০৬:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমজানের পর তীব্র তাপদাহে তরমুজের বাজার গরম

◉গরমের কারণে পানিজাতীয় ফলের চাহিদা বেড়েছে
◉সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা
◉পিস হিসেবে নয়, বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে

তীব্র তাপদাহে সারা দেশে জনজীবন নাকাল। গরমে সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে সারা দেশে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে; পাশাপাশি দেশজুড়ে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চলমান এই তাপপ্রবাহে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করতে অনেকে রসাল ফল তরমুজ দিকে ঝুঁকছে। যে কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে এ ফলের। এতে রাজধানীতে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা সাধারণ মানুষ ফলটি কিনতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। ক্রেতারা বলছেন, রমজানের শেষ দিকে এই ফলের দাম সহনীয় পর্যায়ে ছিল কিন্তু গরমের কারণে পানি জাতীয় এই ফলের চাহিদা বাড়ায় সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আর ব্যবসায়ীদের দাবি, তরমুজের মৌসুম শেষ দিকে এসে গেছে। কৃষকের জমিতে এখন আর বেশি ফল নেই। যার ফলে বাজারে তরমুজের সরবরাহ কম। আবার পরিবহন খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে তরমুজের দাম বেড়েছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার,মিরপুর ও খিলগাঁও এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজা ও ঈদের সময় তরমুজ বয়কটের ডাক ছিল। যে কারণে তখন ছোট তরমুজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা, বড় তরমুজ ছিল ৪০ টাকার মতো। এখন গড়ে তরমুজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭৫ টাকায়। আবার অনেক সময় ৮০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন কেউ পিস হিসেবে বিক্রি না করে কেজি দরে বিক্রি করছে।

রাজধানীর পান্থপথ এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. ফাহাদ বলেন, গরমের কারণে ছেলে-মেয়েরা তরমুজ খেতে বেশি পছন্দ করে। কিন্তু বাজারে দিনদিন তরমুজের দাম বাড়ছে। ঈদের পরে তরমুজ কিনছি পিস হিসেবে। এখন কেজি ছাড়া বিক্রি করে না ব্যবসায়ীরা।

একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, গরমের মধ্যে পানি জাতীয় ফল মানুষ বেশি খায়। এখন বাজারে পানি জাতীয় ফল তরমুজ ও ডাব। তাই তরমুজের চাহিদা বেশি, দামও বেশি। পাশাপাশি আমাদের পরিবহন খরচও বেড়েছে।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আজিজ বলেন, তরমুজের মৌসুম এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। যার ফলে, বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। আবার পরিবহন খরচও বেড়েছে। তাই তরমুজের দামও বেড়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই কিছু ক্ষেত্রে দাম দ্বিগুণের মতো বেড়েছে। গরমের মধ্যে মানুষের শরীর থেকে বেশি ঘাম বের হয়। এতে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। যে কারণে মানুষ পানি জাতীয় ফল বেশি খায়। এখন বাজারে পানি জাতীয় ফল আছে তরমুজ ও ডাব। তাই তরমুজের চাহিদা বেশি, দামও বেশি।

মিরপুরের ব্যবসায়ী মো. মিজান বলেন, আমরা খুচরা বিক্রেতা। দাম বাড়লে আমরা বাড়াই। কমলে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারি। এখন আড়ত থেকে বেশি দামে কিনতে হয়, আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। রোজার মধ্যে ১০০ তরমুজ কিনতে পারতাম ১৮-১৯ হাজার টাকায়। আর এখন সেটা কিনতে লাগে ২৫-২৬ হাজার টাকা। কারণ বাজারে এখন তরমুজ নাই। এখন ৩ কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। আর ৪-৫ কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকায়। বাজারে এখন ২০০ টাকার নিচে কোনো তরমুজ নেই।

এদিকে কিছু-কিছু এলাকার ফুটপাতে প্লেটে করে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। সেখানে দেখা যায় ছোট ছোট ৪-৫ টুকরো তরমুজের প্লেট বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। পাশাপাশি তরমুজকে কেটে সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ফুটপাতে একাধিক দোকানে পিস ২০ টাকা হিসেবে বিক্রি করতে দেখা যায়।
কথা হলে দিনমজুর মো. আব্দুর রহমান বলেন, এই গরমে তরমুজ খেলে একটু শান্তি লাগে কিন্তু তরমুজের যে দাম আমাদের মতো মানুষের কিনে খাওয়ার স্বাধ্যের বাইরে। মাঝে কিছুটা দাম কম ছিল, কিন্তু দাম আবার বেড়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপির পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ

রমজানের পর তীব্র তাপদাহে তরমুজের বাজার গরম

আপডেট সময় : ০৪:৫০:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

◉গরমের কারণে পানিজাতীয় ফলের চাহিদা বেড়েছে
◉সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা
◉পিস হিসেবে নয়, বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে

তীব্র তাপদাহে সারা দেশে জনজীবন নাকাল। গরমে সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে সারা দেশে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে; পাশাপাশি দেশজুড়ে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চলমান এই তাপপ্রবাহে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করতে অনেকে রসাল ফল তরমুজ দিকে ঝুঁকছে। যে কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে এ ফলের। এতে রাজধানীতে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা সাধারণ মানুষ ফলটি কিনতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। ক্রেতারা বলছেন, রমজানের শেষ দিকে এই ফলের দাম সহনীয় পর্যায়ে ছিল কিন্তু গরমের কারণে পানি জাতীয় এই ফলের চাহিদা বাড়ায় সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আর ব্যবসায়ীদের দাবি, তরমুজের মৌসুম শেষ দিকে এসে গেছে। কৃষকের জমিতে এখন আর বেশি ফল নেই। যার ফলে বাজারে তরমুজের সরবরাহ কম। আবার পরিবহন খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে তরমুজের দাম বেড়েছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার,মিরপুর ও খিলগাঁও এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজা ও ঈদের সময় তরমুজ বয়কটের ডাক ছিল। যে কারণে তখন ছোট তরমুজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা, বড় তরমুজ ছিল ৪০ টাকার মতো। এখন গড়ে তরমুজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭৫ টাকায়। আবার অনেক সময় ৮০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন কেউ পিস হিসেবে বিক্রি না করে কেজি দরে বিক্রি করছে।

রাজধানীর পান্থপথ এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. ফাহাদ বলেন, গরমের কারণে ছেলে-মেয়েরা তরমুজ খেতে বেশি পছন্দ করে। কিন্তু বাজারে দিনদিন তরমুজের দাম বাড়ছে। ঈদের পরে তরমুজ কিনছি পিস হিসেবে। এখন কেজি ছাড়া বিক্রি করে না ব্যবসায়ীরা।

একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, গরমের মধ্যে পানি জাতীয় ফল মানুষ বেশি খায়। এখন বাজারে পানি জাতীয় ফল তরমুজ ও ডাব। তাই তরমুজের চাহিদা বেশি, দামও বেশি। পাশাপাশি আমাদের পরিবহন খরচও বেড়েছে।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আজিজ বলেন, তরমুজের মৌসুম এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। যার ফলে, বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। আবার পরিবহন খরচও বেড়েছে। তাই তরমুজের দামও বেড়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই কিছু ক্ষেত্রে দাম দ্বিগুণের মতো বেড়েছে। গরমের মধ্যে মানুষের শরীর থেকে বেশি ঘাম বের হয়। এতে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। যে কারণে মানুষ পানি জাতীয় ফল বেশি খায়। এখন বাজারে পানি জাতীয় ফল আছে তরমুজ ও ডাব। তাই তরমুজের চাহিদা বেশি, দামও বেশি।

মিরপুরের ব্যবসায়ী মো. মিজান বলেন, আমরা খুচরা বিক্রেতা। দাম বাড়লে আমরা বাড়াই। কমলে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারি। এখন আড়ত থেকে বেশি দামে কিনতে হয়, আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। রোজার মধ্যে ১০০ তরমুজ কিনতে পারতাম ১৮-১৯ হাজার টাকায়। আর এখন সেটা কিনতে লাগে ২৫-২৬ হাজার টাকা। কারণ বাজারে এখন তরমুজ নাই। এখন ৩ কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। আর ৪-৫ কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকায়। বাজারে এখন ২০০ টাকার নিচে কোনো তরমুজ নেই।

এদিকে কিছু-কিছু এলাকার ফুটপাতে প্লেটে করে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। সেখানে দেখা যায় ছোট ছোট ৪-৫ টুকরো তরমুজের প্লেট বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। পাশাপাশি তরমুজকে কেটে সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ফুটপাতে একাধিক দোকানে পিস ২০ টাকা হিসেবে বিক্রি করতে দেখা যায়।
কথা হলে দিনমজুর মো. আব্দুর রহমান বলেন, এই গরমে তরমুজ খেলে একটু শান্তি লাগে কিন্তু তরমুজের যে দাম আমাদের মতো মানুষের কিনে খাওয়ার স্বাধ্যের বাইরে। মাঝে কিছুটা দাম কম ছিল, কিন্তু দাম আবার বেড়েছে।