০২:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্কুলে ভর্তির নীতিমালা সংশোধন, বয়সসীমা শিথিল

সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সসীমা তুলে দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ফলে যেসব শিক্ষার্থী বয়সসীমার কারণে আবেদন করতে পারছিল না, এখন তারা আবেদন করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত বয়সের দিকে অভিভাবকদের নজর রাখতে হবে বলে জানিয়েছে মাউশি।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) মাউশির জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলে ভর্তির নীতিমালা সংশোধনের বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন মাউশির মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল।

সংশোধিত নীতিমালায় প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের বয়স ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী শ্রেণিগুলোতে প্রযোজ্য হবে—এই অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে আর কোনো বয়সসীমা থাকছে না।

মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনলাইন আবেদন চলমান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১৩ নভেম্বর শিক্ষার্থী ভর্তির যে নীতিমালা প্রকাশ করেছিল, তার অনুচ্ছেদ-২ এ থাকা বয়স নির্ধারণ অংশে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সংশোধিত নীতিমালা বয়স নির্ধারণ অংশ বলা হয়, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত হবে। যেমন, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোনো শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে অর্থাৎ, সর্বনিম্ন জন্ম তারিখ হবে ১ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত। সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ, জন্ম তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত।

এতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে।

মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-১) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, বয়সসীমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিভাবকদের অভিযোগ ছিল। অনেক অভিভাবক জানাচ্ছিলেন, তাদের সন্তানের ভর্তির আবেদন করতে পারছেন না। এ কারণে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে বয়সসীমা শিথিল করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অভিভাবকদের শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনাগুলোও অনুসরণ করতে হবে। সেখানে কিন্তু ষষ্ঠ, অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের একটি নির্দিষ্ট বয়স প্রয়োজন হয়। যেমন এ বছর শিক্ষা বোর্ড ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সর্বনিম্ন বয়সসীমা ৯ বছর করেছে। এখন কেউ তো ৯ বছরের নিচের বয়সীকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করালে বিপাকে পড়বেন। ফলে বোর্ডের বয়সসীমা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে আবেদন করতে হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন চালু রয়েছে। ২০২৫ সালের ২০ আগস্টের সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সর্বনিম্ন বয়স ৯ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৫ বছর। তবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ২০ বছর। আর অষ্টম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সর্বনিম্ন বয়স ১১ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৭ বছর। তবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ২২ বছর। সব সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা বোর্ডের অধীন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।

জনপ্রিয় সংবাদ

সোনারগাঁয়ে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করায় গুড়িয়ে দেয়া হয় দু’টি প্রতিষ্ঠান, একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

স্কুলে ভর্তির নীতিমালা সংশোধন, বয়সসীমা শিথিল

আপডেট সময় : ০৮:২৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫

সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সসীমা তুলে দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ফলে যেসব শিক্ষার্থী বয়সসীমার কারণে আবেদন করতে পারছিল না, এখন তারা আবেদন করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত বয়সের দিকে অভিভাবকদের নজর রাখতে হবে বলে জানিয়েছে মাউশি।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) মাউশির জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলে ভর্তির নীতিমালা সংশোধনের বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন মাউশির মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল।

সংশোধিত নীতিমালায় প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের বয়স ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী শ্রেণিগুলোতে প্রযোজ্য হবে—এই অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে আর কোনো বয়সসীমা থাকছে না।

মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনলাইন আবেদন চলমান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১৩ নভেম্বর শিক্ষার্থী ভর্তির যে নীতিমালা প্রকাশ করেছিল, তার অনুচ্ছেদ-২ এ থাকা বয়স নির্ধারণ অংশে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সংশোধিত নীতিমালা বয়স নির্ধারণ অংশ বলা হয়, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত হবে। যেমন, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোনো শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে অর্থাৎ, সর্বনিম্ন জন্ম তারিখ হবে ১ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত। সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ, জন্ম তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত।

এতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে।

মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-১) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, বয়সসীমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিভাবকদের অভিযোগ ছিল। অনেক অভিভাবক জানাচ্ছিলেন, তাদের সন্তানের ভর্তির আবেদন করতে পারছেন না। এ কারণে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে বয়সসীমা শিথিল করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অভিভাবকদের শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনাগুলোও অনুসরণ করতে হবে। সেখানে কিন্তু ষষ্ঠ, অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের একটি নির্দিষ্ট বয়স প্রয়োজন হয়। যেমন এ বছর শিক্ষা বোর্ড ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সর্বনিম্ন বয়সসীমা ৯ বছর করেছে। এখন কেউ তো ৯ বছরের নিচের বয়সীকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করালে বিপাকে পড়বেন। ফলে বোর্ডের বয়সসীমা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে আবেদন করতে হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন চালু রয়েছে। ২০২৫ সালের ২০ আগস্টের সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সর্বনিম্ন বয়স ৯ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৫ বছর। তবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ২০ বছর। আর অষ্টম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সর্বনিম্ন বয়স ১১ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৭ বছর। তবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ২২ বছর। সব সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা বোর্ডের অধীন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।