০৯:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিডিবিএল সোনালীতে, রাকাব যাচ্ছে কৃষিতে

 

◉ আগামী সোমবার অনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসছে
◉ সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৯ থেকে কমে হচ্ছে ৭টি
◉বেসিকসহ আরো ৮টি ব্যাংক একীভূতকরণের আলোচনা চলছে
◉ ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে ৫০-এর নিচে নামানোর চিন্তা

 

উচ্চ খেলাপি ঋণের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বিডিবিএল এবার একীভূত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে। একই কারণে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকও একীভূত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে এসব ব্যাংকের এমডিকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি অ্যাডভাইজর আবু ফারাহ মো. নাছের এবং সরকারি চার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার কথা বলা হয়েছে বৈঠক থেকে। এর আগে আনুষ্ঠানিকতার জন্য এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৯টি। তবে এর মধ্যে এবার সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে উচ্চ খেলাপি ঋণের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বিডিবিএল এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক একীভূত হওয়ার ফলে সরকারি ব্যাংক কমে হতে যাচ্ছে ৭টি।
এর আগে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ভঙ্গুর পদ্মা ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এই দুই ব্যাংকের আদলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বুধবার আলোচিত ব্যাংকগুলোর সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানার আরেক বড় ব্যাংক অগ্রণীর সঙ্গে বেসিককে এক করে দেওয়া হতে পারে বলেও একটি সূত্র জানিয়েছে। সরকারি ব্যাংকের বাইরে বেসরকারি খাতের আরও ৮টি ব্যাংক একীভূতকরণের আলোচনা রয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, একীভূত হতে যাওয়া সরকারি চারটি ব্যাংকের আর্থিক সূচকের অবস্থা খুবই খারাপ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বিডিবিএলের মোট ঋণের ৯৮২ কোটি টাকা বা ৪২ দশমিক ৪৬ শতাংশ খেলাপি। এ পরিমাণ ঋণের বিপরীতে কোনো আয় না পেলেও পুরো আমানতের বিপরীতে সুদ গুনতে হয় ব্যাংককে।

অন্যদিকে, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা বা ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ ঋণখেলাপি। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

এর আগে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ভঙ্গুর পদ্মা ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এই দুই ব্যাংকের আদলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গতকাল আলোচিত ব্যাংকগুলোর সমঝোতা স্মারক সই হবে। তবে এ বিষয়ে আপাতত সবাইকে মুখে কুলুপ দিতে বলা হয়েছে।
সূত্রের দাবি, এভাবে ব্যাংকের সংখ্যা বর্তমানের ৬১ থেকে কমিয়ে ৫০ বা তার নিচে নামানো হবে বলে জানা গেছে।

তবে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে এসব খারাপ ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে এ খাত-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক সংবাদ সম্মেলনে সব ধরনের নিয়ম-নীতি মেনে একীভূতকরণের পরামর্শ দিয়েছে। জোরপূর্বক একীভূতকরণ না করার কথা বলেছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আগামী বছরের মার্চ থেকে খারাপ ব্যাংক জোরপূর্বক ভালো ব্যাংকের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হবে। একীভূতকরণের আগে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করার জন্য চারটি সূচকের ভিত্তিতে একটি পিসিএ ফ্রেমওয়ার্ক ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো ব্যাংক নিজ থেকে এক হলে বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। একীভূতকরণের মাধ্যমে খারাপ ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে পুরো খাতের চিত্র ভালো দেখানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খাতের উচ্চ খেলাপি ঋণ কমানো, মূলধন পরিস্থিতির উন্নতি এবং ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আনার ক্ষেত্রে আইএমএফের চাপ রয়েছে। আবার বর্তমানের আস্থাহীনতা কাটিয়ে তারল্য পরিস্থিতির উন্নতির জন্য একীভূতকরণকে ভালো বিকল্প মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে। তার আগে আমাদের পর্যায় থেকে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে দুই কৃষি ব্যাংকের আইনে বলা আছে, স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে। এ ক্ষেত্রে এসব ব্যাংকের আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের ৯৩ হাজার ৯৬ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি হয়েছে ১৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এটা মোট ঋণের ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। তবে ফেডারেল সুবিধার কারণে কোনো মূলধন ঘাটতি নেই। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বিডিবিএলের মোট ঋণের ৯৮২ কোটি টাকা বা ৪২ দশমিক ৪৬ শতাংশ খেলাপি। এ পরিমাণ ঋণের বিপরীতে কোনো আয় না পেলেও পুরো আমানতের বিপরীতে সুদ গুনতে হয় ব্যাংককে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ৩১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর মূলধন ঘাটতি রয়েছে ১৩ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতে আর কোনো ব্যাংকের এত ঘাটতি নেই। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা বা ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ ঋণখেলাপি। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

জানা গেছে, এসব ব্যাংক ছাড়াও একীভূতকরণের আলোচনায় রয়েছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল, এবি, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স, আইসিবি ইসলামিক এবং বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান।

গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এবি ব্যাংকের ৫ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা বা ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ ঋণ খেলাপি। ন্যাশনাল ব্যাংকের ১২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা বা ২৮ দশমিক ৯২ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ২ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ৫১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭৯০ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি ৬৮৭ কোটি টাকা বা প্রায় ৮৭ শতাংশ। বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের ১ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা বা ৯৮ দশমিক ২২ শতাংশ।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

বিডিবিএল সোনালীতে, রাকাব যাচ্ছে কৃষিতে

আপডেট সময় : ০৪:৫১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪

 

◉ আগামী সোমবার অনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসছে
◉ সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৯ থেকে কমে হচ্ছে ৭টি
◉বেসিকসহ আরো ৮টি ব্যাংক একীভূতকরণের আলোচনা চলছে
◉ ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে ৫০-এর নিচে নামানোর চিন্তা

 

উচ্চ খেলাপি ঋণের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বিডিবিএল এবার একীভূত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে। একই কারণে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকও একীভূত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে এসব ব্যাংকের এমডিকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি অ্যাডভাইজর আবু ফারাহ মো. নাছের এবং সরকারি চার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার কথা বলা হয়েছে বৈঠক থেকে। এর আগে আনুষ্ঠানিকতার জন্য এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৯টি। তবে এর মধ্যে এবার সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে উচ্চ খেলাপি ঋণের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বিডিবিএল এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক একীভূত হওয়ার ফলে সরকারি ব্যাংক কমে হতে যাচ্ছে ৭টি।
এর আগে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ভঙ্গুর পদ্মা ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এই দুই ব্যাংকের আদলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বুধবার আলোচিত ব্যাংকগুলোর সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানার আরেক বড় ব্যাংক অগ্রণীর সঙ্গে বেসিককে এক করে দেওয়া হতে পারে বলেও একটি সূত্র জানিয়েছে। সরকারি ব্যাংকের বাইরে বেসরকারি খাতের আরও ৮টি ব্যাংক একীভূতকরণের আলোচনা রয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, একীভূত হতে যাওয়া সরকারি চারটি ব্যাংকের আর্থিক সূচকের অবস্থা খুবই খারাপ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বিডিবিএলের মোট ঋণের ৯৮২ কোটি টাকা বা ৪২ দশমিক ৪৬ শতাংশ খেলাপি। এ পরিমাণ ঋণের বিপরীতে কোনো আয় না পেলেও পুরো আমানতের বিপরীতে সুদ গুনতে হয় ব্যাংককে।

অন্যদিকে, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা বা ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ ঋণখেলাপি। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

এর আগে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ভঙ্গুর পদ্মা ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এই দুই ব্যাংকের আদলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গতকাল আলোচিত ব্যাংকগুলোর সমঝোতা স্মারক সই হবে। তবে এ বিষয়ে আপাতত সবাইকে মুখে কুলুপ দিতে বলা হয়েছে।
সূত্রের দাবি, এভাবে ব্যাংকের সংখ্যা বর্তমানের ৬১ থেকে কমিয়ে ৫০ বা তার নিচে নামানো হবে বলে জানা গেছে।

তবে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে এসব খারাপ ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে এ খাত-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক সংবাদ সম্মেলনে সব ধরনের নিয়ম-নীতি মেনে একীভূতকরণের পরামর্শ দিয়েছে। জোরপূর্বক একীভূতকরণ না করার কথা বলেছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আগামী বছরের মার্চ থেকে খারাপ ব্যাংক জোরপূর্বক ভালো ব্যাংকের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হবে। একীভূতকরণের আগে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করার জন্য চারটি সূচকের ভিত্তিতে একটি পিসিএ ফ্রেমওয়ার্ক ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো ব্যাংক নিজ থেকে এক হলে বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। একীভূতকরণের মাধ্যমে খারাপ ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে পুরো খাতের চিত্র ভালো দেখানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খাতের উচ্চ খেলাপি ঋণ কমানো, মূলধন পরিস্থিতির উন্নতি এবং ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আনার ক্ষেত্রে আইএমএফের চাপ রয়েছে। আবার বর্তমানের আস্থাহীনতা কাটিয়ে তারল্য পরিস্থিতির উন্নতির জন্য একীভূতকরণকে ভালো বিকল্প মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে। তার আগে আমাদের পর্যায় থেকে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে দুই কৃষি ব্যাংকের আইনে বলা আছে, স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে। এ ক্ষেত্রে এসব ব্যাংকের আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের ৯৩ হাজার ৯৬ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি হয়েছে ১৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এটা মোট ঋণের ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। তবে ফেডারেল সুবিধার কারণে কোনো মূলধন ঘাটতি নেই। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বিডিবিএলের মোট ঋণের ৯৮২ কোটি টাকা বা ৪২ দশমিক ৪৬ শতাংশ খেলাপি। এ পরিমাণ ঋণের বিপরীতে কোনো আয় না পেলেও পুরো আমানতের বিপরীতে সুদ গুনতে হয় ব্যাংককে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ৩১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর মূলধন ঘাটতি রয়েছে ১৩ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতে আর কোনো ব্যাংকের এত ঘাটতি নেই। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা বা ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ ঋণখেলাপি। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

জানা গেছে, এসব ব্যাংক ছাড়াও একীভূতকরণের আলোচনায় রয়েছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল, এবি, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স, আইসিবি ইসলামিক এবং বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান।

গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এবি ব্যাংকের ৫ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা বা ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ ঋণ খেলাপি। ন্যাশনাল ব্যাংকের ১২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা বা ২৮ দশমিক ৯২ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ২ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ৫১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭৯০ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি ৬৮৭ কোটি টাকা বা প্রায় ৮৭ শতাংশ। বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের ১ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা বা ৯৮ দশমিক ২২ শতাংশ।