃষ্টি হবে।
ইআরডির সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশকে ৪০৯ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠবে। তখন স্বল্পসুদে এবং সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগ কমে যাবে। তদুপরি, উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থাগুলো নমনীয় ঋণের পরিবর্তে কঠোর শর্তযুক্ত ও উচ্চসুদের ঋণ দেবে। ফলে, বৈদেশিক মুদ্রা খাতে চাপ বাড়বে, যা দেশীয় মুদ্রার মান ও সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্যকে বিঘ্নিত করতে পারে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ডলারের রেট সংক্রান্ত ঝুঁকি। টাকার মান ক্রমাগত কমে যাওয়ায়, বিদেশি ঋণের পরিশোধে সরকারকে টাকার অঙ্কে অনেক বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। অর্থাৎ একই পরিমাণ ডলার পরিশোধ করতে সরকারকে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এর ফলে রাজস্ব ঘাটতির চাপ আরও বাড়ছে। এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য মতে, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না। এর সঙ্গে সামঞ্জস্যহীনভাবে বাড়ছে ঋণের পরিশোধের চাহিদা। এর ফলে তৈরি হয়েছে রাজস্ব ঘাটতি। আর সেই ঘাটতি পূরণে সরকারকে আরও ঋণ নিতে হচ্ছে যা এক দুষ্টচক্র তৈরি করছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, টাকার অবমূল্যায়ন, গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়া এবং ঋণের মেয়াদপূর্তি এসব কারণেই আগামী বছরগুলোতে ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বেড়ে যাবে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনায় যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মুখে পড়বে। কারণ, সরকারের রাজস্ব আয় যখন ব্যয় মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়ে, তখন অবশ্যম্ভাবীভাবে আরও বৈদেশিক ঋণ নিতে হয়, যা সামগ্রিক অর্থনীতিকে আরও জর্জরিত করে তোলে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে যদি না বিদেশি ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। বাংলাদেশের বহু প্রকল্প সময় ও বাজেটের দিক থেকে দীর্ঘায়িত হয়েছে, যার ফলে ঋণের কার্যকারিতা কমে গেছে। যথাসময়ে প্রকল্প শেষ না হওয়ায় ঋণের ওপর সুদের বোঝাও বাড়ে। সরকার যে ঢালাওভাবে বিদেশি ঋণ নিয়েছে, তার বেশিরভাগই হয়েছে বাজেট সহায়তা ও অবকাঠামোগত প্রকল্পে। তবে এসব প্রকল্পের অনেকগুলোর ফল এখনো দৃশ্যমান নয়। আবার যেগুলোর কাজ শেষ হয়েছে, সেগুলোর মধ্যেও অনেকের উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
বর্তমানে যে ঋণের শর্তে সরকার অর্থ নিয়েছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই উচ্চসুদের এবং স্বল্পমেয়াদী। এই ঋণ পরিশোধে সময় কম থাকায় চাপ বাড়ছে দ্রুত। আর সময় মতো কিস্তি পরিশোধ না করতে পারলে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলোর দৃষ্টিতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তখন আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আরও খরচে ঋণ নিতে হতে পারে। বাস্তবায়ন নয়, সেই প্রকল্প থেকে কী ধরনের অর্থনৈতিক রিটার্ন আসছে তা মূল্যায়নের সময় এখনই। না হলে সামনের দিনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ, আমদানি সীমিতকরণ, বিনিয়োগ স্থবিরতা সবকিছু মিলিয়ে অর্থনীতির গতি ব্যাহত হতে পারে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদুল জাহীদ বলেন, আমাদের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ কমে গেছে। তার ওপর দীর্ঘ মেয়াদে নেয়া বিদেশি ঋণ এখন ঘাড়ে চেপে বসেছে। ফলে সুদের হার ও আসল পরিশোধের বোঝা দুই-ই বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, “দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো না গেলে এবং উৎপাদনশীল খাতে বৈদেশিক সহায়তা কাজে না লাগাতে পারলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

গুলিস্তানের খদ্দর মার্কেটে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৬ ইউনিট

ঋণের কিস্তিতে চাপে সরকার

আপডেট সময় : ০৭:৪০:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ড় কমছে, বাড়ছে পরিশোধের বোঝা
  • ডলারের রেট ও সুদের হার দুই দিক থেকেই চাপ
  • এলডিসি উত্তরণে বাড়বে বৈদেশিক অর্থনীতির ঝুঁকি

‘আমাদের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ কমে গেছে। তার ওপর দীর্ঘ মেয়াদে নেয়া বিদেশি ঋণ এখন ঘাড়ে চেপে বসেছে। ফলে সুদের হার ও আসল পরিশোধের বোঝা দুই-ই বাড়ছে’- ড. শহীদুল জাহীদ, অধ্যাপক, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন অর্থবছরের শুরুতেই বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে এক বড় ধাক্কার মুখোমুখি হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৪৪ কোটি ৬৬ লাখ ডলার, যেখানে এই সময়ের মধ্যে ঋণ ছাড় হয়েছে মাত্র ২০ কোটি ২৭ লাখ ডলার। অর্থাৎ ঋণ ছাড়ের তুলনায় পরিশোধ হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা একে উদ্বেগজনক প্রবণতা হিসেবে দেখছেন। এই ঋণ পরিশোধের মধ্যে আসল অর্থ ৩২ কোটি ৭৭ লাখ ডলার এবং সুদ বাবদ ১১ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের বছরের তুলনায় এই পরিমাণ ব্যয় প্রায় ১৬ শতাংশ বেড়েছে। পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে কারণ ঋণ ছাড়ের হার কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধের চাপও বেড়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, গত এক দশকে মেগা প্রকল্পগুলোর জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এসব ঋণের বেশিরভাগেরই গ্রেস পিরিয়ড এখন শেষ। ফলে এখন নিয়মিত আসল ও সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে, যার পরিমাণ প্রতিবছরই বাড়ছে। একই সঙ্গে অনেক ঋণের শর্ত কঠিন ও সুদের হার তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এই বোঝা আরও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ওপর আরও চাপ সৃষ্টি হবে।
ইআরডির সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশকে ৪০৯ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠবে। তখন স্বল্পসুদে এবং সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুযোগ কমে যাবে। তদুপরি, উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থাগুলো নমনীয় ঋণের পরিবর্তে কঠোর শর্তযুক্ত ও উচ্চসুদের ঋণ দেবে। ফলে, বৈদেশিক মুদ্রা খাতে চাপ বাড়বে, যা দেশীয় মুদ্রার মান ও সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্যকে বিঘ্নিত করতে পারে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ডলারের রেট সংক্রান্ত ঝুঁকি। টাকার মান ক্রমাগত কমে যাওয়ায়, বিদেশি ঋণের পরিশোধে সরকারকে টাকার অঙ্কে অনেক বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। অর্থাৎ একই পরিমাণ ডলার পরিশোধ করতে সরকারকে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এর ফলে রাজস্ব ঘাটতির চাপ আরও বাড়ছে। এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য মতে, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না। এর সঙ্গে সামঞ্জস্যহীনভাবে বাড়ছে ঋণের পরিশোধের চাহিদা। এর ফলে তৈরি হয়েছে রাজস্ব ঘাটতি। আর সেই ঘাটতি পূরণে সরকারকে আরও ঋণ নিতে হচ্ছে যা এক দুষ্টচক্র তৈরি করছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, টাকার অবমূল্যায়ন, গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়া এবং ঋণের মেয়াদপূর্তি এসব কারণেই আগামী বছরগুলোতে ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বেড়ে যাবে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনায় যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মুখে পড়বে। কারণ, সরকারের রাজস্ব আয় যখন ব্যয় মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়ে, তখন অবশ্যম্ভাবীভাবে আরও বৈদেশিক ঋণ নিতে হয়, যা সামগ্রিক অর্থনীতিকে আরও জর্জরিত করে তোলে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে যদি না বিদেশি ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। বাংলাদেশের বহু প্রকল্প সময় ও বাজেটের দিক থেকে দীর্ঘায়িত হয়েছে, যার ফলে ঋণের কার্যকারিতা কমে গেছে। যথাসময়ে প্রকল্প শেষ না হওয়ায় ঋণের ওপর সুদের বোঝাও বাড়ে। সরকার যে ঢালাওভাবে বিদেশি ঋণ নিয়েছে, তার বেশিরভাগই হয়েছে বাজেট সহায়তা ও অবকাঠামোগত প্রকল্পে। তবে এসব প্রকল্পের অনেকগুলোর ফল এখনো দৃশ্যমান নয়। আবার যেগুলোর কাজ শেষ হয়েছে, সেগুলোর মধ্যেও অনেকের উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
বর্তমানে যে ঋণের শর্তে সরকার অর্থ নিয়েছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই উচ্চসুদের এবং স্বল্পমেয়াদী। এই ঋণ পরিশোধে সময় কম থাকায় চাপ বাড়ছে দ্রুত। আর সময় মতো কিস্তি পরিশোধ না করতে পারলে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলোর দৃষ্টিতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তখন আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আরও খরচে ঋণ নিতে হতে পারে। বাস্তবায়ন নয়, সেই প্রকল্প থেকে কী ধরনের অর্থনৈতিক রিটার্ন আসছে তা মূল্যায়নের সময় এখনই। না হলে সামনের দিনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ, আমদানি সীমিতকরণ, বিনিয়োগ স্থবিরতা সবকিছু মিলিয়ে অর্থনীতির গতি ব্যাহত হতে পারে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদুল জাহীদ বলেন, আমাদের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ কমে গেছে। তার ওপর দীর্ঘ মেয়াদে নেয়া বিদেশি ঋণ এখন ঘাড়ে চেপে বসেছে। ফলে সুদের হার ও আসল পরিশোধের বোঝা দুই-ই বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, “দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো না গেলে এবং উৎপাদনশীল খাতে বৈদেশিক সহায়তা কাজে না লাগাতে পারলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।