সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলাচ্ছে শীত উপভোগের ধরনও। একসময় শীত মানেই ছিল পিঠাপুলি আর গ্রামবাংলার চুলোর ধোঁয়া, এখন তার জায়গা নিচ্ছে কুয়াশাভেজা রাত, আগুনের উষ্ণতা আর বারবিকিউয়ের ঘ্রাণ। এই নতুন শীত-সংস্কৃতির সবচেয়ে প্রাণবন্ত চিত্র দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) তারই একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
শীত নামলেই নোবিপ্রবির নীলদিঘির পাড় হয়ে ওঠে আড্ডা, গান আর বন্ধুত্বের মিলনমেলা। সম্প্রতি শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা আয়োজন করেন এমনই এক বারবিকিউ পার্টি। সকাল থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি—বাজার করা, মসলা মাখানো, দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া। আয়োজনটি যে শুধু খাবারের নয়, সম্পর্কেরও—তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে সবার মুখে হাসি আর ব্যস্ততায়।
সন্ধ্যার পর নীলদিঘির পাড়ে জ্বলে ওঠে আগুন। তার ওপর তারের নেটে রাখা মাংস ধীরে ধীরে রঙ বদলায়, চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে বারবিকিউয়ের সুগন্ধ। এক পাশে গিটারের সুর, অন্য পাশে দলবেঁধে গান। আড্ডা, হাসি আর গল্পে প্রাণ পায় পুরো পরিবেশ।
শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, “সারা সেমিস্টারের চাপ থেকে এমন আয়োজন আমাদের মানসিক স্বস্তি দেয়। বন্ধু আর শিক্ষকদের সঙ্গে নির্ভার সময় কাটানোর সুযোগ পাওয়া যায়।” আরেক শিক্ষার্থী অনি আক্তার জানান, “পরিবার ছেড়ে ক্যাম্পাসে থাকা আমাদের জন্য এসব আয়োজনই ছোট্ট পরিবারের মতো।”

এই আনন্দে শিক্ষকরাও অংশ নেন। শিক্ষক ওয়ালিউর রহমান আকন্দ বলেন, “শ্রেণিকক্ষের বাইরে এমন আয়োজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর দূরত্ব কমায়, সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে।”
শীত এলেই নীলদিঘির পাড়ে এমন বারবিকিউ আড্ডা যেন নিয়মিত দৃশ্য। আলো-ছায়ার খেলায়, কুয়াশা কিংবা জোছনায়—এই জায়গা হয়ে ওঠে স্মৃতি তৈরির এক বিশেষ ঠিকানা। বারবিকিউ তাই শুধু খাবারের আয়োজন নয়; এটি বন্ধন, ভালোবাসা আর তারুণ্যের গল্প—যা ক্যাম্পাস জীবন পেরিয়েও থেকে যায় স্মৃতির পাতায়।
এমআর/সবা


























