১০:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুয়াশা উৎসব শুরু

‘হারাবার আগে পায়ে মাখো শিশির, কুয়াশার মাঠে বাড়ুক প্রাণের ভিড়’- স্লোগানকে সামনে রেখে ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে দুইদিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব-১৪৩০। রোববার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্বিবদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। মশাল প্রজ্বালনের মধ্যদিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এসময় মশালের আলো থেকে হৃদয়ে হৃদয়ে আলো জ্বালানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।

উৎসবকে কেন্দ্র করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সেজে উঠেছে নানা ধরনের স্টল ও ফেস্টুনে। শিশুদের আকর্ষণের জন্য বসেছে নাগরদোলা। মাঠের পাশে সড়কে কোথাও চলছে চিত্র প্রদর্শনী কোথাও চলছে সঙ্গীত কিংবা চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী। সন্ধ্যা নামলে চারিদিকে উজ্জ্বল আলোর প্রদর্শনীতে মোহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

সন্ধ্যায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অভিনেতা তারিক আনাম খান। তিনি বলেন, কুয়াশা উৎসব ভীষণরকমের উত্তেজনাকর ব্যাপার। আমাদের কাছে কুয়াশায় আগুন জ্বালানো নষ্টালজিয়ার মতো কাজ করে। সাংঘাতিক রকম ভালো বিষয়। এই উৎসব আরও বড় হোক। জীর্ণ জড়া সব ঝরে যাক। প্রতীকি মশাল প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে দু:শাসন অন্যায় নীপিড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলুক।

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, কুয়াশা উৎসব সত্যিকার অর্থে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথক ও ভিন্ন মাত্রার উৎসব হিসেবে পরিচিত হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল উদারমনা মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ উৎসবের সূচনা করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো কোনো করপোরেট পুঁজির কাছে তারা নিজেদের বিকিয়ে দেয় না। সমস্ত কিছু নিজের উদ্যোগে তারা করে।

উৎসব প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কুয়াশাতে সবসময় তারা সুআশা তারা দেখে থাকেন। বিচ্ছিন্নতা নয় তার যুথবদ্ধতার শিক্ষা নেয়। আমাদের যে নানা রকমের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য আছে যে সব নিদর্শন আমরা হারাতে বসেছি সেগুলা তারা উৎসবে প্রদর্শন করে। আমাদের প্রশাসন ভবিষ্যতে এ উৎসব যেন আরউ পরিব্যপ্ত হয় সে চেষ্টা করবো।
প্রতীকি অগ্নি প্রজ্বালনে জঙ্গীবাদ, অমানিশাসহ সব ধরনের নেতিবাচকতা দূরে ঠেলে দিয়ে যে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটবে সেখান থেকে আমাদের হৃদয়ে আলো থেকে আলো জালানে উৎসবে প্রত্যয় হোক।
এসময় কুয়াশা উৎসবের আয়োজক পর্ষদের উপদেষ্টা ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জীসহ অন্য শিক্ষক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

ড. মেহেদী উল্লাহ জানান, বাংলার আঞ্চলিক উৎসবগুলোর তাৎপর্যকে ধারণ করেই কুয়াশা উৎসব শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এর সাথে সম্পর্কিত রয়েছে। আশা করছি সবার সার্বিক সহযোগিতায় সুন্দরভাবে পালিত হবে এবারের উৎসব।

আয়োজক সূত্রে জানা যায়, মৈমনসিংহ-গীতিকার শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে উৎসর্গ করা কুয়াশা উৎসব ১৪৩০ এর আয়োজনে প্রথমদিনে ছিল চিত্রকলা প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রাগ সঙ্গীত, যন্ত্র সঙ্গীত, আবৃত্তি, সাহিত্য আলোচনা, রম্য বিতর্ক, নাট্য পরিবেশনা, নৃত্য পরিবেশনা, রস উৎসব, পিঠা পার্বণ ও পালাসহ নানা আয়োজন। উৎসবের দুই দিন গান পরিবেশন করবে ব্যান্ড দল সহজিয়া, মাদল, গঞ্জে ফেরেশতা। এছাড়াও গান পরিবেশন করবে মুয়ীয মাহফুজ ও কফিল আহমেদসহ অনরা। আগামীকাল সোমবার উৎসব শেষ হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুয়াশা উৎসব শুরু

আপডেট সময় : ১১:০০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

‘হারাবার আগে পায়ে মাখো শিশির, কুয়াশার মাঠে বাড়ুক প্রাণের ভিড়’- স্লোগানকে সামনে রেখে ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে দুইদিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব-১৪৩০। রোববার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্বিবদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। মশাল প্রজ্বালনের মধ্যদিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এসময় মশালের আলো থেকে হৃদয়ে হৃদয়ে আলো জ্বালানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।

উৎসবকে কেন্দ্র করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সেজে উঠেছে নানা ধরনের স্টল ও ফেস্টুনে। শিশুদের আকর্ষণের জন্য বসেছে নাগরদোলা। মাঠের পাশে সড়কে কোথাও চলছে চিত্র প্রদর্শনী কোথাও চলছে সঙ্গীত কিংবা চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী। সন্ধ্যা নামলে চারিদিকে উজ্জ্বল আলোর প্রদর্শনীতে মোহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

সন্ধ্যায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অভিনেতা তারিক আনাম খান। তিনি বলেন, কুয়াশা উৎসব ভীষণরকমের উত্তেজনাকর ব্যাপার। আমাদের কাছে কুয়াশায় আগুন জ্বালানো নষ্টালজিয়ার মতো কাজ করে। সাংঘাতিক রকম ভালো বিষয়। এই উৎসব আরও বড় হোক। জীর্ণ জড়া সব ঝরে যাক। প্রতীকি মশাল প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে দু:শাসন অন্যায় নীপিড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলুক।

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, কুয়াশা উৎসব সত্যিকার অর্থে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথক ও ভিন্ন মাত্রার উৎসব হিসেবে পরিচিত হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল উদারমনা মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ উৎসবের সূচনা করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো কোনো করপোরেট পুঁজির কাছে তারা নিজেদের বিকিয়ে দেয় না। সমস্ত কিছু নিজের উদ্যোগে তারা করে।

উৎসব প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কুয়াশাতে সবসময় তারা সুআশা তারা দেখে থাকেন। বিচ্ছিন্নতা নয় তার যুথবদ্ধতার শিক্ষা নেয়। আমাদের যে নানা রকমের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য আছে যে সব নিদর্শন আমরা হারাতে বসেছি সেগুলা তারা উৎসবে প্রদর্শন করে। আমাদের প্রশাসন ভবিষ্যতে এ উৎসব যেন আরউ পরিব্যপ্ত হয় সে চেষ্টা করবো।
প্রতীকি অগ্নি প্রজ্বালনে জঙ্গীবাদ, অমানিশাসহ সব ধরনের নেতিবাচকতা দূরে ঠেলে দিয়ে যে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটবে সেখান থেকে আমাদের হৃদয়ে আলো থেকে আলো জালানে উৎসবে প্রত্যয় হোক।
এসময় কুয়াশা উৎসবের আয়োজক পর্ষদের উপদেষ্টা ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জীসহ অন্য শিক্ষক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

ড. মেহেদী উল্লাহ জানান, বাংলার আঞ্চলিক উৎসবগুলোর তাৎপর্যকে ধারণ করেই কুয়াশা উৎসব শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এর সাথে সম্পর্কিত রয়েছে। আশা করছি সবার সার্বিক সহযোগিতায় সুন্দরভাবে পালিত হবে এবারের উৎসব।

আয়োজক সূত্রে জানা যায়, মৈমনসিংহ-গীতিকার শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে উৎসর্গ করা কুয়াশা উৎসব ১৪৩০ এর আয়োজনে প্রথমদিনে ছিল চিত্রকলা প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রাগ সঙ্গীত, যন্ত্র সঙ্গীত, আবৃত্তি, সাহিত্য আলোচনা, রম্য বিতর্ক, নাট্য পরিবেশনা, নৃত্য পরিবেশনা, রস উৎসব, পিঠা পার্বণ ও পালাসহ নানা আয়োজন। উৎসবের দুই দিন গান পরিবেশন করবে ব্যান্ড দল সহজিয়া, মাদল, গঞ্জে ফেরেশতা। এছাড়াও গান পরিবেশন করবে মুয়ীয মাহফুজ ও কফিল আহমেদসহ অনরা। আগামীকাল সোমবার উৎসব শেষ হবে।