সিরো ইমোবিলের একমাত্র গোলে গত বুধবার বায়ার্ন মিউনিখকে শেষ ষোলর প্রথম লেগে হারিয়েছে ল্যাজিও। তাতে দীর্ঘ ২৩ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন টিকিয়ে রেখেছে ইতালিয়ান ক্লাবটি। সর্বশেষ ২০০০ সালে সর্বশেষ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল ল্যাজিও। কিন্তু শেষ আটে ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়। যদিও আগামী মাসে বেভারিয়ান্সদের বিদায় করতে হলে এখনো ল্যাজিওকে কঠিন পথই পাড়ি দিতে হবে।
রোমের এস্তাদিও অলিম্পিকোতে অনুষ্ঠিত ম্যাচের ৬৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি করেন ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড ইমোবিল। এই পরাজয়ে বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়নদের ওপর চাপ আরো বাড়ল। নিজেদের কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বাজে একটি মৌসুম শেষ করার দ্বারপ্রান্তে বায়ার্ন।
ফরাসি ডিফেন্ডার ডায়ট উপামেকানোর বিরুদ্ধে বাজেভাবে ট্যাকেলের কারণে গুস্তাভ ইসাকেন পেনাল্টি আদায় করে নেন। এই ফাউলে উপামেকানো লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। যে কারণে শেষ ২০ মিনিট বায়ার্নকে একজন কম নিয়েই খেলতে হয়েছে।
সিরি-এ লিগে আগের ম্যাচে কালিয়ারির বিপক্ষে ল্যাজিওর ৩-১ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে গোল করে ইমোবিল ইতালিয়ান ঘরোয়া আসরে ২০০তম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। তার গোলেই ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় এক ম্যাচ জয় করে ল্যাজিও ইউরোপীয়ান সর্বোচ্চ ক্লাব আসরে এখন শেষ আটের স্বপ্নে বিভোর।
ম্যাচ শেষে সিরো ইমোবিল বলেছেন, ‘আমরা এই ম্যাচটির জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। আত্মবিশ^াস ছিল বায়ার্নকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলতে পারব। যদিও আজ আমরা মাত্র ১০ শতাংশ সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু খেলোয়াড়রা নিজেদের শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ঘরের মাঠের সমর্থকদের একটি ভালো রাত উপহার দিতে চেয়েছিলাম। মনে করি লক্ষ্য পূরণে আমরা সফল।’
কাল অবশ্য বায়ার্নের হতাশাজনক পারফরমেন্সে সেই ধার মোটেই দেখা যায়নি। একটি শটও তারা টার্গেটে নিতে পারেনি। কোচ থমাস টাচেলও দলকে পুনরুজ্জীবিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বুন্দেসলিগা টেবিলের শীর্ষে থাকা বায়ার লেভারকুজেনের কাছে আগের ম্যাচে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে জার্মান শিরোপা লড়াইয়ে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়েছে বায়ার্ন। তারপর টাচেল বলেছেন দলের ভবিষ্যত নিয়ে তিনি মোটেই চিন্তিত নন। কিন্তু ইমোবিল সেই স্বপ্নেও শঙ্কা তৈরি করেছেন।
টাচেল বলেন, ‘প্রথমার্ধে আমরা ভালো খেলেছি। ভালো দল হিসেবেই আমরা মাঠে ছিলাম। মোট কথা ম্যাচের পুরো আধিপত্য আমাদের কাছেই ছিল। গোলের ভালো সুযোগও তৈরি করেছি। কিন্তু হঠাৎ করে ছন্দপতন হয়। দ্বিতীয়ার্ধে যে কারণে গোল হজম করতে হয়েছে। এর কারণ আমার জানা নেই। এই পারফরমেন্সে আমাদের পরাজয় সময়ের ব্যপার ছিল।’
তারকা স্ট্রাইকার হ্যারি কেন স্বীকার করেছেন বায়ার্ন সত্যিকার অর্থেই একটি কঠিন সপ্তাহ পার করেছে, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের অবশ্যই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। আশা করছি এর থেকে ঘুড়ে দাঁড়াতে পারব। সামনে এখনো বড় কিছু ম্যাচ বাকি। বায়ার্ন কখনো ছেড়ে কথা বলে না, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যায়। এখন শুধুমাত্র একটি ভালো ম্যাচ প্রয়োজন, যাতে পুরো দল আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়।’
ম্যাচে প্রায় বেশিরভাগ সময়ই বায়ার্ন নিজেদের এগিয়ে রেখেছিল। যদিও সুস্পষ্ট কোনো সুযোগ তারা তৈরি করতে পারেনি। জামাল মুসিয়ালার শট বারের উপর দিয়ে চলে গেলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি সফরকারীদের। পোস্টের খুব কাছে থেকে হ্যারিকেন গোল করতে ব্যর্থ হন। ৩২ মিনিটে লেরয় সানের শক্তিশালী ফ্রি-কিকও অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়।
বিরতির পরপরই গুস্তাভ ইসাকেনকে রুখে দিয়ে ম্যানুয়েল নয়্যান বায়ার্নকে রক্ষা করেছেন। ধীরে ধীরে বলের পজিশন হারানো বায়ার্নের উপর হঠাৎ করেই চেপে বসে ল্যাজিও। তারই ধারাবাহিকতায় ইসাকেনের আদায় করা পেনাল্টি থেকে ইমোবিলে কোনো ভুল করেননি। মৌসুমে এটি তার ২০তম গোল। এক গোলে পিছিয়ে পড়ে এমনিতেই বায়ার্ন আগোছালো হয়ে গিয়েছিল। তার উপর একজন কম নিয়ে আর সেই গোল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।
স/মিফা


























