শেষ সময়ে ক্রেতা-দর্শনার্থীর চাপ বেড়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৮তম আসরে। মেলায় প্রতিবারের মতো এবারও মিনিপার্কের ব্যবস্থা করেছে মেলা কর্তৃপক্ষ। মেলায় আগত শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের চিত্র-বিনোদনের জন্য এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্যবারের মতো এবারও দেশি-বিদেশি অসংখ্য স্টল-প্যাভিলিয়নে নানা পণ্য শোভা পেয়েছে। যেসব পণ্যে রয়েছে বিভিন্ন মূল্যছাড়। এর মধ্যে মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা বেশি ভিড় করছেন তার্কিশ প্যাভিলিয়নে। তবে এই প্যাভিলিয়নটিতে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি দেখা গেছে।
এদিকে শেষ সময়ে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীরা যতই সমাগম করছে মিনিপার্কটিতে ততোই ভিড় হচ্ছে। মেলায় আগত সব বয়সি মানুষ মিনিপার্কে মেতেছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় মিনিপার্কে সরেজমিনে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে।
দুই বাচ্চাকে নিয়ে ঢাকার মহাখালী থেকে আসা আরিসুল ইসলাম নামের এক দর্শনার্থী বলেন, সারা দিন ঘোরাঘুরি শেষে অনেকটাই হাঁপিয়ে গিয়েছি। তাই ক্লান্তি দূর করতে বাচ্চাদের নিয়ে মিনিপার্কে চলে আসলাম। মিনিপার্কের বিভিন্ন রাইড দেখে আমাদের ক্লান্তি অনেকটাই চলে গেছে। মিনিপার্কের প্রতিটি রাইড অনেক চমৎকার। তবে মেলায় যে পরিমাণ মানুষের সমাগম ঘটে সেজন্য আরো কয়েকটি রাইড বাড়ানো হলে ভালো হয় বলে আমি মনে করি।
মিনিপার্কের দায়িত্বে থাকা সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, অন্যবারের মতো এবারও মেলায় আগত ক্রেতা দর্শনার্থীদের চিত্র-বিনোদনের জন্য মিনিপার্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবারের মিনিপার্কে জাম্পিং, সুইমিং, সুপার বক্স, ইলেকট্রনিক বোট, ড্রাগন, হর্স রাইডিং, মিনি ট্রেন, ভূতের বাড়ি রাইড রয়েছে। প্রতিটি রাইড ১০০ টাকা করে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সকল বয়সি মানুষ এই মিনিপার্কে এসে আনন্দ পাচ্ছেন।
জানা যায়, মেলা উপলক্ষে তার্কিশ প্যাভিলিয়নের বিভিন্ন পণ্যে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় চলছে। এগুলোর মধ্যে ছাড় দিয়ে ওয়াল হ্যাঙ্গিং ৩০০ টাকা থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা, সিরামিক পণ্য ৫০০ টাকা থেকে ৯ হাজার টাকা, ঝাড়বাতি ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ লাখ টাকা, কপারের তৈরি পণ্য ৭০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা, লেদারের ব্যাগ ৫০০ টাকা থেকে ৬ হাজার ৫০০ টাকা, ক্রিস্টাল গ্লাসের সার্ভিসিং বল ২ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা, তুর্কি মেলামাইনের পণ্য ৪০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ নাসির হোসেন বলেন, আমাদের প্যাভিলিয়নের প্রত্যেকটি পণ্য তুরস্কের, তাই দাম একটু বেশি। তবে আমরা মেলা উপলক্ষে প্রত্যেকটি পণ্যে কমবেশি ছাড় দিচ্ছি। আশা করছি, শেষ দিন পর্যন্ত ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাব।
এবারের বাণিজ্যমেলায় দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইরান, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ অংশ নিয়েছে। মেলায় এসব দেশের বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারি ওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে। পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রফতানির বড় বাজার খোঁজার লক্ষ্য রয়েছে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণার্থে মেলাপ্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র্যাব নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া সার্ভিস গেট ও ভিআইপি গেটের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রাইভেট সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা অগ্রাধিকার বিবেচনায় মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান, প্রবেশপথ, পার্কিং এরিয়া এবং সংশ্লিষ্ট সব এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মেলার প্রবেশপথে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইভাবে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে মেলায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে ফায়ার ব্রিগেড।
স/মিফা

























