উত্তরা থেকে মতিঝিল পুরোদমে মেট্রো রেল চালু হওয়ার পর থেকে মেট্রো রেলের চাহিদা বেড়েছে নগরবাসীর দৈনিক জীবনে। মেট্রো স্টেশন ও কোচগুলোতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ের সঙ্গে বাড়ছে নগরবাসীর প্রত্যাশাও। এমআরটি লাইন ৬ পুরোপুরি চালু হওয়ার পর থেকে রের্কডসংখ্যক এমআরটি পাস বিক্রি বেড়েছে। গত ১১ দিনে এমআরটি পাস বিক্রি হয়েছে ৫৯ হাজার। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার ভোগান্তি এড়াতেই ১০ বছরমেয়াদি এই পাসের চাহিদা বাড়ছে বলে জানা গেছে। নগরবাসীর দাবি এখন মেট্রো রেলের সংখ্যা ও সময় বাড়ানো হোক দ্রুত। মেট্রো রেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিএমটিসিএল বলেছে, চাহিদার কথা মাথায় রেখে রেলসংখ্যা কমানো হবে দুই রেলের মধ্যবর্তী সময়, আর রাত ১১টা পর্যন্ত রেল চালু রাখার চিন্তা করছে তারাও, পর্যায়ক্রমে মিলবে সব সেবা। ডিএমটিসিএল সূত্র বলেছে, গত ২০ জানুয়ারি এমআরটি-৬-এর উত্তরা থেকে মতিঝিল সকাল থেকে রাত মেট্রোসেবা শুরু হওয়ার পর গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১১ দিনে এমআরটি পাস বিক্রি হয়েছে ৫৮ হাজার ৯০০টি। যেখানে ডিসেম্বর মাসে পাস বিক্রি হয়েছিল ৭৫ হাজার। আর নভেম্বরে বিক্রি হয়েছিল ২৯ হাজার। আর বর্তমানে এখন যে ছয়টি কোচ থাকে, তার একটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত। প্রতিটি কোচে উঠতে পারে সর্বোচ্চ ৩৯০ জন। তবে দুই দিকে ইঞ্জিন থাকায় দুটিতে যাত্রী ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩৭৪ জন। এই হিসাবে একটি ট্রেনে একসঙ্গে উঠতে পারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ জনের মতো। হঠাৎ এমআরটি পাসের চাহিদা বাড়ার কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, এমআরটি পাস থাকলে টিকিট সংগ্রহের বাড়তি ঝামেলা থাকে না। বিশেষ করে অফিস আওয়ারে যাত্রীর চাপ বাড়ায় টিকিটি সংগ্রহের লাইন হচ্ছে দীর্ঘ। কোনো কোনো সময় ১৫-২০ মিনিটি টিকিটি সংগ্রহের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়া পাস ব্যবহারের ১০ শতাংশ ভাড়া কম ও এক কার্ডে ১০ বছর মেয়াদ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এ কারণে ভোগান্তি এড়াতে এমআরটি পাসের দিকে ঝুঁকছেন যাত্রীরা।
তবে মেট্রো রেলের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরবাসীর প্রত্যাশাও বাড়ছে। নগরবাসীর এখন অপেক্ষা ২০৩০ সালের মধ্যে মেট্রোর বাকি লাইনগুলো চালু হোক। নিয়মিত যাতায়াতকারীরা বলছেন, অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছলেও অফিস আওয়ারে পা ফেলার জায়গা থাকে না কোচগুলোতে। সেক্ষেত্রে ১০ মিনিটের জায়াগায় দুটি ট্রেনের মধ্যবর্তী সময় ব্যবধান আরো কমিয়ে আনার দরকার, সেই সঙ্গে কোচ বাড়ালেও যাত্রীরা স্বস্তিতে গন্তব্য যেতে পারবেন। আর ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রীদের সেবার মান বাড়ানোর ও চাহিদার বিষয় মাথায় রেখে কাজ করছেন তারা। কোচসংখ্যা ৬ থেকে বাড়িয়ে ৮ ও ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি মধ্যবর্তী সময় ব্যবধান কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। দুটি কোচ বাড়ানো হলো যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে তিন হাজার। তবে সব কিছু একসঙ্গে না হলেও পর্যাক্রমে বাড়ানো হবে সেবা। আপতত তারা কোচ ও সময় কামনোর চেষ্টা করছেন। সে ক্ষেত্রেও ২-৩ মাস সময় লাগতে পারে। কয়েক মাসের মধ্যেই পিক আওয়ারে ট্রেন চলবে ৫ মিনিট অন্তর। সেই সঙ্গে রাত পৌনে ৯টার বদলে ১১টা পর্যন্ত চালানোর প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) ইফতিখার হোসেন বলেন, প্রকল্পের প্রস্তাবনায় যেসব লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল তাতে যেমন প্রতি ৫ মিনিট পর পর ট্রেন ছাড়া, আটটি কোচের সমন্বয়ে একেকটি ট্রেনসেট করা এবং রাত ১১টা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন, তার সবই করা হবে। কোচের সংখ্যা বাড়ানো ছাড়া অন্য দুটি লক্ষ্য পূরণে কয়েক মাস সময় লাগবে। বর্তমানে ছয় কোচের যে সেট পরিচালনা করা হচ্ছে তাতে দুটি কোচ যুক্ত করে আট কোচের সেটে পরিচালনা করা হবে। এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
স/ম


























