০৬:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিতে জট

  • শিক্ষকদের পদোন্নতি না দেয়ার বাড়ছে ক্ষোভ
  • বছরের পর বছর একই পদে চাকরি করেও পদোন্নতি মেলে না
  • শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘অনীহা’কে দায়ী করছেন শিক্ষকরা
  • সাংবাদিকতা-ওকালতি করতে পারবেন না এমপিও শিক্ষকরা
  • চলতি সপ্তাহে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির একটি প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে- খালিম মাহমুদ, জনসংযোগ কর্মকর্তা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিতে দীর্ঘদিনের জট। বছরের পর বছর একই পদে চাকরি করেও পদোন্নতি হয় না। এ পদোন্নতি না হওয়ার পেছনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘অনীহা’কে দায়ী করেন শিক্ষকরা। সম্প্রতি তার প্রমাণও মিলেছে। শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য এক হাজার ৩২ জনের খসড়া তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে পদায়ন, পদোন্নতির সুযোগ নেই। এতে হাজারও কর্মকর্তা পদোন্নতিবঞ্চিত হতে পারেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতায় পদোন্নতিও আটকে যেতে পারে। মাউশি সরকারি কলেজ শাখার উপ-পরিচালক নুরুল হক সিকদার জানান, ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে খসড়া তালিকা পাঠানো হয়েছে। এক হাজার ৩২ জনের খসড়া তালিকায় বিসিএস ২১তম ব্যাচের ১৩৩ জন, ২২তম ব্যাচের ৮৩৩ জন ও ২৩তম ব্যাচের ১০ জন আছেন। জানা যায়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ২১, ২২ ও ২৩তম ব্যাচের শিক্ষকরা দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে উচ্চশিক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের অধিকাংশই দীর্ঘ ৯-১০ বছর ধরে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও পেশাদারি থাকা সত্ত্বেও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি না পাওয়ায় তারা হাতশ ও ক্ষুব্ধ। তারা জানান, ২১-২২তম ব্যাচের পরীক্ষার শুরু থেকে নিয়োগপ্রক্রিয়া দুই সরকারের সময়ে সমাপ্ত হয়েছে। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও সাইকোলজিক্যাল টেস্ট হয় ২০০০ সালে আর ভাইভা ও চূড়ান্ত ফল ঘোষণা হয় ২০০৩ সালে। তাই পেশাগত দিক থেকে এ দুটি ব্যাচকে নিরপেক্ষ ও সৃজনশীল ব্যাচ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শিক্ষকদের অভিযোগ, একই সময়ে একই বিসিএসে যোগদান করেও অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা নিয়মিত পদোন্নতি পাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডার দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি সংকটে ভুগছে। পাঠদান, গবেষণা, প্রশাসনিক দক্ষতা; সব ক্ষেত্রে যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়ার পরও তারা পদোন্নতির সুযোগ পাচ্ছেন না, যা হতাশা তৈরি করছে। গত কয়েক বছর ধরে এসব শিক্ষক বেতন কাঠামোর পঞ্চম গ্রেডের শেষ ধাপে অবস্থান করছেন। ফলে চলতি অর্থবছর থেকেই তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষকদের দাবি, অধ্যাপক হলেও তারা চতুর্থ গ্রেডের শেষ ধাপেই অবস্থান করবেন। তাই পদোন্নতিতে সরকারের রাজস্ব ব্যয় বাড়বে না, এটি কেবল সম্মান ও পদগত স্বীকৃতি। চলতি বছরের নভেম্বরের শেষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, স্বাস্থ্য ক্যাডারে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মকর্তা অধ্যাপক পদে তৃতীয় গ্রেড পেয়েছেন। চলতি মাসের ৪ ডিসেম্বর এ ক্যাডারের সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতিতে চতুর্থ গ্রেড দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ২১, ২২, ২৩তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডাররা এখন যুগ্ম সচিব পদে কর্মরত আছেন। তারা তৃতীয় গ্রেডের কর্মকর্তা। একই ব্যাচে চাকরি করে স্বাস্থ্য ক্যাডাররা চতুর্থ গ্রেডে আছেন। অন্যদিকে শিক্ষা ক্যাডাররা পঞ্চম গ্রেডে বছরের পর বছর কাজ করছেন। এ বিষয়ে শিক্ষকদের বক্তব্য, পদোন্নতি পাওয়া গেলে অন্যান্য ক্যাডারের সঙ্গে থাকা বৈষম্য কিছুটা কমবে। এতে তাদের সামাজিক মর্যাদা ও কর্মপ্রেরণা বাড়বে, যা উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তারা নানাভাবে চেষ্টা করছেন। সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে সুপারনিউমেরারি পদ সৃজনের প্রস্তাব দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাব জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। সেখানে (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অধ্যাপক পর্যায়ে ২ হাজার ৩০৫টি এবং সহযোগী অধ্যাপক পর্যায়ে ৩ হাজার ৫৫৬টি সুপারনিউমেরারি পদ সৃজনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সুপার নিউমারি পদ সৃজন সময়সাপেক্ষ বিষয়। কারণ শুধু জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় নয়, সচিব কমিটি ও প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। যে কারণে প্রথম ধাপে ২১ ব্যাচ পরবর্তীতে ২২ ও ২৩ ব্যাচকে পদোন্নতি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সচিব মাত্র ৩০ মিনিট সময় দিলেই শিক্ষা ক্যাডারে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া যায়। তালিকাও প্রস্তুত আছে। কিন্তু কোনো অদৃশ্য কারণে এটি থমকে আছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীনকে একাধিকবার কল করা পাশাপাশি এমএমএস দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা খালিম মাহমুদ বলেন, আমার জানামতে চলতি সপ্তাহে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির একটি প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। এর বেশি আমার কিছু জানা নেই। এদিকে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার পাশাপাশি অনেকে সাংবাদিকতা পেশায়ও জড়িত। কেউ আইনজীবী, আবার কেউ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করে থাকেন। এতদিন এ কাজে কোনো আইনি বাধা ছিল না। ফলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মফস্বলে সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িত। তবে নতুন এমপিও নীতিমালায় শিক্ষকদের ‘আর্থিক লাভজনক’ কোনো পেশায় জড়িত থাকা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর্থিক লাভজনক কয়েকটি পেশার নাম উল্লেখও করে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে সাংবাদিকতা, আইন পেশা, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা। গত রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে নতুন এমপিও নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। এ নীতিমালার ১১ নম্বর ধারার ১৭ উপধারার ‘ক’ও ‘খ’ বিধিতে এ বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিতে জট

আপডেট সময় : ০৭:১১:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • শিক্ষকদের পদোন্নতি না দেয়ার বাড়ছে ক্ষোভ
  • বছরের পর বছর একই পদে চাকরি করেও পদোন্নতি মেলে না
  • শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘অনীহা’কে দায়ী করছেন শিক্ষকরা
  • সাংবাদিকতা-ওকালতি করতে পারবেন না এমপিও শিক্ষকরা
  • চলতি সপ্তাহে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির একটি প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে- খালিম মাহমুদ, জনসংযোগ কর্মকর্তা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিতে দীর্ঘদিনের জট। বছরের পর বছর একই পদে চাকরি করেও পদোন্নতি হয় না। এ পদোন্নতি না হওয়ার পেছনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘অনীহা’কে দায়ী করেন শিক্ষকরা। সম্প্রতি তার প্রমাণও মিলেছে। শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য এক হাজার ৩২ জনের খসড়া তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে পদায়ন, পদোন্নতির সুযোগ নেই। এতে হাজারও কর্মকর্তা পদোন্নতিবঞ্চিত হতে পারেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতায় পদোন্নতিও আটকে যেতে পারে। মাউশি সরকারি কলেজ শাখার উপ-পরিচালক নুরুল হক সিকদার জানান, ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে খসড়া তালিকা পাঠানো হয়েছে। এক হাজার ৩২ জনের খসড়া তালিকায় বিসিএস ২১তম ব্যাচের ১৩৩ জন, ২২তম ব্যাচের ৮৩৩ জন ও ২৩তম ব্যাচের ১০ জন আছেন। জানা যায়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ২১, ২২ ও ২৩তম ব্যাচের শিক্ষকরা দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে উচ্চশিক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের অধিকাংশই দীর্ঘ ৯-১০ বছর ধরে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও পেশাদারি থাকা সত্ত্বেও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি না পাওয়ায় তারা হাতশ ও ক্ষুব্ধ। তারা জানান, ২১-২২তম ব্যাচের পরীক্ষার শুরু থেকে নিয়োগপ্রক্রিয়া দুই সরকারের সময়ে সমাপ্ত হয়েছে। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও সাইকোলজিক্যাল টেস্ট হয় ২০০০ সালে আর ভাইভা ও চূড়ান্ত ফল ঘোষণা হয় ২০০৩ সালে। তাই পেশাগত দিক থেকে এ দুটি ব্যাচকে নিরপেক্ষ ও সৃজনশীল ব্যাচ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শিক্ষকদের অভিযোগ, একই সময়ে একই বিসিএসে যোগদান করেও অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা নিয়মিত পদোন্নতি পাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডার দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি সংকটে ভুগছে। পাঠদান, গবেষণা, প্রশাসনিক দক্ষতা; সব ক্ষেত্রে যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়ার পরও তারা পদোন্নতির সুযোগ পাচ্ছেন না, যা হতাশা তৈরি করছে। গত কয়েক বছর ধরে এসব শিক্ষক বেতন কাঠামোর পঞ্চম গ্রেডের শেষ ধাপে অবস্থান করছেন। ফলে চলতি অর্থবছর থেকেই তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষকদের দাবি, অধ্যাপক হলেও তারা চতুর্থ গ্রেডের শেষ ধাপেই অবস্থান করবেন। তাই পদোন্নতিতে সরকারের রাজস্ব ব্যয় বাড়বে না, এটি কেবল সম্মান ও পদগত স্বীকৃতি। চলতি বছরের নভেম্বরের শেষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, স্বাস্থ্য ক্যাডারে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মকর্তা অধ্যাপক পদে তৃতীয় গ্রেড পেয়েছেন। চলতি মাসের ৪ ডিসেম্বর এ ক্যাডারের সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতিতে চতুর্থ গ্রেড দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ২১, ২২, ২৩তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডাররা এখন যুগ্ম সচিব পদে কর্মরত আছেন। তারা তৃতীয় গ্রেডের কর্মকর্তা। একই ব্যাচে চাকরি করে স্বাস্থ্য ক্যাডাররা চতুর্থ গ্রেডে আছেন। অন্যদিকে শিক্ষা ক্যাডাররা পঞ্চম গ্রেডে বছরের পর বছর কাজ করছেন। এ বিষয়ে শিক্ষকদের বক্তব্য, পদোন্নতি পাওয়া গেলে অন্যান্য ক্যাডারের সঙ্গে থাকা বৈষম্য কিছুটা কমবে। এতে তাদের সামাজিক মর্যাদা ও কর্মপ্রেরণা বাড়বে, যা উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তারা নানাভাবে চেষ্টা করছেন। সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে সুপারনিউমেরারি পদ সৃজনের প্রস্তাব দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাব জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। সেখানে (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অধ্যাপক পর্যায়ে ২ হাজার ৩০৫টি এবং সহযোগী অধ্যাপক পর্যায়ে ৩ হাজার ৫৫৬টি সুপারনিউমেরারি পদ সৃজনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সুপার নিউমারি পদ সৃজন সময়সাপেক্ষ বিষয়। কারণ শুধু জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় নয়, সচিব কমিটি ও প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। যে কারণে প্রথম ধাপে ২১ ব্যাচ পরবর্তীতে ২২ ও ২৩ ব্যাচকে পদোন্নতি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সচিব মাত্র ৩০ মিনিট সময় দিলেই শিক্ষা ক্যাডারে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া যায়। তালিকাও প্রস্তুত আছে। কিন্তু কোনো অদৃশ্য কারণে এটি থমকে আছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীনকে একাধিকবার কল করা পাশাপাশি এমএমএস দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা খালিম মাহমুদ বলেন, আমার জানামতে চলতি সপ্তাহে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির একটি প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। এর বেশি আমার কিছু জানা নেই। এদিকে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার পাশাপাশি অনেকে সাংবাদিকতা পেশায়ও জড়িত। কেউ আইনজীবী, আবার কেউ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করে থাকেন। এতদিন এ কাজে কোনো আইনি বাধা ছিল না। ফলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মফস্বলে সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িত। তবে নতুন এমপিও নীতিমালায় শিক্ষকদের ‘আর্থিক লাভজনক’ কোনো পেশায় জড়িত থাকা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর্থিক লাভজনক কয়েকটি পেশার নাম উল্লেখও করে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে সাংবাদিকতা, আইন পেশা, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা। গত রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে নতুন এমপিও নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। এ নীতিমালার ১১ নম্বর ধারার ১৭ উপধারার ‘ক’ও ‘খ’ বিধিতে এ বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।