০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনুমতি ছাড়া সাইনবোর্ড, পোস্টার–ব্যানার লাগালে ব্যবস্থা : চসিক মেয়র

চট্টগ্রাম নগরের প্রায় ৮০ শতাংশ কোচিং সেন্টার সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) অনুমতি ছাড়াই পোস্টার ও ব্যানার টানাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এতে নগরের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে এবং কর্পোরেশন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “একটি ব্যানারের জন্য মাত্র এক–দুই হাজার টাকা কর দিলেই যথেষ্ট। সেই অর্থ দিয়েই সিটি কর্পোরেশন শহরকে পরিষ্কার ও সবুজ রাখতে কাজ করে।” মেয়র স্পষ্ট করে জানান, ভবিষ্যতে অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের সাইনবোর্ড, পোস্টার বা ব্যানার টানানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ সোমবার দুপুরে চসিকের উদ্যোগে নগরের কাজীর দেউড়ি, চেরাগী পাহাড়, আন্দরকিল্লা, লালদীঘি ও চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার, ব্যানার ও সাইনবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন মেয়র।

এ সময় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে লাগানো নিজের ছবি–সংবলিত ব্যানারও নিজ হাতে সরিয়ে ফেলেন তিনি। মেয়র জানান, সপ্তাহব্যাপী এই উচ্ছেদ অভিযান চলবে। ৪১ ওয়ার্ডে যেখানে যেখানে অবৈধ ব্যানার লাগানো হয়েছে, সব সরিয়ে ফেলা হবে।

মেয়র শাহাদাত বলেন, “ক্লিন সিটি গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর। সবাইকে সচেতন হতে হবে। যারা অনুমতি ছাড়া ব্যানার–পোস্টার লাগিয়েছে, তারা যেন দ্রুত সেগুলো সরিয়ে ফেলে। ভবিষ্যতে অনুমতি ছাড়া কিছু টানানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “শহরের সৌন্দর্য রক্ষা করতে হলে নিয়ম–কানুন মেনে চলতে হবে। কেউ যদি বিজ্ঞাপন দিতে চায়, তাহলে সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়েই দিতে হবে। আমরা চাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আইনের আওতায় আসুক।”

নিজের দায়িত্ববোধের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “আমি নিজেই প্রতি মাসে অন্তত একবার মাঠে নেমে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করি। এই শহর আমাদের নিজের—যদি আমরা দায়িত্বশীল হই, তাহলে কেউই শহরকে নোংরা রাখতে পারবে না। ব্যানার সরানোর পরই বোঝা যায়, শহর কত সুন্দর হতে পারে।”

তিনি জানান, অনেক প্রতিষ্ঠান অনুমতি ছাড়াই অসংখ্য ব্যানার টানিয়ে অন্যদেরও উৎসাহিত করছে। পূজার সময় শুভেচ্ছা ব্যানারের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন সেগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। “আমরা প্রতিটি উৎসবকে সম্মান করি, তবে শহরের সৌন্দর্যের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না,” যোগ করেন মেয়র।

ডা. শাহাদাত বলেন, “চকবাজার জোনকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমৃদ্ধ ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি জোনে পরিণত করা হবে। এজন্য যত্রতত্র ব্যানার–পোস্টার বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে ডিজিটাল বোর্ড বা এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সৌন্দর্য নষ্ট না হয় এবং ব্যবসায়ীরাও নিয়ম মেনে প্রচার করতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “সিটি কর্পোরেশন একা কিছু করতে পারবে না। নাগরিকদের সহযোগিতা ছাড়া নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। আমরা নিজেদের রাজস্ব দিয়েই রাস্তা, নালা, খাল পরিষ্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ করছি। সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে, রাজস্ব দিতে হবে—তবেই শহর এগিয়ে যাবে।”

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, উপ–প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, এবং ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

অনুমতি ছাড়া সাইনবোর্ড, পোস্টার–ব্যানার লাগালে ব্যবস্থা : চসিক মেয়র

আপডেট সময় : ০৪:৪১:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম নগরের প্রায় ৮০ শতাংশ কোচিং সেন্টার সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) অনুমতি ছাড়াই পোস্টার ও ব্যানার টানাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এতে নগরের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে এবং কর্পোরেশন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “একটি ব্যানারের জন্য মাত্র এক–দুই হাজার টাকা কর দিলেই যথেষ্ট। সেই অর্থ দিয়েই সিটি কর্পোরেশন শহরকে পরিষ্কার ও সবুজ রাখতে কাজ করে।” মেয়র স্পষ্ট করে জানান, ভবিষ্যতে অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের সাইনবোর্ড, পোস্টার বা ব্যানার টানানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ সোমবার দুপুরে চসিকের উদ্যোগে নগরের কাজীর দেউড়ি, চেরাগী পাহাড়, আন্দরকিল্লা, লালদীঘি ও চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার, ব্যানার ও সাইনবোর্ড উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন মেয়র।

এ সময় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে লাগানো নিজের ছবি–সংবলিত ব্যানারও নিজ হাতে সরিয়ে ফেলেন তিনি। মেয়র জানান, সপ্তাহব্যাপী এই উচ্ছেদ অভিযান চলবে। ৪১ ওয়ার্ডে যেখানে যেখানে অবৈধ ব্যানার লাগানো হয়েছে, সব সরিয়ে ফেলা হবে।

মেয়র শাহাদাত বলেন, “ক্লিন সিটি গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর। সবাইকে সচেতন হতে হবে। যারা অনুমতি ছাড়া ব্যানার–পোস্টার লাগিয়েছে, তারা যেন দ্রুত সেগুলো সরিয়ে ফেলে। ভবিষ্যতে অনুমতি ছাড়া কিছু টানানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “শহরের সৌন্দর্য রক্ষা করতে হলে নিয়ম–কানুন মেনে চলতে হবে। কেউ যদি বিজ্ঞাপন দিতে চায়, তাহলে সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়েই দিতে হবে। আমরা চাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আইনের আওতায় আসুক।”

নিজের দায়িত্ববোধের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “আমি নিজেই প্রতি মাসে অন্তত একবার মাঠে নেমে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করি। এই শহর আমাদের নিজের—যদি আমরা দায়িত্বশীল হই, তাহলে কেউই শহরকে নোংরা রাখতে পারবে না। ব্যানার সরানোর পরই বোঝা যায়, শহর কত সুন্দর হতে পারে।”

তিনি জানান, অনেক প্রতিষ্ঠান অনুমতি ছাড়াই অসংখ্য ব্যানার টানিয়ে অন্যদেরও উৎসাহিত করছে। পূজার সময় শুভেচ্ছা ব্যানারের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন সেগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। “আমরা প্রতিটি উৎসবকে সম্মান করি, তবে শহরের সৌন্দর্যের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না,” যোগ করেন মেয়র।

ডা. শাহাদাত বলেন, “চকবাজার জোনকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমৃদ্ধ ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি জোনে পরিণত করা হবে। এজন্য যত্রতত্র ব্যানার–পোস্টার বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে ডিজিটাল বোর্ড বা এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সৌন্দর্য নষ্ট না হয় এবং ব্যবসায়ীরাও নিয়ম মেনে প্রচার করতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “সিটি কর্পোরেশন একা কিছু করতে পারবে না। নাগরিকদের সহযোগিতা ছাড়া নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। আমরা নিজেদের রাজস্ব দিয়েই রাস্তা, নালা, খাল পরিষ্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ করছি। সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে, রাজস্ব দিতে হবে—তবেই শহর এগিয়ে যাবে।”

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, উপ–প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, এবং ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি।

এমআর/সবা