০৯:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাড়া সিন্ডিকেট রিক্সাচালকদের

  • বৃষ্টি নামলেই দু-তিনগুণ আদায়
  • বাধ্য হয়েই যাত্রীরা চড়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়ায়
  • অনিবন্ধিত রিকশা দুই লাখের বেশি

বৃষ্টি নামলেই রাজধানীতে চলাচলে শুরু হয় ভোগান্তি। সক্রিয় হয়ে ওঠে রিকশাচালকদের তথাকথিত ‘ভাড়ার সিন্ডিকেট’। বৃষ্টি নামলে গণপরিবহন তেমন পাওয়া যায় না বললেই চলে। তখনই রিকশা হয়ে ওঠে একমাত্র ভরসা। পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া দাবি করেন চালকেরা। বাধ্য হয়েই যাত্রীরা দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়ায় রিকশায় করে গন্তব্যে যেতে হয়।
‎‎বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের গবেষণা বলছে, ২০১৯ সালে ঢাকায় রিকশা ছিল ১১ লাখ। তবে অনেকের মতে, গত পাঁচ বছরে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখের ওপরে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তথ্যমতে, নিবন্ধিত রিকশা মাত্র এক লাখ ৮২ হাজার ৬৩০টি। আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) এই সংখ্যা মোটে ৩১ হাজার। নিবন্ধিত দুই লাখ ১৩ হাজার রিকশার সবই প্যাডেলচালিত রিকশা। এর বাইরে রাজধানীতে সব রিকশাই অনিবন্ধিত। তবে, রাজধানী জুড়ে এখন প্রতিটি মূল সড়ক ও গলিপথে রিকশার যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিয়মীত। পুরো রাজধানী জুড়ে কয়েক লাখ রিকশা থাকলেও শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা বলছে, স্বাভাবিক দিনে যেখানে ৫০ টাকায় গন্তব্যে যাওয়া যায়, বৃষ্টি হলে সেখানে দিতে হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। রিকশাচালকদের একাংশ খোলাখুলি বলেন, ‘বৃষ্টি হলে কষ্ট করে রাস্তায় নামি, তাই ভাড়া বেশি চাইতেই হবে।’ গতকাল ‎েরাববার সরেজমিন রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। ‎‎রিকশা ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ, ‎উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা মানিক খান বলেন, আজকে সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। উত্তরার প্রায় সব গলিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অন্যান্য গাড়ী ও গনপরিবহন তেমন না থাকায় রিকশা এখন আমাদের ভরসা। তবে, বৃষ্টি হওয়ায় রিকশা চালকরা ৫০ টাকার ভাড়া ১০০-১৫০ টাকা চাচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়েই রিকশা চালকদের কাঙ্খিত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আসলে এ শহরে কোন নিয়মের বালাই নেই। যে যার মতো পারছে লুটে নিচ্ছে। রিকশা চালকদের ভাড়ার বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের কোন নিয়মনীতি নেই। যার ফলে রিকশা চালকরা নিজেদের মতো যাত্রীদের কাছ থেকে পকেট কেটে ভাড়া আদায় করছে। মিরপুর এলাকার বাসিন্দা ওয়াহিদুর রহমান নামে একজন বলেন, আমি মিরপুর-১ নম্বর মোড় থেকে রিকশা নিয়েছি মিল্কভিটার সামনে যাবো। অন্যান্য দিন যেখানে এ ভাড়া ৫০-৬০ টাকা দেই। আজকে সেই ভাড়া ১৭০ টাকা দিতে হয়েছে। প্রথমে ১৫০ টাকা ঠিক করলে রিকশা চালক নেমে ১৮০ টাকা দাবি করে বসে। অনেক কষ্টে ১৭০ টাকা ভাড়া দিয়েচলে এসেছি। রিকশাচালকরা একরকম জোর করে ভাড়া নেয়।

অন্যদিকে, রিকশা চালকরা জানান, বৃষ্টির সময় ভোগান্তি শুধু যাত্রীদেরই নয়, তাদেরও হয়।কাঁদাপানি মাড়িয়ে চালাতে হয়, গায়ে ভিজে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বাড়তি ভাড়া দাবি করাকে তারা যৌক্তিক মনে করেন।‎‎ তোঁতা মিয়া নামে গাবতলী এলাকার এক রিকশা চালক বলেন, আমরা বৃষ্টি ছাড়া রিকশা চালাই। তখন শরীর থেকে ঘাম ঝরে পরে। বৃষ্টিতে রিকশা চালালে কাঁদাপানি মাড়িয়ে যাত্রীদের নিয়ে রিকশা টানতে হয়। বৃষ্টির মধ্যে অনেক সড়কে গর্ত থাকায় মাঝেমধ্যে আমাদের টিকশার চাকা আটকে যায়। রিকশা চালাতে গিয়ে গরমে-বৃষ্টিতে ভিজে আমাদের শরীর ঠান্ডা-গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমাদের কষ্টের জন্য বৃষ্টির দিনে আমরা ভাড়া বাড়িয়ে নেই। ‎‎আরেক রিকশা চালক রহমান মিয়া বলেন, আমি গতো ১২ বছর যাবৎ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রিকশা চালাই। বৃষ্টির মধ্যে রিকশা চালাতে গিয়ে কয়েকবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। টানা ৮-১০ দিন বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়েছিলো। তখন তো কেউ আমাদের সাহায্য করতে আসে নাই। আমরা কষ্ট করে বৃষ্টির মধ্যে রিকশা চালিয়ে একটু ভাড়া বেশি নিলেই যাত্রীরা গালাগালি শুরু করে। তারা ভাড়া বেচি নেওয়াটা মানতে পারে না। ‎‎তবে, অনেক রিকশা চালক জানিয়েছে, সরকার যদি ভাড়া নিয়ে রিকশা চালকদের কোন নীতিমালা করে দেয়। তাহলে তারা যৌক্তিক নীতিমালা মেনে যাত্রীদের থেকে ভাড়া নিবেন। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের সংখ্যা নিয়ে তারা কোন তথ্য দিতে পারে নি। সিটি কর্পোরেশন বলছে, ঢাকায় কতো রিকশা চলে তার নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা তাদরে জানা নেই। তবে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গবেষণা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রায় তিন বছর আগে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রায় ১ লাখ ৮৭ হাজার প্যাডেল চালিত রিকশার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর বাইরে আর কোনো তথ্য নেই সিটি করপোরেশনের কাছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, এ ধরনের ভাড়ার সিন্ডিকেট শহরের পরিবহন ব্যবস্থার দুর্বলতারই বহিঃপ্রকাশ। নগরবাসীর জন্য বিকল্প পরিবহনের অভাব থাকায় রিকশাই বৃষ্টির সময় ভরসা হয়ে ওঠে। সেখানেই যাত্রীদের উপর চাপে পড়ে ভোগান্তি বাড়ছে। সিটি করপোরেশন কিংবা ট্রাফিক বিভাগ এ বিষয়ে নজরদারি করে না। তারা মনে করেন, ভাড়া নিয়ন্ত্রণে স্পষ্ট নীতিমালা ও কার্যকর মনিটরিং থাকলে বৃষ্টির অজুহাতে আর কেউ ভাড়া বাড়াতে পারবে না। যদি, নগরীতে চলাচল করা রিকশার নির্দিষ্ট পরিমান নিয়ে সরকারের কাছে কোন তথ্য িেন। যার ফলে, সরকার এ নিয়ে কোন শক্ত কোন পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এদিকে, যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দেশব্যাপী চলাচলরত সিএনজিচালিত হিউম্যান হলার, লেগুনা এবং সিএনজি অটোরিকশায় অস্বাভাবিকহারে বর্ধিত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালাচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী সব গণপরিবহনের ভাড়া সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করে দেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও সরকার এসব পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ না করায় যে যার ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা না থাকায় যাত্রীসাধারণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আইনের আশ্রয় লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে পরিবহন শ্রমিকদের হাতে যাত্রীরা নাজেহাল হচ্ছে। এসব গাড়িতে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা না থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও যাত্রীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ব্যারিস্টার তৌফিকুর রহমান

ভাড়া সিন্ডিকেট রিক্সাচালকদের

আপডেট সময় : ০৭:১৪:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • বৃষ্টি নামলেই দু-তিনগুণ আদায়
  • বাধ্য হয়েই যাত্রীরা চড়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়ায়
  • অনিবন্ধিত রিকশা দুই লাখের বেশি

বৃষ্টি নামলেই রাজধানীতে চলাচলে শুরু হয় ভোগান্তি। সক্রিয় হয়ে ওঠে রিকশাচালকদের তথাকথিত ‘ভাড়ার সিন্ডিকেট’। বৃষ্টি নামলে গণপরিবহন তেমন পাওয়া যায় না বললেই চলে। তখনই রিকশা হয়ে ওঠে একমাত্র ভরসা। পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া দাবি করেন চালকেরা। বাধ্য হয়েই যাত্রীরা দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়ায় রিকশায় করে গন্তব্যে যেতে হয়।
‎‎বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের গবেষণা বলছে, ২০১৯ সালে ঢাকায় রিকশা ছিল ১১ লাখ। তবে অনেকের মতে, গত পাঁচ বছরে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখের ওপরে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তথ্যমতে, নিবন্ধিত রিকশা মাত্র এক লাখ ৮২ হাজার ৬৩০টি। আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) এই সংখ্যা মোটে ৩১ হাজার। নিবন্ধিত দুই লাখ ১৩ হাজার রিকশার সবই প্যাডেলচালিত রিকশা। এর বাইরে রাজধানীতে সব রিকশাই অনিবন্ধিত। তবে, রাজধানী জুড়ে এখন প্রতিটি মূল সড়ক ও গলিপথে রিকশার যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিয়মীত। পুরো রাজধানী জুড়ে কয়েক লাখ রিকশা থাকলেও শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা বলছে, স্বাভাবিক দিনে যেখানে ৫০ টাকায় গন্তব্যে যাওয়া যায়, বৃষ্টি হলে সেখানে দিতে হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। রিকশাচালকদের একাংশ খোলাখুলি বলেন, ‘বৃষ্টি হলে কষ্ট করে রাস্তায় নামি, তাই ভাড়া বেশি চাইতেই হবে।’ গতকাল ‎েরাববার সরেজমিন রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। ‎‎রিকশা ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ, ‎উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা মানিক খান বলেন, আজকে সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। উত্তরার প্রায় সব গলিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অন্যান্য গাড়ী ও গনপরিবহন তেমন না থাকায় রিকশা এখন আমাদের ভরসা। তবে, বৃষ্টি হওয়ায় রিকশা চালকরা ৫০ টাকার ভাড়া ১০০-১৫০ টাকা চাচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়েই রিকশা চালকদের কাঙ্খিত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আসলে এ শহরে কোন নিয়মের বালাই নেই। যে যার মতো পারছে লুটে নিচ্ছে। রিকশা চালকদের ভাড়ার বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের কোন নিয়মনীতি নেই। যার ফলে রিকশা চালকরা নিজেদের মতো যাত্রীদের কাছ থেকে পকেট কেটে ভাড়া আদায় করছে। মিরপুর এলাকার বাসিন্দা ওয়াহিদুর রহমান নামে একজন বলেন, আমি মিরপুর-১ নম্বর মোড় থেকে রিকশা নিয়েছি মিল্কভিটার সামনে যাবো। অন্যান্য দিন যেখানে এ ভাড়া ৫০-৬০ টাকা দেই। আজকে সেই ভাড়া ১৭০ টাকা দিতে হয়েছে। প্রথমে ১৫০ টাকা ঠিক করলে রিকশা চালক নেমে ১৮০ টাকা দাবি করে বসে। অনেক কষ্টে ১৭০ টাকা ভাড়া দিয়েচলে এসেছি। রিকশাচালকরা একরকম জোর করে ভাড়া নেয়।

অন্যদিকে, রিকশা চালকরা জানান, বৃষ্টির সময় ভোগান্তি শুধু যাত্রীদেরই নয়, তাদেরও হয়।কাঁদাপানি মাড়িয়ে চালাতে হয়, গায়ে ভিজে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বাড়তি ভাড়া দাবি করাকে তারা যৌক্তিক মনে করেন।‎‎ তোঁতা মিয়া নামে গাবতলী এলাকার এক রিকশা চালক বলেন, আমরা বৃষ্টি ছাড়া রিকশা চালাই। তখন শরীর থেকে ঘাম ঝরে পরে। বৃষ্টিতে রিকশা চালালে কাঁদাপানি মাড়িয়ে যাত্রীদের নিয়ে রিকশা টানতে হয়। বৃষ্টির মধ্যে অনেক সড়কে গর্ত থাকায় মাঝেমধ্যে আমাদের টিকশার চাকা আটকে যায়। রিকশা চালাতে গিয়ে গরমে-বৃষ্টিতে ভিজে আমাদের শরীর ঠান্ডা-গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমাদের কষ্টের জন্য বৃষ্টির দিনে আমরা ভাড়া বাড়িয়ে নেই। ‎‎আরেক রিকশা চালক রহমান মিয়া বলেন, আমি গতো ১২ বছর যাবৎ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রিকশা চালাই। বৃষ্টির মধ্যে রিকশা চালাতে গিয়ে কয়েকবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। টানা ৮-১০ দিন বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়েছিলো। তখন তো কেউ আমাদের সাহায্য করতে আসে নাই। আমরা কষ্ট করে বৃষ্টির মধ্যে রিকশা চালিয়ে একটু ভাড়া বেশি নিলেই যাত্রীরা গালাগালি শুরু করে। তারা ভাড়া বেচি নেওয়াটা মানতে পারে না। ‎‎তবে, অনেক রিকশা চালক জানিয়েছে, সরকার যদি ভাড়া নিয়ে রিকশা চালকদের কোন নীতিমালা করে দেয়। তাহলে তারা যৌক্তিক নীতিমালা মেনে যাত্রীদের থেকে ভাড়া নিবেন। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের সংখ্যা নিয়ে তারা কোন তথ্য দিতে পারে নি। সিটি কর্পোরেশন বলছে, ঢাকায় কতো রিকশা চলে তার নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা তাদরে জানা নেই। তবে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গবেষণা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রায় তিন বছর আগে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রায় ১ লাখ ৮৭ হাজার প্যাডেল চালিত রিকশার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর বাইরে আর কোনো তথ্য নেই সিটি করপোরেশনের কাছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, এ ধরনের ভাড়ার সিন্ডিকেট শহরের পরিবহন ব্যবস্থার দুর্বলতারই বহিঃপ্রকাশ। নগরবাসীর জন্য বিকল্প পরিবহনের অভাব থাকায় রিকশাই বৃষ্টির সময় ভরসা হয়ে ওঠে। সেখানেই যাত্রীদের উপর চাপে পড়ে ভোগান্তি বাড়ছে। সিটি করপোরেশন কিংবা ট্রাফিক বিভাগ এ বিষয়ে নজরদারি করে না। তারা মনে করেন, ভাড়া নিয়ন্ত্রণে স্পষ্ট নীতিমালা ও কার্যকর মনিটরিং থাকলে বৃষ্টির অজুহাতে আর কেউ ভাড়া বাড়াতে পারবে না। যদি, নগরীতে চলাচল করা রিকশার নির্দিষ্ট পরিমান নিয়ে সরকারের কাছে কোন তথ্য িেন। যার ফলে, সরকার এ নিয়ে কোন শক্ত কোন পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এদিকে, যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দেশব্যাপী চলাচলরত সিএনজিচালিত হিউম্যান হলার, লেগুনা এবং সিএনজি অটোরিকশায় অস্বাভাবিকহারে বর্ধিত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালাচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী সব গণপরিবহনের ভাড়া সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করে দেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও সরকার এসব পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ না করায় যে যার ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা না থাকায় যাত্রীসাধারণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আইনের আশ্রয় লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে পরিবহন শ্রমিকদের হাতে যাত্রীরা নাজেহাল হচ্ছে। এসব গাড়িতে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা না থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও যাত্রীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।