ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মরচী গ্রামের ফজলু মিয়া তার জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে নানা সময় করেছেন নানান কাজ। নিজ গ্রামেই অন্যের পতিত জমিতে চাষাবাদের মাধ্যমে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। ফলে চাষে সফল মানুষ হয়ে উঠছেন ফজলু। তার সফলতার সাথে কাজের দুয়ার খুলেছে অন্তত ১০ থেকে ১২জনের। অভাব অনটনের দিন পেছনে ফেলে ফজলু মিয়া এখন উন্নতির সিঁড়ি বেড়ে উঠতে শুরু করেছেন।
সরেজমিন উপজেলার মরচী গ্রামে গিয়ে জানা যায়, ফজলু মিয়া এ গ্রামেরই ছেলে তার বাবা জয়নাল আবেদীন একজন দরিদ্র কৃষক মানুষ
ছিলেন। পরিবার থেকে আর্থিক কোনো সাপোর্ট না পেয়ে জীবিকার সন্ধানে কাজ করেছে এখানে সেখানে। কোনো ভাবেই নিজেকে যেনো তিনি সেট করতে পারছিলেন না। পরে কৃষি অফিসের লোকজনের কাছ থেকে কৃষি চাষাবাদ করার বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করেন। উপযুক্ত পরামর্শের মাধ্যমে গড়ে তোলেন বিভিন্ন সবজির আবাদসহ কৃষি খামার।
চলতি মৌসুমে তিনি সিমের আবাদ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। ফজলু মিয়ার সাথে সরাসরি কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে তার জীবন সংগ্রামে দুঃখ কষ্ধেসঢ়;র কাহিনী। ফজলু মিয়া বলেন, এক সময় কর্মের সন্ধান করতে না পেরে তিনি দিন মজুরী করে সংসার চালিয়েছেন।
বহু দুঃখ কষ্টের মাঝে কেটেছে পিছনের দিনগুলি তার। পরে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষি আবাদ করার উপযুক্ত পরামর্শে পতিত জমি ভাড়া নিয়ে তাতে কৃষি আবাদ করেন তিনি। তাছাড়া চলতি মৌসুমে তিনি সিমের চাষ করে প্রচুর ফলন পেয়েছেন। বীজ, সার, কীটনাশক, মাচা দেওয়া, নেট বাধা ও বেড়া দেয়াতে তার প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো খরচ হয়। এ যাবত তিনি সাড়ে তিন লাখ টাকার সিম বিক্রি করেছেন। আরও যে পরিমাণ গাছে সিম রয়েছে তাতে বিক্রি হবে আরও প্রায় ২ লাখ টাকা। তিনি আরও বলেন, এ যেনো সিনেমার মত লাগছে তার। নায়ক যেমনি কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে নিজের সফলতা পায়, তেমনি অল্প দিনেই এই সবজি চাষ করে আমার ব্যাপক সলফতা ধরা দিয়েছে।
কৃষক ফজলু মিয়া জানান, সিমের পাশাপাশি কলা, বেগুন টমেটো কপিসহ বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ করেছেন। তাছাড়া পার্শ্ব চামিয়াদী,
কৈয়াদী, কাতলামারী, পাঁচগাঁও গ্রামগুলোতেও সিমসহ ব্যাপক কৃষি আবাদ হচ্ছে।
পাইকারী ক্রেতা শাহজাহান মিয়া বলেন, বাজারে সিমের দাম রয়েছে। বেচাকেনাও ভাল। বাজারে দাম থাকলে কৃষকেরাও দাম পাবে। তিনি আরও বলেন, ভালুকা উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলে দেশীয় বংশি জাতের সিমের আবাদ হয়। বাজারে এ সীমের চাহিদা বেশি। দামও ভাল পাওয়া যায়। এ বছর সিমের চাষ করে সবাই লাভবান হয়েছে। ভালুকার সিম স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার জেসমিন জাহান সবুজ বাংলাকে বলেন, বিশেষ করে উপজেলার মল্লিকবাড়ী, ডাকাতিয়া ও উথুরা ইউনিয়নের আবাদী ও অনাবাদী প্রচুর জমিতে এ মৌসুমে সিমের চাষাবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে সিমের ফলনও বেশ ভালো। ভালো ফলন পেয়ে কৃষকেরাও খুশি। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সবরকম পরামর্শ দিয়ে আসছি। আগামীতে যাতে আরো সিমসহ অন্যান্য উচ্চ ফলনশীল সবজির চাষ বাড়ানো যায় সেলক্ষে আমরা কাজ করছি।
স/মিফা


























