ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জঙ্গি সংগঠন জেএমবির নেতা নুর মোহাম্মদ ওরফে সাবু ওরফে শামীম ওরফে মাহবুবুর রহমান (৪০) ২০ বছর পলাতক থেকেও শেষ রক্ষা পায়নি। অবশেষে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) হাতে ধরা পড়েছে। তিনি ২০ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। গত ৯ এপ্রিল বিকালে দৈনিক সবুজ বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এটিইউর মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম রাসেল।
তিনি বলেন, গত ৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে ডিএমপির বিমানবন্দর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসপি মাহফুজুল আলম বলেন, জেএমবির নুর মোহাম্মদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তিনি ২০ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। ঢাবির অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ-এর ‘পাক স্যার জামিন সাদ বাদ’ বইটি জেএমবি মতাদর্শ পরিপন্থি হওয়ায় ২০০৪ সালে জেএমবির আমির শায়েখ আব্দুর রহমানের নির্দেশে জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানি, সালাউদ্দিন সালেহিন, হাফেজ শহিদসহ অন্যদের সঙ্গে সংঘবদ্ধভাবে নুর মোহাম্মদ ড. হুমায়ুন আজাদকে হত্যা করেন।
তিনি আরও বলেন, নুর মোহাম্মদ জেএমবি’র আমির শায়খ আব্দুর রহমানের কাছে বায়াত গ্রহণ করেন এবং জেএমবি’র সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানির মাধ্যমে জেএমবি সংগঠনের দাওয়াতপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে, জেএমবি নেতা সালাউদ্দিন সালেহিন, হাফেজ শহিদ, মো. মিজানুর রহমান, মো. হাফিজ মাহমুদ রাকিবসহ অনেকের সঙ্গেই তিনি সম্পৃক্ত হন এবং বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজে অংশগ্রহণ করেন। ২০০৪ সালে অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করলে নুর মোহাম্মদ দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ড. আজাদ ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ‘অমর একুশে বইমেলা’ থেকে বের হয়ে বাংলা একাডেমি ও টিএসসি’র মাঝামাঝি পৌঁছালে, নুর মোহাম্মদসহ তার অন্য সহযোগীরা তাকে ঘেরাও করে। তারা ব্যাগ থেকে চাপাতি-ছুরি বের করে ড. হুমায়ুন আজাদের ঘাড়, মাথা, মুখ, গলা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে। এরপর হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ড. আজাদ চিকিৎসারত অবস্থায় জার্মানিতে মৃত্যুবরণ করেন।






















