⦿ মহাসচিবসহ কারামুক্ত শীর্ষ নেতারা সক্রিয় হবেন স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে
⦿ চলবে দল পুনর্গঠনের কাজও
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিভিন্ন আন্দোলনকে ঘিরে গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের অনেকেই জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন। এরই মধ্যে মুক্তি পেয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ অনেক নেতা। তবে জেলখানায় বেশসংখ্যক নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে দলটির। সব মিলিয়ে কারাবন্দি ও কারামুক্ত নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নিহতদের পরিবারে চরম হতাশা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্টদের পাশে সহমর্মিতা জানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গতকালও কারাম্ক্তু কয়েকজন নেতা এবং নিহতদের পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের হতাশা কাটাতেই এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তারা বলেন, বিএনপির প্রধান যে টার্গেট- সরকারের পতন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের দাবি আদায়ে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এছাড়া দলের প্রয়োজনীয় পুনর্গঠন কাজও চলবে।
এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কারা মুক্তির এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো দলীয় কাজে তারা সক্রিয় হননি। সাড়ে তিন মাস কারাবন্দিত্বের কারণে নানা অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল চেকাপ শেষেই তারা ফের সক্রিয় হবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বর্তমানে বাসায় থেকেই বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকদের মাধ্যমে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান সবুজ বাংলাকে বলেন, দলের মহাসচিবসহ শীর্ষ তিন নেতা আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। তাদের বয়সও হয়েছে। দীর্ঘদিন জেলে থাকায় তাদের অসুস্থতা আরো বেড়েছে। তাই কারামুক্তির পর স্বাভাবিকভাবেই তাদের মেডিক্যাল চেকআপের প্রয়োজন।
মেডিক্যাল চেকআপ শেষেই তারা দলে সক্রিয় হবেন। প্রয়োজনে বিদেশেও তাদের চিকিৎসা নেওয়া লাগতে পারে বলে উল্লেখ করেন মোহাম্মদ শাহজাহান।
তিনি আরো বলেন, জেলে যেসব নেতাকর্মী মারা গেছেন, তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে শুক্রবার চট্টগ্রাম ও ঢাকায় কয়েকজনের বাসায় যান নেতারা।
দলের পুনর্গঠন কাজ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, আন্দোলনের টার্গেট থেকে আমরা একচুলও সরে যায়নি। তবে নেতাকর্মীদের হতাশ করতে বিভিন্ন মহল থেকে নানা অপচেষ্টা চলছে। কারণ যে দলের নেতাকর্মীরা ৭ জানুয়ারির ভোটে সাড়া দেয়নি, তারা যে কোনো সময় রাস্তায় নামবে। এসব নেতাকর্মীরা যাতে ফের রাস্তায় না নামে সেজন্য সরকার মহল থেকে নানা তৎপরতা চালানো হচ্ছে। কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্র করে আমাদের আন্দোলনের পথ থেকে সরানো যাবে না। মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতারা কারামুক্ত হয়ে সেই ঘোষণাই দিয়েছেন।
এদিকে গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে ‘সরকার পরিবর্তন অবশ্যই হবে’ এমন প্রত্যাশা করছেন নজরুল ইসলাম খান। শুক্রবার সকালে রাজধানীর গোপীবাগে কারাবন্দি অবস্থায় নিহত ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের কাছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবর্তন চাই এবং বিশ্বাস করি, এই পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী, অবশ্যই হবে ইনশাআল্লাহ।
সরকার পরিবর্তনের একদফার যুগপৎ আন্দোলন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা যুগপৎ আন্দোলন করছি, সেই যুগপৎ আন্দোলন এখনো চলছে।
নজরুল ইসলাম খান ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড অভিহিত করে এহেন ঘটনা নিন্দা ও বিচারের দাবি জানান। তিনি জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে তারা ব্লুবুলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। বিএনপি তার পরিবারের পাশে থাকবে বলেও জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
একই দিন সদ্য কারামুক্ত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে দেখতে যান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। এ সময় তিনি আলালের শারীরিক অবস্থা ও পরিবারের খোঁজ নেন। এর আগে বৃহস্পতিবার আলালের বাসায় যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এ দিন ফোন করে আলালের খোঁজ নেন সদ্য কারামুক্ত অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, গত তিন মাসে কারাগারে নির্যাতনে বিএনপির ১৩ নেতার মৃত্যু হয়েছে। কারাগারে কারাবিধির সব সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নিয়ে বন্দী নেতাকর্মীদের ওপর বীভৎস নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। তাঁদের খাওয়ার কষ্ট দেওয়া হচ্ছে, চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।
স/মিফা























