০৮:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাফাহ অভিযানে রক্তগঙ্গা বইতে পারে : ডব্লিউএইচও

❖প্রতিদিন মা হারাচ্ছে ৩৭ ফিলিস্তিনি শিশু
❖পানিশূন্যতায় ভুগছেন দেড় লাখ অন্তঃসত্ত্বা নারী
❖গাজা পুনর্নিমাণে লাগবে ৪০ বিলিয়ন ডলার, সময় ৮০ বছর

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞ যেন থামছেই না। সংঘাত বন্ধের কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই ফিলিস্তিনি জনগণ হত্যার শিকার হচ্ছে। খাবার এবং আশ্রয়ের অভাবে দিন কাটাচ্ছে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। এ সংঘাত পুরো বিশ্বে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন মা হারাচ্ছে ৩৭ জন ফিলিস্তিনি শিশু। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দেড় লাখেরও বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী।

এরই মধ্যে রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বাহিনী অনুপ্রবেশ করে আক্রমণ চালালে সেখানে ‘রক্তগঙ্গা’ বয়ে যাবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই মুহূর্তে যদি গাজায় যুদ্ধবিরতি হয় এবং স্বাভাবিক গতিতে সেখানে অবকাঠামো পুনর্নিমাণের কাজ শুরু হয়, তবে গাজাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সময় লাগবে ৮০ বছর আর খরচ হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার।

 

 

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে প্রায় সাত মাস ধরে চলা সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৪ হাজার ৬২২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে ৭৭ হাজার ৮৬৭ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। গত শুক্রবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি নারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৯ হাজার ফিলিস্তিনি নারী। যেসব নারী মারা যাচ্ছেন তাদের অনেকেই সন্তানের মা। ফলে গড়ে প্রতিদিন মা হারাচ্ছে অন্তত ৩৭ ফিলিস্তিনি শিশু। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দিন দিন পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। এতে দেড় লাখেরও বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে গাজায় লাখ লাখ অন্তঃসত্ত্বা বা স্তন্যপান করানো নারী প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাচ্ছেন না। তারা স্যানিটেশন সমস্যায়ও ভুগছেন। ওই নারীদের মধ্যে প্রায় এক লাখ ৫৫ হাজার নারী রয়েছেন, যারা খুব কঠিন সময় পার করছেন।

 

 

 

এদিকে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার জন্য মিসরে পৌঁছেছে। ইসরায়েল হামাসকে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে। হামাস এ বিষয়ে সম্মত না হলে রাফায় স্থল অভিযান শুরু হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। গাজার জনগণ, জিম্মি এবং তাদের পরিবার এবং ওই অঞ্চল বিস্তৃত বিশ্বের স্বার্থ রক্ষায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ইসরায়েল এবং হামাসকে চাপ দিচ্ছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। অপরদিকে গাজায় ৪০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সরকারি কার্যক্রমের সমন্বয়কারী সংস্থা ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দেয়। এক এক্স বার্তায় সংস্থাটি জানায়, উত্তর গাজায় বিমান থেকে মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২২ ট্রাক ত্রাণ উত্তর গাজায় সরবরাহ করা হয়েছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এপ্রিলে প্রতিদিন গড়ে ১৬৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল। তবে ইসরায়েল যে সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দিয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। কারণ অবরুদ্ধ এলাকায় প্রতিদিন এক হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক দরকার।

অন্যদিকে রাফা শহরে রয়ে যাওয়া হামাস সদস্যদের নিশ্চিহ্ন করতে সেখানে বড় পরিসরে স্থল অভিযানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। প্রায় সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজার বেশির ভাগ মানুষ এখন রাফায় আশ্রয় নিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে রাফায় আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২ লাখ মানুষের ওপর ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এক এক্স বার্তায় ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সতর্ক করে দিয়েছেন। গাজার রাফায় সম্ভাব্য পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান নিয়ে ডব্লিউএইচও উদ্বিগ্ন। এর ফলে সেখানে রক্তগঙ্গা দেখা যেতে পারে। সেখানকার ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও দুর্বল হতে পারে। রাফাহ অভিযানের ফলে হতাহতের সংখ্যা এতটাই বেশি হতে পারে যে, সেখানকার ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তা সামাল দিতে পারবে না।

গাজা পুনর্নিমাণে লাগবে ৪০ বিলিয়ন ডলার, সময় ৮০ বছর : ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই মুহূর্তে যদি গাজায় যুদ্ধবিরতি হয় এবং স্বাভাবিক গতিতে সেখানে অবকাঠামো পুনর্নিমাণের কাজ শুরু হয়, তবে গাজাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সময় লাগবে ৮০ বছর আর খরচ হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার। যদি পুনর্নিমাণ ও পুনর্গঠনের কাজের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি উন্নীত করা হয়, তাহলেও উপত্যকাকে আগের মতো বসবাসযোগ্য করে তুলতে ২০৪০ সাল পেরিয়ে যাবে। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি বিষয়ক প্রকল্প ইউএন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে এসব তথ্য বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর গত ৭ মাসের গোলা ও বোমা বর্ষণে নজিরবিহীন ভাবে তছনছ হয়ে গেছে গাজা। উপত্যকার অন্তত ৮০ হাজার ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং গোটা উপত্যকায় দারিদ্র্য বেড়েছে ভয়াবহভাবে।

আদালতকে ভয়ভীতি দেখানো বন্ধের আহ্বান আইসিসির : কৌঁসুলির দপ্তর তার কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বলেছে, এ ধরনের হুমকি বিশ্বের এই স্থায়ী যুদ্ধাপরাধ আদালতের ‘বিচার প্রশাসনের’ বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল হতে পারে। গত শুক্রবার আদালতের কৌঁসুলি করিম খান এক বিবৃতিতে বলেন, তাঁর দপ্তরের কর্মীদের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করা, তাদের ভয়ভীতি দেখানো বা তাদের ওপর অবৈধ প্রভাব খাটানোর সব ধরনের চেষ্টা অবশ্যই অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। রোম সনদের অধীন এ আদালতের স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার বৈধ ক্ষমতা রয়েছে। এই কর্তৃত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করতে চায় এ দপ্তর। বিবৃতিতে ইসরায়েলের কথা সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি। তবে এ বিবৃতি এমন এক সময় দেওয়া হলো, যার আগে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে দেশটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ফলাফলের বিষয়ে আইসিসিকে সতর্ক করে দেন মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

রাফাহ অভিযানে রক্তগঙ্গা বইতে পারে : ডব্লিউএইচও

আপডেট সময় : ০৭:০৯:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

❖প্রতিদিন মা হারাচ্ছে ৩৭ ফিলিস্তিনি শিশু
❖পানিশূন্যতায় ভুগছেন দেড় লাখ অন্তঃসত্ত্বা নারী
❖গাজা পুনর্নিমাণে লাগবে ৪০ বিলিয়ন ডলার, সময় ৮০ বছর

অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞ যেন থামছেই না। সংঘাত বন্ধের কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই ফিলিস্তিনি জনগণ হত্যার শিকার হচ্ছে। খাবার এবং আশ্রয়ের অভাবে দিন কাটাচ্ছে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। এ সংঘাত পুরো বিশ্বে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন মা হারাচ্ছে ৩৭ জন ফিলিস্তিনি শিশু। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দেড় লাখেরও বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী।

এরই মধ্যে রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বাহিনী অনুপ্রবেশ করে আক্রমণ চালালে সেখানে ‘রক্তগঙ্গা’ বয়ে যাবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই মুহূর্তে যদি গাজায় যুদ্ধবিরতি হয় এবং স্বাভাবিক গতিতে সেখানে অবকাঠামো পুনর্নিমাণের কাজ শুরু হয়, তবে গাজাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সময় লাগবে ৮০ বছর আর খরচ হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার।

 

 

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে প্রায় সাত মাস ধরে চলা সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৪ হাজার ৬২২ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে ৭৭ হাজার ৮৬৭ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। গত শুক্রবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি নারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৯ হাজার ফিলিস্তিনি নারী। যেসব নারী মারা যাচ্ছেন তাদের অনেকেই সন্তানের মা। ফলে গড়ে প্রতিদিন মা হারাচ্ছে অন্তত ৩৭ ফিলিস্তিনি শিশু। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দিন দিন পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। এতে দেড় লাখেরও বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে গাজায় লাখ লাখ অন্তঃসত্ত্বা বা স্তন্যপান করানো নারী প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাচ্ছেন না। তারা স্যানিটেশন সমস্যায়ও ভুগছেন। ওই নারীদের মধ্যে প্রায় এক লাখ ৫৫ হাজার নারী রয়েছেন, যারা খুব কঠিন সময় পার করছেন।

 

 

 

এদিকে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার জন্য মিসরে পৌঁছেছে। ইসরায়েল হামাসকে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে। হামাস এ বিষয়ে সম্মত না হলে রাফায় স্থল অভিযান শুরু হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। গাজার জনগণ, জিম্মি এবং তাদের পরিবার এবং ওই অঞ্চল বিস্তৃত বিশ্বের স্বার্থ রক্ষায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ইসরায়েল এবং হামাসকে চাপ দিচ্ছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। অপরদিকে গাজায় ৪০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সরকারি কার্যক্রমের সমন্বয়কারী সংস্থা ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দেয়। এক এক্স বার্তায় সংস্থাটি জানায়, উত্তর গাজায় বিমান থেকে মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২২ ট্রাক ত্রাণ উত্তর গাজায় সরবরাহ করা হয়েছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এপ্রিলে প্রতিদিন গড়ে ১৬৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল। তবে ইসরায়েল যে সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দিয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। কারণ অবরুদ্ধ এলাকায় প্রতিদিন এক হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক দরকার।

অন্যদিকে রাফা শহরে রয়ে যাওয়া হামাস সদস্যদের নিশ্চিহ্ন করতে সেখানে বড় পরিসরে স্থল অভিযানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। প্রায় সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজার বেশির ভাগ মানুষ এখন রাফায় আশ্রয় নিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে রাফায় আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২ লাখ মানুষের ওপর ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এক এক্স বার্তায় ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সতর্ক করে দিয়েছেন। গাজার রাফায় সম্ভাব্য পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান নিয়ে ডব্লিউএইচও উদ্বিগ্ন। এর ফলে সেখানে রক্তগঙ্গা দেখা যেতে পারে। সেখানকার ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও দুর্বল হতে পারে। রাফাহ অভিযানের ফলে হতাহতের সংখ্যা এতটাই বেশি হতে পারে যে, সেখানকার ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তা সামাল দিতে পারবে না।

গাজা পুনর্নিমাণে লাগবে ৪০ বিলিয়ন ডলার, সময় ৮০ বছর : ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই মুহূর্তে যদি গাজায় যুদ্ধবিরতি হয় এবং স্বাভাবিক গতিতে সেখানে অবকাঠামো পুনর্নিমাণের কাজ শুরু হয়, তবে গাজাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সময় লাগবে ৮০ বছর আর খরচ হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার। যদি পুনর্নিমাণ ও পুনর্গঠনের কাজের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি উন্নীত করা হয়, তাহলেও উপত্যকাকে আগের মতো বসবাসযোগ্য করে তুলতে ২০৪০ সাল পেরিয়ে যাবে। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি বিষয়ক প্রকল্প ইউএন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে এসব তথ্য বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর গত ৭ মাসের গোলা ও বোমা বর্ষণে নজিরবিহীন ভাবে তছনছ হয়ে গেছে গাজা। উপত্যকার অন্তত ৮০ হাজার ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং গোটা উপত্যকায় দারিদ্র্য বেড়েছে ভয়াবহভাবে।

আদালতকে ভয়ভীতি দেখানো বন্ধের আহ্বান আইসিসির : কৌঁসুলির দপ্তর তার কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বলেছে, এ ধরনের হুমকি বিশ্বের এই স্থায়ী যুদ্ধাপরাধ আদালতের ‘বিচার প্রশাসনের’ বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল হতে পারে। গত শুক্রবার আদালতের কৌঁসুলি করিম খান এক বিবৃতিতে বলেন, তাঁর দপ্তরের কর্মীদের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করা, তাদের ভয়ভীতি দেখানো বা তাদের ওপর অবৈধ প্রভাব খাটানোর সব ধরনের চেষ্টা অবশ্যই অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। রোম সনদের অধীন এ আদালতের স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার বৈধ ক্ষমতা রয়েছে। এই কর্তৃত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করতে চায় এ দপ্তর। বিবৃতিতে ইসরায়েলের কথা সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি। তবে এ বিবৃতি এমন এক সময় দেওয়া হলো, যার আগে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে দেশটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ফলাফলের বিষয়ে আইসিসিকে সতর্ক করে দেন মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।