০৯:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাঁচবিবিতে মিথ্যা মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী হামলার মামলা থেকে নিজেকে আড়াল করতে শফিকুল মেম্বারের মিথ্যা মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাইদার ইসলামের স্ত্রী সাবিহা সুলতানা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে পাঁচবিবি পৌর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সাবিহা সুলতানা বিস্তারিতভাবে অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালে তার স্বামী সাইদার ইসলাম রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগ পান। নিয়োগের আগে শফিকুল মেম্বার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন ও খরচ বহন করার নামে তার পরিবার থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। পরিবার তা দিতে অস্বীকার করলে শফিকুল মেম্বার তার প্রভাব খাটিয়ে আত্মীয়দের বিভিন্ন সরকারি পদে নিয়োগ দেন।

সাবিহা সুলতানা বলেন, “৫ আগস্টের পর শফিকুল মেম্বার মন্টু সরকারসহ কয়েকজনকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আমার স্বামীকে বিএনপির কর্মী দাবি করেছে। বাস্তবে আমার স্বামী বিএনপির সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত নয়। এছাড়া তারা বিভিন্ন মিথ্যা ভিডিও এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্টের মাধ্যমে তাকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে প্রচার করছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, শফিকুল মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনী তার পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে এবং এ নিয়ে হুমকি দিয়েছে। “আমার স্বামী বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালনকালে শফিকুল মেম্বার, রাকিবুল ও আরও কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তির দ্বারা মারপিটের শিকার হন। পরে সুজন নামে একজন ব্যক্তি তাকে পাঁচবিবি থানায় নিয়ে আসেন। পুলিশ রাকিবুলকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে, কিন্তু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও চেয়ারম্যান আমাদের চাপ প্রয়োগ করে মামলা তুলে নিতে। মামলা না নিলে কর্মস্থলে সমস্যা হবে এবং পুনরায় মারপিটের হুমকি দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে আমরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট অভিযোগ করি।”

সাবিহা সুলতানা বলেন, “শফিকুল মেম্বারের মানববন্ধন সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার স্বামীকে ছাত্রলীগের নামে ট্যাগ দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের পরিবার কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না এবং শফিকুল মেম্বারের মতো চামাচামি করা হয়নি। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং শফিকুল মেম্বারসহ তার বাহিনীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে সাবিহা সুলতানার বাবা ধরঞ্জী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য শাহাজান, তার বোন মরিয়ম এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাবিহা সুলতানা সরকারের কাছে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান এবং বলেন, “আমরা চাই না এমন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার বাহিনী আবার কারও জীবন ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলুক। আমাদের পরিবারের প্রতি শফিকুল মেম্বারের অন্যায় আচরণ কখনো সহ্যযোগ্য নয়।”

তিনি আরও জানান, ঘটনার পর থেকে তাদের পরিবার সামাজিকভাবে ভিন্ন ধরনের চাপ ও হুমকির মুখে রয়েছে। তাই তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি মনোযোগ দিয়ে তদন্ত করবে এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেবে।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

পাঁচবিবিতে মিথ্যা মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

আপডেট সময় : ০৮:০৮:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী হামলার মামলা থেকে নিজেকে আড়াল করতে শফিকুল মেম্বারের মিথ্যা মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাইদার ইসলামের স্ত্রী সাবিহা সুলতানা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে পাঁচবিবি পৌর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সাবিহা সুলতানা বিস্তারিতভাবে অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালে তার স্বামী সাইদার ইসলাম রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগ পান। নিয়োগের আগে শফিকুল মেম্বার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন ও খরচ বহন করার নামে তার পরিবার থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। পরিবার তা দিতে অস্বীকার করলে শফিকুল মেম্বার তার প্রভাব খাটিয়ে আত্মীয়দের বিভিন্ন সরকারি পদে নিয়োগ দেন।

সাবিহা সুলতানা বলেন, “৫ আগস্টের পর শফিকুল মেম্বার মন্টু সরকারসহ কয়েকজনকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আমার স্বামীকে বিএনপির কর্মী দাবি করেছে। বাস্তবে আমার স্বামী বিএনপির সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত নয়। এছাড়া তারা বিভিন্ন মিথ্যা ভিডিও এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্টের মাধ্যমে তাকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে প্রচার করছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, শফিকুল মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনী তার পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে এবং এ নিয়ে হুমকি দিয়েছে। “আমার স্বামী বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালনকালে শফিকুল মেম্বার, রাকিবুল ও আরও কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তির দ্বারা মারপিটের শিকার হন। পরে সুজন নামে একজন ব্যক্তি তাকে পাঁচবিবি থানায় নিয়ে আসেন। পুলিশ রাকিবুলকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে, কিন্তু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও চেয়ারম্যান আমাদের চাপ প্রয়োগ করে মামলা তুলে নিতে। মামলা না নিলে কর্মস্থলে সমস্যা হবে এবং পুনরায় মারপিটের হুমকি দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে আমরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট অভিযোগ করি।”

সাবিহা সুলতানা বলেন, “শফিকুল মেম্বারের মানববন্ধন সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার স্বামীকে ছাত্রলীগের নামে ট্যাগ দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের পরিবার কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না এবং শফিকুল মেম্বারের মতো চামাচামি করা হয়নি। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং শফিকুল মেম্বারসহ তার বাহিনীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে সাবিহা সুলতানার বাবা ধরঞ্জী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য শাহাজান, তার বোন মরিয়ম এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাবিহা সুলতানা সরকারের কাছে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান এবং বলেন, “আমরা চাই না এমন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার বাহিনী আবার কারও জীবন ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলুক। আমাদের পরিবারের প্রতি শফিকুল মেম্বারের অন্যায় আচরণ কখনো সহ্যযোগ্য নয়।”

তিনি আরও জানান, ঘটনার পর থেকে তাদের পরিবার সামাজিকভাবে ভিন্ন ধরনের চাপ ও হুমকির মুখে রয়েছে। তাই তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি মনোযোগ দিয়ে তদন্ত করবে এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেবে।

এমআর/সবা