ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত ও রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের বিরুদ্ধে নানা অসঙ্গতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের তদন্তে পৃথক দুটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
ইউজিসির পরিচালক মুহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটিতে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক এম আবু তাহেরকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক এবং ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এম ফজলুর রহমানকে সদস্য এবং ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ আলী খানকে সদস্য-সচিব করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে ইউজিসি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে সংস্থাকে। সংস্থাটি তার তদন্তের অংশ হিসাবে যে কোনও ধরণের নথি পরীক্ষা করতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের অনিয়মের তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তার জেনেরাল সার্ভিস, এস্টেট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালক জাফর আহমদ জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
এর আগে, ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত উপাচার্য ও বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে কথোপকথন সম্বলিত মোট ১৪টি অডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
উপাচার্য ও ইবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একজন চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে কথোপকথন সম্বলিত একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পরে ১৭ ফেব্রুয়ারি। যার প্রেক্ষিতে ইবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
গত ৮ মার্চ ফারাহ জেবিন নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা একটি অডিও কথোপকথনে ভিসিকে ফোনে ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায় যে তিনি ওই ব্যক্তির আত্মীয়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের নিয়োগ বোর্ডে জায়গা করে দিবেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ফাঁস হওয়া অডিও কথোপকথনের ব্যাখ্যা চেয়ে উপাচার্যের কাছে লিখিত আবেদন করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষক জোট শাপলা ফোরাম।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেছে শাপলা ফোরাম। প্রগতিশীল জোটের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পরীক্ষার তথ্য কারও কাছে শেয়ার করার অধিকার উপাচার্যের নেই।’ তারা বলেন, ‘সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।’
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক এম আবু তাহের বলেন, ‘শিগগিরই তারা ক্যাম্পাসে গিয়ে ঘটনা তদন্ত করবেন। ভিসির বিরুদ্ধে আনীত কোনো অনিয়ম প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোন নিয়োগসংক্রন্ত অসঙ্গতি বা অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ নেই। আমার বিরুদ্ধে এসব কথা ভিত্তিহীন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম বলেন, ‘দুর্নীতি এটা আমার সাথে যায়না। আমি তো বরং আমি বরং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছি যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি করছে সেগুলোর ইমিডিয়েট তদন্ত করে ক্লিয়ার করা হোক। ‘
তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা সামনে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি, সেগুলো ব্যাহত করতে নানা ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এগুলো করা হচ্ছে।’


























