১২:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝরনা ও অরণ্য পেরিয়ে হিমালয়ার হিমসন্ধ্যা

পরের দিনের ট্রেক আমার জন্য একটু দীর্ঘ। কিন্তু এখানে সকাল সাতটার আগে ব্রেকফাস্ট তৈরি হবে না। তাই সাড়ে সাতটায় বের হব। ৬ মে ভোরে ঘুম থেকে উঠে জানালা দিয়ে সূর্যোদয় দেখতে পাই। ভোরের আলোয় ঝকঝকে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে অন্নপূর্ণা সাউথ, হিউঞ্চুলি, অন্নপূর্ণা ৩ আর বিখ্যাত ফিশটেইল। ব্যাগ গুছিয়ে, ব্রেকফাস্ট সেরে তৈরি হয়ে সাড়ে সাতটায় পথে নামি। ছমরং ছিল ২ হাজার ২১০ মিটার উচ্চতায়। আর আজ হিমালয়াতে গিয়ে পৌঁছাব ২ হাজার ৯৫০ মিটার উচ্চতায়। এবিসির (অন্নপূর্ণা বেজক্যাম্প) পথে এখানে একটা ছোট্ট জায়গার নাম হিমালয়া; যদিও হিমালয়াজ বলতে আমরা পুরো হিমালয় পর্বত বুঝি।

এমনিতেই আজকের ট্রেকটা বেশ দীর্ঘ। তার ওপর এক দিনে অনেকটা উঁচুতে ওঠা। সব মিলিয়ে কাজটা সহজ নয়। বিশেষ করে অনভিজ্ঞ ট্রেকারদের কাছে এই দিনের ট্রেক বেশ কঠিন। আসলে পার্বত্য পথে ট্রেক করতে গেলে প্রতিদিনই নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। দৃঢ় প্রত্যয়ে অর্জন করতে হয় প্রতিদিনের লক্ষ্য। শেষ পর্যন্ত আমার কাছে অবশ্য দিনটি বিশেষভাবে কষ্টকর মনে হয়নি। তবে এভারেস্ট বেজক্যাম্প অথবা গোকিও ট্রেকের তুলনায় এই উচ্চতা তো কিছুই নয়।

প্রথমে ৪৫ মিনিট ধরে ক্রমাগত নামতেই থাকি। নামতে নামতে একেবারে নদীর কিনারে পৌঁছাই। কালী গণ্ডকী নদীর ওপর বেশ বড় একটা সাসপেনশন ব্রিজ। ইবিসির (এভারেস্ট বেজক্যাম্প) ব্রিজগুলোর তুলনায় এখানকার প্রায় সব ঝুলন্ত সেতু অনেকটা নিচের দিকে। ব্রিজ পার হয়ে দেড় ঘণ্টা খাড়া চড়াই বেয়ে পাহাড়ের উঁচুতে উঠে যেতে হয়। যে জায়গায় পৌঁছলাম, তার নাম আপার সিনুওয়া। এর পরের দেড় ঘণ্টা ধীর চড়াই, অপরূপ শ্যামল রঙের আপার মোদিখোলা উপত্যকার ভেতর দিয়ে ক্রমান্বয়ে উঁচুতে উঠে যাওয়া পথ ধরে চলতে হয়। একটা অংশে অরণ্য বেশ ঘন ও গভীর। ওক আর রডোডেনড্রন তো রয়েছেই; তার সঙ্গে আছে বেত ও বাঁশের ঘন বন। অনেকটা উঁচুতে উঠে তারপর আবার কিছুটা নেমে নদীর তীরে ব্যাম্বু নামের একটা ছোট জায়গায় এলাম। দুপুরের খাবারের জন্য জায়গাটা দুর্দান্ত। এবারের যাত্রায় রাতে ডাল–ভাত অথবা ডিমের ঝোল আর ভাত খেলেও দুপুরে আমি একটা স্যুপ ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, অথবা মোমো খেতে চেষ্টা করি।

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সামান্তা শারমিনের নতুন বার্তা

ঝরনা ও অরণ্য পেরিয়ে হিমালয়ার হিমসন্ধ্যা

আপডেট সময় : ০৬:৩৪:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

পরের দিনের ট্রেক আমার জন্য একটু দীর্ঘ। কিন্তু এখানে সকাল সাতটার আগে ব্রেকফাস্ট তৈরি হবে না। তাই সাড়ে সাতটায় বের হব। ৬ মে ভোরে ঘুম থেকে উঠে জানালা দিয়ে সূর্যোদয় দেখতে পাই। ভোরের আলোয় ঝকঝকে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে অন্নপূর্ণা সাউথ, হিউঞ্চুলি, অন্নপূর্ণা ৩ আর বিখ্যাত ফিশটেইল। ব্যাগ গুছিয়ে, ব্রেকফাস্ট সেরে তৈরি হয়ে সাড়ে সাতটায় পথে নামি। ছমরং ছিল ২ হাজার ২১০ মিটার উচ্চতায়। আর আজ হিমালয়াতে গিয়ে পৌঁছাব ২ হাজার ৯৫০ মিটার উচ্চতায়। এবিসির (অন্নপূর্ণা বেজক্যাম্প) পথে এখানে একটা ছোট্ট জায়গার নাম হিমালয়া; যদিও হিমালয়াজ বলতে আমরা পুরো হিমালয় পর্বত বুঝি।

এমনিতেই আজকের ট্রেকটা বেশ দীর্ঘ। তার ওপর এক দিনে অনেকটা উঁচুতে ওঠা। সব মিলিয়ে কাজটা সহজ নয়। বিশেষ করে অনভিজ্ঞ ট্রেকারদের কাছে এই দিনের ট্রেক বেশ কঠিন। আসলে পার্বত্য পথে ট্রেক করতে গেলে প্রতিদিনই নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। দৃঢ় প্রত্যয়ে অর্জন করতে হয় প্রতিদিনের লক্ষ্য। শেষ পর্যন্ত আমার কাছে অবশ্য দিনটি বিশেষভাবে কষ্টকর মনে হয়নি। তবে এভারেস্ট বেজক্যাম্প অথবা গোকিও ট্রেকের তুলনায় এই উচ্চতা তো কিছুই নয়।

প্রথমে ৪৫ মিনিট ধরে ক্রমাগত নামতেই থাকি। নামতে নামতে একেবারে নদীর কিনারে পৌঁছাই। কালী গণ্ডকী নদীর ওপর বেশ বড় একটা সাসপেনশন ব্রিজ। ইবিসির (এভারেস্ট বেজক্যাম্প) ব্রিজগুলোর তুলনায় এখানকার প্রায় সব ঝুলন্ত সেতু অনেকটা নিচের দিকে। ব্রিজ পার হয়ে দেড় ঘণ্টা খাড়া চড়াই বেয়ে পাহাড়ের উঁচুতে উঠে যেতে হয়। যে জায়গায় পৌঁছলাম, তার নাম আপার সিনুওয়া। এর পরের দেড় ঘণ্টা ধীর চড়াই, অপরূপ শ্যামল রঙের আপার মোদিখোলা উপত্যকার ভেতর দিয়ে ক্রমান্বয়ে উঁচুতে উঠে যাওয়া পথ ধরে চলতে হয়। একটা অংশে অরণ্য বেশ ঘন ও গভীর। ওক আর রডোডেনড্রন তো রয়েছেই; তার সঙ্গে আছে বেত ও বাঁশের ঘন বন। অনেকটা উঁচুতে উঠে তারপর আবার কিছুটা নেমে নদীর তীরে ব্যাম্বু নামের একটা ছোট জায়গায় এলাম। দুপুরের খাবারের জন্য জায়গাটা দুর্দান্ত। এবারের যাত্রায় রাতে ডাল–ভাত অথবা ডিমের ঝোল আর ভাত খেলেও দুপুরে আমি একটা স্যুপ ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, অথবা মোমো খেতে চেষ্টা করি।