১২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে আগে পরিবারকে সচেতন হতে হবে -ডিএমপি কমিশনার

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে সবার আগে পরিবারকে সচেতন হতে হবে। অভিভাবকরা যেন তাদের কোমলমতি সন্তানদের সময় দেয় ও ঠিকমতো দেখাশোনা করে। যাতে তারা কিশোর গ্যাংয়ের মতো অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে। কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে পরিবার ও সমাজকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির অয়োজনে ‘কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছার চেয়ে সামাজিক আন্দোলনই অধিক কার্যকর” শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

 

 

কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সামাজিক আন্দোলন নিয়ে এ পাবলিক পার্লামেন্ট বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সরকার দল হিসেবে প্রস্তাবের পক্ষে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজ এবং বিরোধী দল হিসেবে প্রস্তাবের বিপক্ষে ঢাকা কমার্স কলেজের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে।

 

 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আজকের বিতর্কের মূল বিষয় হলো কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে রাষ্ট্র না সমাজের ভূমিকা মুখ্য। আমরা যদি পৃথিবীর অপরাধের ইতিহাস পর্যালোচনা করি তাহলে আমরা দেখব যে, পৃথিবীতে আগে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং সরকার, রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠান সেই অপরাধ প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন করেছে পরে। সুতরাং কিশোর অপরাধ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও আমি বলতে চাই সবার আগে পরিবার, সমাজ ও পারিপার্শ্বিকতা। এরপর রাষ্ট্র, সরকার, আইন বা আদালত। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গাজীপুরের টঙ্গী, কোনাবাড়ি ও যশোর জেলায় তিনটি কিশোর সংশোধন কেন্দ্র রয়েছে। বাংলাদেশে কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে আইন রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার সেটি কিন্তু করা হচ্ছে। কিশোর অপরাধ সংক্রান্তে যে অভিযোগগুলো আমাদের কাছে এসেছে তার প্রতিটিতে পুলিশ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

 

 

 

হাবিবুর রহমান বলেন, কিশোর অপরাধের ক্ষেত্রে প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক দুটি কাজই কিন্তু পুলিশ করে থাকে। কোন ঘটনা ঘটে গেলে পুলিশ মামলা রুজু, অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও তাদের আদালতে প্রেরণ করে থাকে। এছাড়াও কিশোর অপরাধ প্রতিরোধ করতে পুলিশ বিভিন্ন স্কুলে, পাড়ায়, অনুষ্ঠানে এমনকি মসজিদে গিয়েও মানুষকে সচেতন করছে।

 

 

 

মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পর্কে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি প্রধান বলেন, সবার জীবনের অপরিহার্য একটা বিষয় মোবাইল ফোন। এই মোবাইল ফোনের ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি বহু নেতিবাচক দিক রয়েছে। মোবাইলের নেতিবাচক ব্যবহার বাদ দিয়ে যদি কেউ মোবাইলের ইতিবাচক ব্যবহার করে তাহলে সে আদর্শ মানুষ হয়ে যেতে পারে। মোবাইল একটি চলমান লাইব্রেরি। পড়াশোনা, নৈতিকতা ও দেশপ্রেম তৈরিসহ দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনেও মোবাইল ফোনের ইতিবাচক ব্যবহার ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, আজকের শিশুরাই আগামীর বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন সেই সোনার বাংলা গড়তে হলে অপরাধমুক্ত সোনার মানুষ গড়ে তুলতে হবে। তারা কেবল বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্ব নেতৃত্ব দিবে।

 

 

 

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ত্রুটিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা, পারিবারিক বন্ধনের ঘাটতি, মাদকের সহজলভ্যতা, দরিদ্রতা, কর্মসংস্থানের অভাব, সুশাসনের ঘাটতি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবসহ নানা কারণে শিশু কিশোররা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির প্রবণতাকে আরো বেশি উস্কে দিচ্ছে।

 

 

প্রতিযোগিতায় শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছে ঢাকা কমার্স কলেজ। বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক জি এম তসলিম, সাংবাদিক জিয়া খান, সাংবাদিক অনিমেষ কর ও সাংবাদিক কাওসার সোহেলী।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে আগে পরিবারকে সচেতন হতে হবে -ডিএমপি কমিশনার

আপডেট সময় : ০৯:৩২:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে সবার আগে পরিবারকে সচেতন হতে হবে। অভিভাবকরা যেন তাদের কোমলমতি সন্তানদের সময় দেয় ও ঠিকমতো দেখাশোনা করে। যাতে তারা কিশোর গ্যাংয়ের মতো অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে। কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে পরিবার ও সমাজকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির অয়োজনে ‘কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছার চেয়ে সামাজিক আন্দোলনই অধিক কার্যকর” শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

 

 

কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সামাজিক আন্দোলন নিয়ে এ পাবলিক পার্লামেন্ট বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সরকার দল হিসেবে প্রস্তাবের পক্ষে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজ এবং বিরোধী দল হিসেবে প্রস্তাবের বিপক্ষে ঢাকা কমার্স কলেজের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে।

 

 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আজকের বিতর্কের মূল বিষয় হলো কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে রাষ্ট্র না সমাজের ভূমিকা মুখ্য। আমরা যদি পৃথিবীর অপরাধের ইতিহাস পর্যালোচনা করি তাহলে আমরা দেখব যে, পৃথিবীতে আগে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং সরকার, রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠান সেই অপরাধ প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন করেছে পরে। সুতরাং কিশোর অপরাধ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও আমি বলতে চাই সবার আগে পরিবার, সমাজ ও পারিপার্শ্বিকতা। এরপর রাষ্ট্র, সরকার, আইন বা আদালত। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গাজীপুরের টঙ্গী, কোনাবাড়ি ও যশোর জেলায় তিনটি কিশোর সংশোধন কেন্দ্র রয়েছে। বাংলাদেশে কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে আইন রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার সেটি কিন্তু করা হচ্ছে। কিশোর অপরাধ সংক্রান্তে যে অভিযোগগুলো আমাদের কাছে এসেছে তার প্রতিটিতে পুলিশ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

 

 

 

হাবিবুর রহমান বলেন, কিশোর অপরাধের ক্ষেত্রে প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক দুটি কাজই কিন্তু পুলিশ করে থাকে। কোন ঘটনা ঘটে গেলে পুলিশ মামলা রুজু, অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও তাদের আদালতে প্রেরণ করে থাকে। এছাড়াও কিশোর অপরাধ প্রতিরোধ করতে পুলিশ বিভিন্ন স্কুলে, পাড়ায়, অনুষ্ঠানে এমনকি মসজিদে গিয়েও মানুষকে সচেতন করছে।

 

 

 

মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পর্কে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি প্রধান বলেন, সবার জীবনের অপরিহার্য একটা বিষয় মোবাইল ফোন। এই মোবাইল ফোনের ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি বহু নেতিবাচক দিক রয়েছে। মোবাইলের নেতিবাচক ব্যবহার বাদ দিয়ে যদি কেউ মোবাইলের ইতিবাচক ব্যবহার করে তাহলে সে আদর্শ মানুষ হয়ে যেতে পারে। মোবাইল একটি চলমান লাইব্রেরি। পড়াশোনা, নৈতিকতা ও দেশপ্রেম তৈরিসহ দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনেও মোবাইল ফোনের ইতিবাচক ব্যবহার ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, আজকের শিশুরাই আগামীর বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন সেই সোনার বাংলা গড়তে হলে অপরাধমুক্ত সোনার মানুষ গড়ে তুলতে হবে। তারা কেবল বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্ব নেতৃত্ব দিবে।

 

 

 

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ত্রুটিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা, পারিবারিক বন্ধনের ঘাটতি, মাদকের সহজলভ্যতা, দরিদ্রতা, কর্মসংস্থানের অভাব, সুশাসনের ঘাটতি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবসহ নানা কারণে শিশু কিশোররা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির প্রবণতাকে আরো বেশি উস্কে দিচ্ছে।

 

 

প্রতিযোগিতায় শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছে ঢাকা কমার্স কলেজ। বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক জি এম তসলিম, সাংবাদিক জিয়া খান, সাংবাদিক অনিমেষ কর ও সাংবাদিক কাওসার সোহেলী।