০৪:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় সীমান্তে রোহিঙ্গারা

 

👁 মিয়ানমারের মর্টাশেলে বাংলাদেশে নিহত ২

👁 বিজিপি সদস্যরা ফাঁড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন বাংলাদেশে

 

বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের আরাকান ও রাখাইন এলাকায় উত্তেজনা থামছে না। বিদ্রোহী আরকান আর্মিকে প্রতিহত করতে দেশটির সামরিক জান্তা ও বিজিপি যৌথভাবে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গতকাল সোমবারও থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। চলমান অঘোষিত যুদ্ধে হুমকির মুখে রয়েছেন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা, চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন তারা। ঘুমধুম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও তমব্রুতে সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। গত রবি ও সোমবার আরাকান আর্মির একচ্ছত্র হামলায় দাঁড়াতে না পেরে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজেপি) ৯৫ জন সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত থাকায় বিজিবি উদ্যোগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে কক্সবাজারসহ আশেপাশের হাসপাতালে। এর মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন নির্ভরযোগ্য সূত্র। গতকাল মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইনে হেলিকপ্টার নিয়ে টহল দিতে দেখার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৪০০ জন রোহিঙ্গা চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজন বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম। এর আগে গতকাল বিকাল ২টার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে দুজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী, অন্যজন রোহিঙ্গা পুরুষ। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছে এক
শিশুও। নিহত নারী জলপাইতলী গ্রামের বাদশা মিয়ার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম (৪৫)। আর নিহত নবী হোসেন (৭০) উখিয়া কুতুপালং ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। নিহত শিশুটি হোসনে আরা বেগমের নাতনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ ও ঘুমধুম ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া। তারা জানান, নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোহিঙ্গা পুরুষের মরদেহ ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন জানান, হোসনে আরা বেগম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড জলপাইতলীর এলাকার বাসিন্দা। দুপুরে বাড়ির পাশে ধান ক্ষেতে হোসনে আরা ও এক রোহিঙ্গা শ্রমিক কাজ করছিলেন। কাজ শেষে ক্ষেত সংলগ্ন বাড়িতে দুপুরের খাবার খেতে বসেন তারা। এ সময় মিয়ানমারের ছোড়া মর্টারশেল এসে তাদের শরীরে আঘাত হানে। এতে ঘটনাস্থলেই রোহিঙ্গা শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তিনি শ্রমিক হিসেবে ক্ষেতে কাজ করছিলেন। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় হোসনে আরাকে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
বিদ্রোহী আরাকান আর্মি গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তীব্র হামলা অব্যাহত রেখেছে। এ অবস্থায় সামরিক জান্তা ও বিজিপি সদস্যরা তাদের প্রতিহত করতে অভিযান শুরু করায় পুরো রাখাইন ও আরাকান রাজ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পালংখালীর ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। আর সোমবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে ২/৩টি গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) দুই সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়ছেন। তারা হলেন- রি লি থাইন (২২) এবং জা নি মং (৩০)। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, কক্সবাজার শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে আহত অবস্থায় বিদ্রোহী আরাকান আর্মির ছয় সদস্যকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা রাখাইন রাজ্যের বুচিডং, টাংগো এবং ম্রাউ এলাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে দুজনের বয়স ২৪, দুজন ২৩, একজন ২০ এবং বাকি একজনের বয়স ২২ বছর। তারা গভীর রাত থেকে ভোরের মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। অন্যদিকে গতকালও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ২৭ জন সদস্য পালিয়ে আশ্রয় বাংলাদেশে নিয়েছেন। তারা গত রোববার রাত ১২টার পর থেকে গতকাল সকাল পৌনে ৮টার মধ্যে পালিয়ে আসেন। এ নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ জনে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, গত রোববার সারাদিন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি ও বিজিপির মধ্যে গোলাগুলি অব্যাহত ছিল। সংঘর্ষের জেরে রোববার সকাল থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত বিজিপির ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ তমব্রু সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছের। পরে তারা বিজিবির কাছে আশ্রয় চাইলে, তাদেরকে নিরস্ত্র করে আমাদের হেফাজতে নেওয়া হয়। গত রোববার সন্ধ্যার পর থেকে রাত ২টা পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ধামনখালী সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরের ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি ও বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় সাময়িক সময়ের জন্য সীমান্তবর্তী ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে জনগণের যাতায়াত সীমিত করার পাশাপাশি ঘুমধুম-তমব্রু এলাকার বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে জনপ্রতিনিধিদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

 

 

স/ম

জনপ্রিয় সংবাদ

শহীদ জিয়ার কবরের পাশে খালেদা জিয়ার দাফনের প্রস্তুতি

অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় সীমান্তে রোহিঙ্গারা

আপডেট সময় : ১২:০০:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

 

👁 মিয়ানমারের মর্টাশেলে বাংলাদেশে নিহত ২

👁 বিজিপি সদস্যরা ফাঁড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন বাংলাদেশে

 

বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের আরাকান ও রাখাইন এলাকায় উত্তেজনা থামছে না। বিদ্রোহী আরকান আর্মিকে প্রতিহত করতে দেশটির সামরিক জান্তা ও বিজিপি যৌথভাবে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গতকাল সোমবারও থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। চলমান অঘোষিত যুদ্ধে হুমকির মুখে রয়েছেন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা, চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন তারা। ঘুমধুম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও তমব্রুতে সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। গত রবি ও সোমবার আরাকান আর্মির একচ্ছত্র হামলায় দাঁড়াতে না পেরে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজেপি) ৯৫ জন সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত থাকায় বিজিবি উদ্যোগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে কক্সবাজারসহ আশেপাশের হাসপাতালে। এর মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন নির্ভরযোগ্য সূত্র। গতকাল মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইনে হেলিকপ্টার নিয়ে টহল দিতে দেখার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৪০০ জন রোহিঙ্গা চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজন বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম। এর আগে গতকাল বিকাল ২টার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে দুজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী, অন্যজন রোহিঙ্গা পুরুষ। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছে এক
শিশুও। নিহত নারী জলপাইতলী গ্রামের বাদশা মিয়ার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম (৪৫)। আর নিহত নবী হোসেন (৭০) উখিয়া কুতুপালং ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। নিহত শিশুটি হোসনে আরা বেগমের নাতনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ ও ঘুমধুম ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া। তারা জানান, নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোহিঙ্গা পুরুষের মরদেহ ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন জানান, হোসনে আরা বেগম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড জলপাইতলীর এলাকার বাসিন্দা। দুপুরে বাড়ির পাশে ধান ক্ষেতে হোসনে আরা ও এক রোহিঙ্গা শ্রমিক কাজ করছিলেন। কাজ শেষে ক্ষেত সংলগ্ন বাড়িতে দুপুরের খাবার খেতে বসেন তারা। এ সময় মিয়ানমারের ছোড়া মর্টারশেল এসে তাদের শরীরে আঘাত হানে। এতে ঘটনাস্থলেই রোহিঙ্গা শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তিনি শ্রমিক হিসেবে ক্ষেতে কাজ করছিলেন। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় হোসনে আরাকে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
বিদ্রোহী আরাকান আর্মি গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তীব্র হামলা অব্যাহত রেখেছে। এ অবস্থায় সামরিক জান্তা ও বিজিপি সদস্যরা তাদের প্রতিহত করতে অভিযান শুরু করায় পুরো রাখাইন ও আরাকান রাজ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পালংখালীর ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। আর সোমবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে ২/৩টি গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) দুই সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়ছেন। তারা হলেন- রি লি থাইন (২২) এবং জা নি মং (৩০)। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, কক্সবাজার শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে আহত অবস্থায় বিদ্রোহী আরাকান আর্মির ছয় সদস্যকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা রাখাইন রাজ্যের বুচিডং, টাংগো এবং ম্রাউ এলাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে দুজনের বয়স ২৪, দুজন ২৩, একজন ২০ এবং বাকি একজনের বয়স ২২ বছর। তারা গভীর রাত থেকে ভোরের মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। অন্যদিকে গতকালও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ২৭ জন সদস্য পালিয়ে আশ্রয় বাংলাদেশে নিয়েছেন। তারা গত রোববার রাত ১২টার পর থেকে গতকাল সকাল পৌনে ৮টার মধ্যে পালিয়ে আসেন। এ নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ জনে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, গত রোববার সারাদিন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি ও বিজিপির মধ্যে গোলাগুলি অব্যাহত ছিল। সংঘর্ষের জেরে রোববার সকাল থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত বিজিপির ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ তমব্রু সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছের। পরে তারা বিজিবির কাছে আশ্রয় চাইলে, তাদেরকে নিরস্ত্র করে আমাদের হেফাজতে নেওয়া হয়। গত রোববার সন্ধ্যার পর থেকে রাত ২টা পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ধামনখালী সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরের ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি ও বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় সাময়িক সময়ের জন্য সীমান্তবর্তী ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে জনগণের যাতায়াত সীমিত করার পাশাপাশি ঘুমধুম-তমব্রু এলাকার বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে জনপ্রতিনিধিদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

 

 

স/ম