০৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
স্থানীয়দের দাবি— ডাংরারহাটের নতুন বাঁধকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুললে হবে আকর্ষণীয় স্পট

রাজারহাটে তিস্তা বাঁধে পর্যটনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ডাংরারহাট বাজারসংলগ্ন তিস্তা নদীর তীরে নবনির্মিত বাঁধে গড়ে উঠছে পর্যটনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ, নির্মল বাতাস আর তিস্তার ঢেউ—সব মিলিয়ে জায়গাটি দিন দিন ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে।

প্রতিবছর ঈদ, পূজা ও নানা উৎসবকে ঘিরে এখানে মানুষের ঢল নামে। স্থানীয় তরুণদের উদ্যোগে কয়েক বছর আগে আয়োজিত নৌকা বাইচ ও সারিগানের উৎসব এলাকাটিকে অস্থায়ী বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত করেছিল। বিশেষ করে করোনা-পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন ঘরে বন্দি থাকা মানুষদের জন্য এটি হয়ে ওঠে বিনোদনের অন্যতম স্থান।

স্থানীয় যুবকদের দাবি, বাঁধটি নির্মাণের পর থেকেই তারা উপজেলা প্রশাসনের কাছে এটি দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানোর অনুরোধ জানিয়ে আসছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছ লাগানো ও বসার আসনের আশ্বাস মিললেও বাস্তবায়ন হয়নি এখনো। এতে স্থানীয়দের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।

 

স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল হাকিম সবুজ বলেন, “করোনাকালীন সময়ে আমরা এখানে নৌকা বাইচ উৎসব করেছিলাম। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষও উপভোগ করেছিল অনুষ্ঠানটি। বারবার চেষ্টা করেছি বাঁধটিকে মিনি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে। পূর্ববর্তী ও বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বাঁধ পরিদর্শন করেছেন, কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ হয়নি। এটি বাস্তবায়ন হলে উপজেলায় পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতো।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় তরুণ নেতা মশিউর রহমান দুর্জয় বলেন, “আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছিলাম। উনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, পরে বিষয়টি আর এগোয়নি। ভার্সিটি থেকে ফিরেই আবার আলোচনা করবো।”

বিদ্যানন্দ ছাড়াও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িরহাট টি-বাঁধ এলাকায়ও উৎসবের সময় বিপুল মানুষের সমাগম হয়। তবে কয়েক বছর আগে তিস্তার প্রবল স্রোতে বাঁধের সামনের অংশ ভেঙে গেলেও তা আজও সংস্কার হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যটন খাতের প্রসারে সরকারি পরিকল্পনার কথা শোনা গেলেও রাজারহাটে এ নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

এদিকে রাজারহাটের আরও কয়েকটি সম্ভাবনাময় স্থান যেমন—চাকিরপশার বিল, চান্দামারির বুড়ি তিস্তায় পদ্মবিল এবং ঘড়িয়ালডাঙ্গা জমিদারবাড়ি পর্যটনের জন্য দারুণ উপযোগী বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এসব স্থানে পরিকল্পিত অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা গড়ে তুলতে পারলে পর্যটনের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যও সমৃদ্ধ হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান বলেন, “উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে বিভিন্ন সম্ভাবনাময় স্থান চিহ্নিত করেছে। তিস্তা নদীর নতুন বাঁধও এর মধ্যে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় উদ্যোগের সমন্বয়ে পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলে এখানকার পর্যটন উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।”

জনপ্রিয় সংবাদ

মূল্যস্ফীতি এখনো ঊর্ধ্বমুখী

স্থানীয়দের দাবি— ডাংরারহাটের নতুন বাঁধকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুললে হবে আকর্ষণীয় স্পট

রাজারহাটে তিস্তা বাঁধে পর্যটনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা

আপডেট সময় : ০৪:১৫:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ডাংরারহাট বাজারসংলগ্ন তিস্তা নদীর তীরে নবনির্মিত বাঁধে গড়ে উঠছে পর্যটনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ, নির্মল বাতাস আর তিস্তার ঢেউ—সব মিলিয়ে জায়গাটি দিন দিন ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে।

প্রতিবছর ঈদ, পূজা ও নানা উৎসবকে ঘিরে এখানে মানুষের ঢল নামে। স্থানীয় তরুণদের উদ্যোগে কয়েক বছর আগে আয়োজিত নৌকা বাইচ ও সারিগানের উৎসব এলাকাটিকে অস্থায়ী বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত করেছিল। বিশেষ করে করোনা-পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন ঘরে বন্দি থাকা মানুষদের জন্য এটি হয়ে ওঠে বিনোদনের অন্যতম স্থান।

স্থানীয় যুবকদের দাবি, বাঁধটি নির্মাণের পর থেকেই তারা উপজেলা প্রশাসনের কাছে এটি দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানোর অনুরোধ জানিয়ে আসছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছ লাগানো ও বসার আসনের আশ্বাস মিললেও বাস্তবায়ন হয়নি এখনো। এতে স্থানীয়দের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।

 

স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল হাকিম সবুজ বলেন, “করোনাকালীন সময়ে আমরা এখানে নৌকা বাইচ উৎসব করেছিলাম। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষও উপভোগ করেছিল অনুষ্ঠানটি। বারবার চেষ্টা করেছি বাঁধটিকে মিনি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে। পূর্ববর্তী ও বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বাঁধ পরিদর্শন করেছেন, কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ হয়নি। এটি বাস্তবায়ন হলে উপজেলায় পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতো।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় তরুণ নেতা মশিউর রহমান দুর্জয় বলেন, “আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছিলাম। উনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, পরে বিষয়টি আর এগোয়নি। ভার্সিটি থেকে ফিরেই আবার আলোচনা করবো।”

বিদ্যানন্দ ছাড়াও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িরহাট টি-বাঁধ এলাকায়ও উৎসবের সময় বিপুল মানুষের সমাগম হয়। তবে কয়েক বছর আগে তিস্তার প্রবল স্রোতে বাঁধের সামনের অংশ ভেঙে গেলেও তা আজও সংস্কার হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যটন খাতের প্রসারে সরকারি পরিকল্পনার কথা শোনা গেলেও রাজারহাটে এ নিয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

এদিকে রাজারহাটের আরও কয়েকটি সম্ভাবনাময় স্থান যেমন—চাকিরপশার বিল, চান্দামারির বুড়ি তিস্তায় পদ্মবিল এবং ঘড়িয়ালডাঙ্গা জমিদারবাড়ি পর্যটনের জন্য দারুণ উপযোগী বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এসব স্থানে পরিকল্পিত অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা গড়ে তুলতে পারলে পর্যটনের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যও সমৃদ্ধ হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান বলেন, “উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে বিভিন্ন সম্ভাবনাময় স্থান চিহ্নিত করেছে। তিস্তা নদীর নতুন বাঁধও এর মধ্যে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় উদ্যোগের সমন্বয়ে পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলে এখানকার পর্যটন উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।”