পবিত্র রমজানের তৃতীয় জুমায় ছিল মসজিদে মসজিদে মুসল্লীদের ঢল। আজ শুক্রবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের তিলধরার ঠাঁই ছিল না। মসজিদে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেক মুসল্লি রাস্তার ওপর জুমার নামাজ আদায় করেছেন। নিজের গুনাসমূহ মাফ এবং মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মসজিদে মসজিদে মোনাজাতে মুসল্লিদের মাঝে কান্নার রোল পড়ে যায়। রাজধানীর মসজিদগুলোতে জুমার নামাজে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়। মহিলাদের পৃথক নামাজের স্থানেও তিলধরার ঠাঁই ছিল না। বেশিরভাগ মসজিদেই দেখা যায়, পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে নামাজ পড়তে এসেছেন। বৃদ্ধ, তরুণ আত্মীয়দের পাশাপাশি বড়দের সঙ্গে এসেছে ছোট ছোট শিশুরা। তারা পাঞ্জাবি পরে, মাথায় টুপি পরে হাতে জায়নামাজ নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করেছে। বড়দের নির্দেশনা মেনে নামাজের কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেছে।
গতকাল জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বাইতুল মোকাররম মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মো. রুহুল আমিন লাইলাতুল কদর ও ইতিকাফ নিয়ে আলোচনা করেন। জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে খতিব বলেন, সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে। যাকাত এখনো দেননি গরিব আত্মীয় স্বজনের মাঝে আগে যাকাতের অর্থ বন্টন করতে হবে। রমজানের শেষ সময়টুকু বেশি বেশি তওবাহ ইস্তেগফারের মাধ্যমে গুনাহ মাফ চাইতে হবে। যে রমজান পেয়েও গুনাহ মাফ করে জান্নাত লাভ করতে পারলো না সে ধ্বংস হোক। রাসূল (সা.) এ প্রসঙ্গে আমিন বলেছেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে কদরের রাত হাজার মাসের চাইতেও উত্তম। যারা রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে সুন্নতে ইতেকাফ করবে লাইলাতুল কদর তাদের নসিব হবে। শেষ দশ দিনে বেজোড় রাতে কদর তালাশ করতে হবে। রাসূল (সা.) কখনো ইতেকাফ ছাড়েননি। মা- বোনদের ঘরের নির্দিষ্ট রুহেই ইতেকাফ করতে হবে। আল্লাহ সবাইকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের তৌফিক দান করুন।
রাজধানীর বকশীবাজার জামে মসজিদের খতীব মাওলানা যোবায়ের আহমদ কাসেমী জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেছেন, মর্যাদা পূর্ণ রাত লাইলাতুল কদর এ উম্মতের জন্য মহান রবের পক্ষ থেকে এক বিশেষ উপহার। আর এই মহান নিয়ামত পেতে হলে রমজানুল মোবারকের শেষ দশকের প্রিয় নবী (সা.) ইতেকাফের নির্দেশ দিয়েছেন। লাইলাতুল কদর কবে তা আমাদের সু-ষ্পষ্ট জানানো হয়নি। বলা হয়েছে রমজানের শেষ দশকের যে কোন বিজোড় রাতে হতে পারে। তাই রমজানের শেষ দশকের ইতেকাফ সুন্নতে মুয়াক্কাদায় কিফায়া। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ইতেকাফ ৯ দিনও হতে পারে। ইতেকাফ আরবী শব্দ যার অর্থ হলো অবস্থান করা, নিবেদিত হওয়া, নিরবিচ্ছিন্ন হওয়া ইত্যাদি। ইতেকাফ তিন প্রকার- ওয়াজিব ইতেকাফ : মান্নতকৃত ইতেকাফ এবং সুন্নত ইতেকাফ ভঙ্গ হয়ে গেলে তা কাযা আদায় করা। নফল ইতেকাফ : রমজানের শেষ দশকে ১০ (দশ) দিনের কম সময়ে অথবা বছরের যে কোন সময়ে যতক্ষণ ইচ্ছা ইতেকাফের নিয়তে মস্জিদে অবস্থান করা। সুন্নতে মুয়াক্কাদা : রমজান মাসের শেষ দশকে ইতেকাফ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে তা ৯ (নয়) দিন ও হতে পারে। আল্লাহ সবাইকে ইতেকাফ করার তাওফিক দান করুন।























