কম খরচ, কম পরিশ্রমে বেশি ফলন এবং বাজারদর ভালো থাকায় দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় শীতকালীন বাদাম চাষে দ্রুত আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকেরা। এ কারণে প্রতি বছরই উপজেলায় বাদাম চাষের পরিমাণ বাড়ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, বীরগঞ্জের উৎপাদিত বাদাম মানসম্মত হওয়ায় দেশব্যাপী রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
কৃষকরা জানান, বোরো ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা লোকসানের মুখে পড়ছেন। অপরদিকে কম খরচে বাদাম চাষে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম চাষে খরচ হয় ১০–১২ হাজার টাকা, আর উৎপাদন হয় ৯–১০ মণ। বাজারে এসব বাদাম বিক্রি করা যায় ৩২–৩৫ হাজার টাকায়। পাশাপাশি বাদাম গাছ গরুর সুষম খাদ্য ও রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়, যা কৃষকদের অতিরিক্ত সুবিধা দিচ্ছে।
দিনাজপুরের বাদাম ব্যবসায়ী তপন কুমার জানান, বীরগঞ্জের বাদাম উন্নতমানের হওয়ায় তিনি কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন। ভরা মৌসুমে প্রতি মণ বাদাম ৩,২০০–৩,400 টাকায় বিক্রি হয় এবং অফ সিজনে দাম বেড়ে দাঁড়ায় আরও ৮০০–৯০০ টাকা বেশি। বাদাম শুকানো ও বাছাই করার কাজেও নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে; প্রতিদিন ৪০০–৫০০ টাকা আয় করে নারী কর্মীরা সংসার চালাতে সহযোগিতা করছে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আফজাল হোসেন জানান, বেলে-দোআঁশ মাটি বাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। চলতি বছর বীরগঞ্জের শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম, পাল্টাপুর ও মরিচা ইউনিয়নে ৩০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন চিনাবাদাম চাষ হয়েছে। কৃষকরা ক্রমেই বাদাম চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন, আর কৃষি বিভাগ পরামর্শসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করছে।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, বাদাম চাষে খরচ কম হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এ বছর উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে এবং ভালো ফলন নিশ্চিত করতে উন্নত বীজ, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
এমআর/সবা
























