১২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাগজের শপিং ব্যাগের বিপরীতে মূল্য নেওয়া বন্ধে আড়ংকে আইনি নোটিশ

কাগজের শপিং ব্যাগের বিপরীতে মূল্য নেওয়া বন্ধ চেয়ে ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড আড়ংকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির করপোরেটর কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মগবাজার আউটলেটের স্টোর ম্যানেজার বরাবর আজ সোমবার এই নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিশাত ফারজানা। তিনি নিজেকে আড়ংয়ের একজন নিয়মিত গ্রাহক উল্লেখ করেছেন নোটিশে।

নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে কাগজের শপিং ব্যাগের বিপরীতে মূল্য নেওয়া বন্ধ করতে বলেছেন নোটিশদাতা, তা না হলে তিনি উপযুক্ত আদালত ও কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে, অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য হবেন বলে নোটিশে উল্লেখ করেছেন।

রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আজ সকালে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নিশাত ফারজানা। তিনি বলেন, ‘বিষয়টির সঙ্গে ভোক্তার অধিকার সম্পৃক্ত। নোটিশের বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে হয়তো ভোক্তা অধিকার আইনের আশ্রয় নেব।’

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ২৪ সেপ্টেম্বর আড়ংয়ের মগবাজার আউটলেটে কেনাকাটা করেন নোটিশদাতা। কেনাকাটা শেষে বিল পরিশোধ করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, পণ্যের সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে না। কারণ জিজ্ঞাসা করলে জানা যায়, সেপ্টেম্বর থেকে আড়ং শপিংয়ে ব্যাগ দিচ্ছে না। অর্থাৎ কেনাকাটা করলে আগে কাগজের যে ব্যাগ ফ্রিতে পাওয়া যেত, তা এখন টাকা দিয়ে কিনতে হবে।

বিল পেমেন্ট বুথে ‘আপনার প্রিয় আড়ং ব্যাগ এখন আরও অর্থবহ’—এ রকম একটি লিফলেটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে নোটিশে। এতে বলা হয়, এই লিফলেট দিয়ে গ্রাহকদের জানানো হচ্ছে যে, আড়ং শপিং ব্যাগের ওপর সীমিত চার্জ প্রযোজ্য। ব্যাগ বিক্রয় থেকে পাওয়া অর্থের পুরোটাই ব্যয় করা হবে স্থানীয় গাছ লাগানোর প্রকল্পে। এ রকম হীন মানসিকতার বিজ্ঞাপন আড়ংয়ের মতো আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান থেকে কোনোভাবেই কাম্য নয়।

নোটিশের ভাষ্য, সবুজায়নের এরূপ উদ্যোগকে দেশের মানুষ সাধুবাদ জানায়। তবে তা করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) তহবিল থেকে, অর্থাৎ পণ্য বিক্রয়ের লাভ থেকে তা করলে আড়ং প্রশংসিত হবে। অন্যান্য করপোরেট প্রতিষ্ঠানও এসব বিষয়ে সচেতন হবে। কিন্তু এ রকম নিম্নমানের কাগজের শপিং ব্যাগের বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে মূল্য নিয়ে তা দিয়ে পরিবেশ রক্ষার কথা বলা এক ধরনের চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক আদায় ও অসাধু ব্যবসায়িক মানসিকতার পরিচয় বহন করে।

নোটিশে বলা হয়, ব্যাগগুলোর আকার এমন মাপের, যাতে শুধু একটি পণ্য নেওয়া যাবে। অর্থাৎ কোনো গ্রাহক যদি একের অধিক পণ্য ক্রয় করেন, তার জন্য উচ্চমূল্য দিয়ে তাঁকে একের অধিক ব্যাগ ক্রয় করতে হবে, যা সাধারণ আয়ের মানুষের জন্য একধরনের চাপ। এ ধরনের ব্যাগ সংস্করণের আগে আড়ং গ্রাহকদের মতামত জানতে একটি জরিপ করতে পারত। বর্তমানে আড়ংয়ের বিভিন্ন আউটলেটে, সোশ্যাল মিডিয়াতে এ বিষয়ে গ্রাহকদের অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

নোটিশে আইনজীবী বলেছেন, আড়ং এই ব্র্যান্ড সবার পছন্দের তালিকার শীর্ষে। পরিবারের অনেক ধরনের কেনাকাটা থেকে শুরু করে কাউকে উপহার দেওয়ার জন্য আড়ং সবার কাছে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। আড়ং কাগজের শপিং ব্যাগ টেকসই নয়, তাই কোনোরূপ সৃজনশীলতার ছাপ না রেখে এ ধরনের ব্যাগ মূল্য দিয়ে কেনা বন্ধ করে ফ্রিতে দিতে হবে। আড়ংয়ের এরূপ কার্যক্রম কখনোই পরিবেশ সচেতনতার বিষয় পরিলক্ষিত হয় না। বরং এটি সরাসরি এক ধরনের অস্বচ্ছ ব্যবসা ও গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা। এ ধরনের সস্তা মানসিকতা ও স্বেচ্ছাচারিতা আড়ংয়ের মতো ব্র্যান্ডের কাছে থেকে অপ্রত্যাশিত, দুঃখজনক।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

কাগজের শপিং ব্যাগের বিপরীতে মূল্য নেওয়া বন্ধে আড়ংকে আইনি নোটিশ

আপডেট সময় : ০৫:০৯:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কাগজের শপিং ব্যাগের বিপরীতে মূল্য নেওয়া বন্ধ চেয়ে ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড আড়ংকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির করপোরেটর কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মগবাজার আউটলেটের স্টোর ম্যানেজার বরাবর আজ সোমবার এই নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিশাত ফারজানা। তিনি নিজেকে আড়ংয়ের একজন নিয়মিত গ্রাহক উল্লেখ করেছেন নোটিশে।

নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে কাগজের শপিং ব্যাগের বিপরীতে মূল্য নেওয়া বন্ধ করতে বলেছেন নোটিশদাতা, তা না হলে তিনি উপযুক্ত আদালত ও কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে, অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য হবেন বলে নোটিশে উল্লেখ করেছেন।

রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আজ সকালে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নিশাত ফারজানা। তিনি বলেন, ‘বিষয়টির সঙ্গে ভোক্তার অধিকার সম্পৃক্ত। নোটিশের বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে হয়তো ভোক্তা অধিকার আইনের আশ্রয় নেব।’

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ২৪ সেপ্টেম্বর আড়ংয়ের মগবাজার আউটলেটে কেনাকাটা করেন নোটিশদাতা। কেনাকাটা শেষে বিল পরিশোধ করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, পণ্যের সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে না। কারণ জিজ্ঞাসা করলে জানা যায়, সেপ্টেম্বর থেকে আড়ং শপিংয়ে ব্যাগ দিচ্ছে না। অর্থাৎ কেনাকাটা করলে আগে কাগজের যে ব্যাগ ফ্রিতে পাওয়া যেত, তা এখন টাকা দিয়ে কিনতে হবে।

বিল পেমেন্ট বুথে ‘আপনার প্রিয় আড়ং ব্যাগ এখন আরও অর্থবহ’—এ রকম একটি লিফলেটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে নোটিশে। এতে বলা হয়, এই লিফলেট দিয়ে গ্রাহকদের জানানো হচ্ছে যে, আড়ং শপিং ব্যাগের ওপর সীমিত চার্জ প্রযোজ্য। ব্যাগ বিক্রয় থেকে পাওয়া অর্থের পুরোটাই ব্যয় করা হবে স্থানীয় গাছ লাগানোর প্রকল্পে। এ রকম হীন মানসিকতার বিজ্ঞাপন আড়ংয়ের মতো আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান থেকে কোনোভাবেই কাম্য নয়।

নোটিশের ভাষ্য, সবুজায়নের এরূপ উদ্যোগকে দেশের মানুষ সাধুবাদ জানায়। তবে তা করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) তহবিল থেকে, অর্থাৎ পণ্য বিক্রয়ের লাভ থেকে তা করলে আড়ং প্রশংসিত হবে। অন্যান্য করপোরেট প্রতিষ্ঠানও এসব বিষয়ে সচেতন হবে। কিন্তু এ রকম নিম্নমানের কাগজের শপিং ব্যাগের বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে মূল্য নিয়ে তা দিয়ে পরিবেশ রক্ষার কথা বলা এক ধরনের চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক আদায় ও অসাধু ব্যবসায়িক মানসিকতার পরিচয় বহন করে।

নোটিশে বলা হয়, ব্যাগগুলোর আকার এমন মাপের, যাতে শুধু একটি পণ্য নেওয়া যাবে। অর্থাৎ কোনো গ্রাহক যদি একের অধিক পণ্য ক্রয় করেন, তার জন্য উচ্চমূল্য দিয়ে তাঁকে একের অধিক ব্যাগ ক্রয় করতে হবে, যা সাধারণ আয়ের মানুষের জন্য একধরনের চাপ। এ ধরনের ব্যাগ সংস্করণের আগে আড়ং গ্রাহকদের মতামত জানতে একটি জরিপ করতে পারত। বর্তমানে আড়ংয়ের বিভিন্ন আউটলেটে, সোশ্যাল মিডিয়াতে এ বিষয়ে গ্রাহকদের অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

নোটিশে আইনজীবী বলেছেন, আড়ং এই ব্র্যান্ড সবার পছন্দের তালিকার শীর্ষে। পরিবারের অনেক ধরনের কেনাকাটা থেকে শুরু করে কাউকে উপহার দেওয়ার জন্য আড়ং সবার কাছে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। আড়ং কাগজের শপিং ব্যাগ টেকসই নয়, তাই কোনোরূপ সৃজনশীলতার ছাপ না রেখে এ ধরনের ব্যাগ মূল্য দিয়ে কেনা বন্ধ করে ফ্রিতে দিতে হবে। আড়ংয়ের এরূপ কার্যক্রম কখনোই পরিবেশ সচেতনতার বিষয় পরিলক্ষিত হয় না। বরং এটি সরাসরি এক ধরনের অস্বচ্ছ ব্যবসা ও গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা। এ ধরনের সস্তা মানসিকতা ও স্বেচ্ছাচারিতা আড়ংয়ের মতো ব্র্যান্ডের কাছে থেকে অপ্রত্যাশিত, দুঃখজনক।

এমআর/সবা