রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে টানা দুই দিনে আগুনসন্ত্রাস ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এসব নাশকতায় ইতোমধ্যে বাসে অগ্নিসংযোগ, ককটেল হামলা এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, পরিকল্পিত এসব ঘটনার সঙ্গে কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগের সদস্যদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে।
গত ৭ নভেম্বর রাতে রাজধানীর কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রাল চার্চের সামনে মোটরসাইকেল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সেখানে একটি অবিস্ফোরিত ককটেলও উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর সোমবার (১০ নভেম্বর) ভোরে মেরুল বাড্ডা, শাহজাদপুর, ধানমন্ডি ও যাত্রাবাড়ীতে কয়েকটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ভোরে উত্তরার জনপথ মোড়ে ও ভাটারা এলাকায়ও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। আজ রাতে রাজধানীর সূত্রাপুরে মালঞ্চ পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বাসে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে মারা যান চালক জুলহাস মিয়া। রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বাংলামোটর ও খিলগাঁও ফ্লাইওভার এলাকায়ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বলছে, চলতি মাসে এ পর্যন্ত ১৫ স্থানে ১৭টি বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং গত দুই দিনে নয়টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের মতে, সাম্প্রতিক এসব অগ্নিসন্ত্রাসের পেছনে ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত তৎপরতা চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলের বিদেশে পালিয়ে থাকা নেতাকর্মীরা নাশকতার আহ্বান দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, “কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের সদস্যরা রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল, ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত এসব ঘটনায় জড়িত ৫৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
র্যাব জানিয়েছে, রাজধানী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রায় দুই শতাধিক টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে এবং ৭০টি চেকপোস্টে তল্লাশি কার্যক্রম চলছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধর্মীয় স্থাপনা ও পরিবহন খাতে এ ধরনের হামলা পরিকল্পিত সন্ত্রাসের নতুন ধারা। ঢাবির সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, “রাজনৈতিক লক্ষ্য হাসিলের জন্য সন্ত্রাস ও নাশকতা ব্যবহার করা বর্বরোচিত ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড। এসব প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
এমআর/সবা

























