চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় সোমবার সকালে একটি বস্তিতে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার পর মুহূর্তেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, ফলে বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শাহ ইমরান জানান, আগুন লেগে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ছিল, কারণ ঘরগুলো টিন, কাঠ ও পলিথিনে নির্মিত এবং অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। তিনি বলেন, “আমরা দ্রুত পৌঁছাতে পেরেছি বলেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এখনো পুনরায় কোনো ঝুঁকি আছে কি না তা যাচাই করা হচ্ছে।” এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত নেই বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই অনেকে ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেননি। শিশু ও বৃদ্ধদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। ধোঁয়ায় অনেকের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলেও গুরুতর কিছু হয়নি। আগুনের সঠিক কারণ জানা না গেলেও বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট বা চুলার আগুন থেকে শুরু হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বস্তির দাহ্য উপকরণ, সরু গলিপথ, নিরাপত্তাহীন বৈদ্যুতিক সংযোগ এবং পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এ ধরনের স্থানে সবসময়ই অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বেশি। বস্তিবাসীর অভিযোগ, স্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়ায় প্রায়ই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত শুরু করেছে। বাসিন্দারা জানান, বড় ক্ষতি না হলেও ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। রাত বা গভীর রাতে আগুন লাগলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারত বলেও তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় থানার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাদের আশ্বাস সত্ত্বেও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মনে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে—ঘরবাড়ি হারালে কোথায় থাকবেন, সন্তানদের কোথায় নিয়ে যাবেন এসব প্রশ্ন এখন তাদের সামনে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নগরীর বস্তিগুলোতে অগ্নিকাণ্ড প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকের ঘটনাটি আবারও মনে করিয়ে দিল—ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার অগ্নি-নিরাপত্তা বাড়ানো এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এখনই জরুরি।
এমআর/সবা























