০৩:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লাঙল নিয়ে টানাটানি: আমরাই লাঙল প্রতীকের বৈধ মালিক: দাবি আনিসুলের

গঠনতন্ত্র ও আরপিও অনুযায়ী কাউন্সিলে নির্বাচিত বৈধ নেতৃত্ব লাঙল প্রতীকের বৈধ মালিক বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তার দাবি, ‘আমরাই লাঙল প্রতীকের মালিক। গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত জাতীয় পার্টির জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের দাবিদার একাধিক, মালিক কে তা খুঁজে পাচ্ছি না। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয় পার্টি।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু পক্ষ নির্বাচন কমিশনে ভিন্ন ভিন্ন আবেদন জমা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তির আবেদনে নয়, কেবলমাত্র দলীয় গঠনতান্ত্রিক নেতৃত্বের বৈধ আবেদনের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন বরাদ্দ দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘অতীতেও নির্বাচন কমিশন একই নীতি অনুসরণ করেছে এবং এবারও আইন, সংবিধান ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। জাপার এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র এবং রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও) অনুযায়ী গত ৯ আগস্ট সবশেষ জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ওই কাউন্সিলে আমি সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন। আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘কাউন্সিলের পর আমরা কমিটি নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছি। একই সঙ্গে কাউন্সিলের সকল ডকুমেন্টও জমা দিয়েছি। নতুন কমিটি গঠনের পর জিএম কাদের আর কোনোভাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পরিচয় দিতে পারে না। তিনি বলেন, ‘লাঙ্গল প্রতিক কোনো ব্যক্তির নয়। এটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ১২ নম্বর জাতীয় পার্টির প্রতীক। তাই আইন ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের নেতৃত্বই জাতীয় পার্টির একমাত্র বৈধ নেতৃত্ব এবং লাঙল প্রতীকের একমাত্র দাবিদার আমরাই। জাপা নেতা বলেন, ‘জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীক হলো দলের ঐতিহ্য, জনগণের আস্থা এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতীক। এ প্রতীক কেবল বৈধ নেতৃত্বকেই দেওয়া উচিত। বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী আবেদনগুলো সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।’
জিএম কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে আনিসুল ইসলাম বলেন, জি এম কাদের এক সময় বলেন, শেখ হাসিনার ফাঁসি চান। আবার বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন বৈধ হবে না। তিনি কখন কী বলেন নিজেও জানেন না। তার মতো একজন দ্বৈতনীতির লোক রাজনীতিতে কতটা প্রাসঙ্গিক, তা ভাববার সময় এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, তিনি লাঙ্গলের মালিক খুঁজে পাচ্ছেন না। বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, গঠনতন্ত্র ও আইন মেনে চলতি বছরের ৯ আগস্ট জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাউন্সিলে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আরপিও এবং গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙলের বৈধ দাবিদার একমাত্র আমরাই। হাওলাদার বলেন, ‘জাতীয় পার্টি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও আইন মেনে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে এবং বৈধ নেতৃত্বকে লাঙল প্রতীকের স্বীকৃতি দেবে। জনগণের আস্থা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষায় এটিই হবে একমাত্র ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ। আমরা জাতীয় পার্টির মালিকানা তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই। কোনো একক ব্যক্তির নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি পরিচালিত হবে না। পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি পরিচালিত হবে যৌথ নেতৃত্বের মাধ্যমে।’

 

জনপ্রিয় সংবাদ

লাঙল নিয়ে টানাটানি: আমরাই লাঙল প্রতীকের বৈধ মালিক: দাবি আনিসুলের

আপডেট সময় : ০৭:৩৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গঠনতন্ত্র ও আরপিও অনুযায়ী কাউন্সিলে নির্বাচিত বৈধ নেতৃত্ব লাঙল প্রতীকের বৈধ মালিক বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তার দাবি, ‘আমরাই লাঙল প্রতীকের মালিক। গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত জাতীয় পার্টির জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের দাবিদার একাধিক, মালিক কে তা খুঁজে পাচ্ছি না। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয় পার্টি।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু পক্ষ নির্বাচন কমিশনে ভিন্ন ভিন্ন আবেদন জমা দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তির আবেদনে নয়, কেবলমাত্র দলীয় গঠনতান্ত্রিক নেতৃত্বের বৈধ আবেদনের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন বরাদ্দ দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘অতীতেও নির্বাচন কমিশন একই নীতি অনুসরণ করেছে এবং এবারও আইন, সংবিধান ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। জাপার এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র এবং রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও) অনুযায়ী গত ৯ আগস্ট সবশেষ জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ওই কাউন্সিলে আমি সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন। আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘কাউন্সিলের পর আমরা কমিটি নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছি। একই সঙ্গে কাউন্সিলের সকল ডকুমেন্টও জমা দিয়েছি। নতুন কমিটি গঠনের পর জিএম কাদের আর কোনোভাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পরিচয় দিতে পারে না। তিনি বলেন, ‘লাঙ্গল প্রতিক কোনো ব্যক্তির নয়। এটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ১২ নম্বর জাতীয় পার্টির প্রতীক। তাই আইন ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের নেতৃত্বই জাতীয় পার্টির একমাত্র বৈধ নেতৃত্ব এবং লাঙল প্রতীকের একমাত্র দাবিদার আমরাই। জাপা নেতা বলেন, ‘জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীক হলো দলের ঐতিহ্য, জনগণের আস্থা এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতীক। এ প্রতীক কেবল বৈধ নেতৃত্বকেই দেওয়া উচিত। বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী আবেদনগুলো সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।’
জিএম কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে আনিসুল ইসলাম বলেন, জি এম কাদের এক সময় বলেন, শেখ হাসিনার ফাঁসি চান। আবার বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন বৈধ হবে না। তিনি কখন কী বলেন নিজেও জানেন না। তার মতো একজন দ্বৈতনীতির লোক রাজনীতিতে কতটা প্রাসঙ্গিক, তা ভাববার সময় এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, তিনি লাঙ্গলের মালিক খুঁজে পাচ্ছেন না। বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, গঠনতন্ত্র ও আইন মেনে চলতি বছরের ৯ আগস্ট জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাউন্সিলে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আরপিও এবং গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙলের বৈধ দাবিদার একমাত্র আমরাই। হাওলাদার বলেন, ‘জাতীয় পার্টি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও আইন মেনে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে এবং বৈধ নেতৃত্বকে লাঙল প্রতীকের স্বীকৃতি দেবে। জনগণের আস্থা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষায় এটিই হবে একমাত্র ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ। আমরা জাতীয় পার্টির মালিকানা তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই। কোনো একক ব্যক্তির নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি পরিচালিত হবে না। পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি পরিচালিত হবে যৌথ নেতৃত্বের মাধ্যমে।’