১০:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাট টিটিসিতে সাংবাদিক লাঞ্ছনা: অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও হুমকির অভিযোগ

নারী কেলেঙ্কারিসহ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত লালমনিরহাট টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি)-এর অধ্যক্ষ আইনুল হকের বক্তব্য নিতে গেলে এক সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে টিটিসি কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে সাংবাদিক আহসান সাকিবকে হুমকি ও অপমান করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ আইনুল হক পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি করে সাংবাদিককে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার হুমকি দেন।

জানা যায়, অধ্যক্ষ আইনুল হক এর আগে দিনাজপুর ও কুড়িগ্রাম টিটিসিতে কর্মরত ছিলেন এবং বর্তমানে লালমনিরহাট টিটিসিতে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারিসহ একাধিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সংখ্যা অর্ধশতাধিক বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

লাঞ্ছিত সাংবাদিক আহসান সাকিব বলেন, “আমি এর আগেও অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছি। তবে নীতিগত কারণে তার বক্তব্য না পেয়ে অপেক্ষা করছিলাম। যেহেতু আমি ঢাকায় কর্মরত এবং আগামীকাল ঢাকায় ফেরার পরিকল্পনা ছিল, তাই আজ অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে টিটিসিতে যাই। এ সময় অধ্যক্ষ আইনুল হক ও প্রতিষ্ঠানের দু’জন শিক্ষক পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি করেন।”

তিনি আরও বলেন, “অধ্যক্ষের মুখ থেকে ‘ও কিভাবে প্রতিষ্ঠানে ঢুকে’, ‘ও কিসের সাংবাদিক’, ‘ওকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখো’—এমন ভাষা ব্যবহার করা হয়। এমনকি আমাকে চাঁদাবাজ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তিনি প্রতিষ্ঠানের দুই শিক্ষক নারায়ণ ও শুভকে উদ্দেশ্য করে বলেন—‘ওকে গাছের সঙ্গে না বাঁধলে তোমাদের চাকরি থাকবে না।’ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আমি শান্তভাবে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করি।”

ঘটনার খবর পেয়ে সাংবাদিকদের একটি দল সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানায়।

সাংবাদিক তন্ময় আহমেদ নয়ন বলেন, “একজন প্রতিষ্ঠানের প্রধান কীভাবে একজন সংবাদকর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার হুমকি দিতে পারেন—এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা আমাদের সহকর্মীর ওপর যেকোনো হামলার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।”

সিনিয়র সাংবাদিক আশরাফুল ইসলাম রতন বলেন, “সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহের জন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানে যেতে পারেন। কোনো কর্মকর্তা যদি তথ্য দিতে না চান এবং এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান, তাহলে সেখানে গুরুতর অনিয়মের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”

ঘটনার প্রতিবাদে পরে সাংবাদিকরা লালমনিরহাট–রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

লালমনিরহাট টিটিসিতে সাংবাদিক লাঞ্ছনা: অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও হুমকির অভিযোগ

আপডেট সময় : ১০:৪৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

নারী কেলেঙ্কারিসহ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত লালমনিরহাট টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি)-এর অধ্যক্ষ আইনুল হকের বক্তব্য নিতে গেলে এক সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে টিটিসি কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে সাংবাদিক আহসান সাকিবকে হুমকি ও অপমান করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ আইনুল হক পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি করে সাংবাদিককে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার হুমকি দেন।

জানা যায়, অধ্যক্ষ আইনুল হক এর আগে দিনাজপুর ও কুড়িগ্রাম টিটিসিতে কর্মরত ছিলেন এবং বর্তমানে লালমনিরহাট টিটিসিতে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারিসহ একাধিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সংখ্যা অর্ধশতাধিক বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

লাঞ্ছিত সাংবাদিক আহসান সাকিব বলেন, “আমি এর আগেও অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছি। তবে নীতিগত কারণে তার বক্তব্য না পেয়ে অপেক্ষা করছিলাম। যেহেতু আমি ঢাকায় কর্মরত এবং আগামীকাল ঢাকায় ফেরার পরিকল্পনা ছিল, তাই আজ অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে টিটিসিতে যাই। এ সময় অধ্যক্ষ আইনুল হক ও প্রতিষ্ঠানের দু’জন শিক্ষক পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি করেন।”

তিনি আরও বলেন, “অধ্যক্ষের মুখ থেকে ‘ও কিভাবে প্রতিষ্ঠানে ঢুকে’, ‘ও কিসের সাংবাদিক’, ‘ওকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখো’—এমন ভাষা ব্যবহার করা হয়। এমনকি আমাকে চাঁদাবাজ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তিনি প্রতিষ্ঠানের দুই শিক্ষক নারায়ণ ও শুভকে উদ্দেশ্য করে বলেন—‘ওকে গাছের সঙ্গে না বাঁধলে তোমাদের চাকরি থাকবে না।’ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আমি শান্তভাবে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করি।”

ঘটনার খবর পেয়ে সাংবাদিকদের একটি দল সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানায়।

সাংবাদিক তন্ময় আহমেদ নয়ন বলেন, “একজন প্রতিষ্ঠানের প্রধান কীভাবে একজন সংবাদকর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার হুমকি দিতে পারেন—এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা আমাদের সহকর্মীর ওপর যেকোনো হামলার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।”

সিনিয়র সাংবাদিক আশরাফুল ইসলাম রতন বলেন, “সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহের জন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানে যেতে পারেন। কোনো কর্মকর্তা যদি তথ্য দিতে না চান এবং এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান, তাহলে সেখানে গুরুতর অনিয়মের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”

ঘটনার প্রতিবাদে পরে সাংবাদিকরা লালমনিরহাট–রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।