বিএনপি যতোবার নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছে বাংলাদেশের মানুষ তাতে সাড়া দেয়নি। মানুষ কিন্তু তার ভোটটা চুরি করলে সে ঠিকই ধরে নেয়। দৃষ্টান্ত হচ্ছে ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারীর নির্বাচন। খালেদা জিয়া নির্বাচন করেছিলো ক্ষমতায় থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারীতে ৯৬ সালে। সেখানে কিন্তু সারা দেশে সমস্ত প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী সবাইকে নামিয়ে দিয়ে তার নির্বাচন তিনি অনুষ্ঠিত করেন, কিন্তু সেখানে ভোটার যায়নি। তারপরেও সিল মেরে বাক্স ভরে ভোট নেয়ার পরেও মাত্র ২১ পারসেন্ট ভোট হয়েছিলো। জনগন কিন্তু মেনে নেয়নি তার ভোট চুরি। যে কারণে আন্দোলন হয়। তিনি আজ রোববার কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত মত বিনিময় সভায় বক্তব্যদান কালে একথা বলেন।
আজ রোববার (১৪ জানুয়ারি ) টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার জনসভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন হলো। ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়। ভোট চুরির অপরাধে নাকে খত দিয়ে খালেদা জিয়ার বিদায়। তারা এখন আন্দোলন করে গণতন্ত্রের জন্য। যারা গণতন্ত্রে “গ” ও বোঝে না। তারা গণতন্ত্র বানান ও করতে পারবে না। তাদের আন্দোলন হলো মানুষ পুড়িয়ে মারা। তারা জানে জ্বালাও পোড়াও। জীবন্ত মানুষ গুলোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারা। বাসে আগুন, গাড়ীতে আগুন, রেলে আগুন, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে যা করেছে এখন আবার তা শুরু করেছে। এই নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলন করতে গিয়ে ট্রেনে আগুন দিয়ে মা সন্তানকে পুড়েয়ে মেরেছে। এই দৃশ্য কোন মানুষ সহ্য করতে পারে না।
তিনি বলেন, যে কারণে তারা যতই চিৎকার করুক তাদের কথায় জনগন সাড়া দেয়নি। যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করেছে তাদের কোন ছাড় নাই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো। যারা এধরনের কাজগুলো করেছে তাদের খুঁজে খুঁজে বের করে এনে তাদের বিচার করবো। ইতিমধ্যে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে, আর যারা হুমুক দাতা যারা জ্বাোও পোড়াও করার জন্য হুকুম দিয়েছে তাদেরকেও আমরা গ্রেফতার করছি। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ যেন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা বা এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে সাহস না পায়।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন ষড়যন্ত্র চক্রান্ত কখনো শেষ হয় না।এই ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কোটালীপাড়াবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, শক্ত একটা ঘাঁটি আছে বলেই আমি যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে পারি। সেই শক্তি আপনারা দিযেছেন। টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষ আমার বড় শক্তি, বাংলাদেশের মানুষ আমার বড় শক্তি। আগামীতেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনা ভাইরাসের জিনিসপত্রে দাম বেড়েছে। আবার হামলা শুরু হয়েছে। এজন্য সামনে আরো দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের দেশের মাঠি উর্বর। আমাদের মানুষ আছে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। সাথে সাথে হাস-মুরগী, গরু-ছাগল পালন করতে হবে। আমাদের খাদ্য আমাদের উৎপাদন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের কোন উন্নতি হয়নি। বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে যখন আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে। ৯৬ সালে প্রথম সরকার গঠন করে মানুষের খাদ্যের চাহিদা পুরণ করি। স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করি। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সহ বিভিন্ন উন্নয়ন করি। এরপর ২০০১ আসতে পারিনি। সেটাও একটা চক্রান্ত ছিলো। তখন বিএনপির দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, মানিলন্ডারিং, গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলার কারণে জনগন তাদের উপর বিতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে। তাদের দুঃশাসনের কারণে ইমারজেন্সি আসে। ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সবাই আমরা এক সাথে কাজ করে এই বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত, স্মার্ট বাংলাদেশ করবো ইনশাল্লাহ। ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগনের জয় হয়েছে।এ জয় গণতন্ত্রের জয়, এ জয় বাংলাদেশের জনগনের জয়। কাজেই বাংলাদেশের জনগনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।























