দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামে নতুন ট্যারিফ শিডিউলে পণ্যবাহী গাড়ির গেইট পাসের ফি বৃদ্ধি কনটেইনার পরিবহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রেইলার, প্রাইম মুভার, লং ভ্যাহিক্যাল ও কাভার্ডভ্যান মালিকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এর প্রভাব হিসেবে ১৪ অক্টোবর রাত থেকে এসব যানবাহন বন্দরে চলাচল বন্ধ রেখেছে। একই দাবিতে রবিবার সকাল ৯টা থেকে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। এতে বন্দরের কার্যক্রমে সাময়িক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন জানান, “আমাদের লাইন খরচ নির্ধারিত থাকে এবং তেলের দাম বাড়লে তা রিভাইস করা হয়। কিন্তু নতুন ট্যারিফে গেইট পাস ফি ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২৩০ টাকায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। অতিরিক্ত খরচ কে বহন করবে, মালিক নাকি শ্রমিক, তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই আপাতত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।”
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসঁয়া বলেন, “সিঅ্যান্ডএফ মালিক ও শ্রমিকরা বন্ধ রেখেছেন, যার প্রভাব বন্দরের কার্যক্রমে পড়েছে। তবে বন্দরের হ্যান্ডলিং ও অপারেশন এখনও স্বাভাবিক রয়েছে।”
অন্যদিকে, বন্দরের ব্যবহারকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, অব্যাহত কর্মবিরতি ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলে আমদানি ও রফতানিতে বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এ অবস্থায় বন্দরের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
পোর্ট ইউজার্স ফোরামের সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন ট্যারিফের সমস্যা সমাধান না হলে আমরা বন্দরের কার্যক্রম বন্ধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব। এটি আমাদের হুঁশিয়ারি।”
চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন ট্যারিফ শিডিউলে ৫৬টি সেবা ক্ষেত্রে গড়ে ৪১ শতাংশ ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিদিন বন্দরে প্রায় ৮–৯ হাজার ভারী যানবাহন (প্রাইম মুভার, ট্রেইলার, কাভার্ডভ্যান) চলাচল করে। নতুন ফি বৃদ্ধির কারণে যানবাহন মালিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, ফলে বন্দরের পণ্য পরিবহন প্রক্রিয়ায় সঙ্কট তৈরি হয়েছে।
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, “ট্রেইলার ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে কিছু স্থানে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তবে বন্দরের হ্যান্ডলিং ও অপারেশন কার্যক্রম এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। সমস্যার সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।”
এ ঘটনার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে সাময়িক বিরতি এবং অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তবে বন্দরের কর্তৃপক্ষ আশা করছেন দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে পরিবহন পুনরায় স্বাভাবিক হবে।
এমআর/সবা

























