০৯:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে দেশে ছড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

➤ বিক্ষোভ থেকে ২২০০ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
➤ বিক্ষোভ দমনে মারমুখী পুলিশ
➤ বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশিরাও

দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচার ফিলিস্তিনিদের হত্যা বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিক্ষোভ চলছে, তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। লন্ডন, প্যারিস ও রোম থেকে সিডনি, টোকিও, বৈরুতসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এসব বিক্ষোভ থেকে অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবি জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি ইসরায়েল ও গাজা যুদ্ধকে সমর্থন করে, এমন সব কোম্পানির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি তোলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীদের হটাতে যে দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে, সেটাও তাদের প্রতিবাদে শামিল হতে উৎসাহিত করছে। দেশে দেশে এমন বিক্ষোভ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও এর ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশগুলোর তরুণদের মধ্যে ইসরায়েলের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা প্রকাশিত হচ্ছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে গত ১৮ এপ্রিল বিক্ষোভ শুরু করেন নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে মার্কিন সরকার। এর মধ্যে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।

ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত খ্যাতনামা নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যলয়, জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়, ইতালির রোমের স্যাপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়, মেক্সিকোর ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি এবং লেবাননের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুত ও লেবানিজ আমেরিকান ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতের ফটকের বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।

 

 

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভের মধ্যে ক্যাম্পাসগুলোতে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের সময় হয়ে এসেছে। বিক্ষোভ চলছে এমন চারটি ক্যাম্পাসে চলতি সপ্তাহান্তে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। এছাড়া নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি ক্যাম্পাসে চলতি মাসে ও জুনে এই আয়োজন হওয়ার কথা রয়েছে। এসব আয়োজনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করার চেষ্টায় রয়েছে ক্যাম্পাসগুলো। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরাও এসব আয়োজন বর্জন করা, অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে আসা বা ওয়াকআউট করাসহ বিভিন্ন বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে ভাবছেন।

 

 

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ২২০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে পুলিশ আরো বেশি মারমুখী। বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড় করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ সহিংস আচরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে পুলিশের গুলি ছোড়ার ঘটনাও। তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

 

 

গত বৃহস্পতিবার দেখা গেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি। বৈধ পরিচয়পত্র ছাড়া ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে ভেতরে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। পাশাপাশি পরীক্ষাও চলছে। শুধু কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দুই দিন আগেও হাজারো শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

দেশে দেশে ছড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৭:৩৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

➤ বিক্ষোভ থেকে ২২০০ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
➤ বিক্ষোভ দমনে মারমুখী পুলিশ
➤ বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশিরাও

দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচার ফিলিস্তিনিদের হত্যা বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিক্ষোভ চলছে, তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। লন্ডন, প্যারিস ও রোম থেকে সিডনি, টোকিও, বৈরুতসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এসব বিক্ষোভ থেকে অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবি জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি ইসরায়েল ও গাজা যুদ্ধকে সমর্থন করে, এমন সব কোম্পানির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি তোলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীদের হটাতে যে দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে, সেটাও তাদের প্রতিবাদে শামিল হতে উৎসাহিত করছে। দেশে দেশে এমন বিক্ষোভ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও এর ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশগুলোর তরুণদের মধ্যে ইসরায়েলের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা প্রকাশিত হচ্ছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে গত ১৮ এপ্রিল বিক্ষোভ শুরু করেন নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে মার্কিন সরকার। এর মধ্যে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।

ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত খ্যাতনামা নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যলয়, জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়, ইতালির রোমের স্যাপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়, মেক্সিকোর ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি এবং লেবাননের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুত ও লেবানিজ আমেরিকান ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতের ফটকের বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।

 

 

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভের মধ্যে ক্যাম্পাসগুলোতে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের সময় হয়ে এসেছে। বিক্ষোভ চলছে এমন চারটি ক্যাম্পাসে চলতি সপ্তাহান্তে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। এছাড়া নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি ক্যাম্পাসে চলতি মাসে ও জুনে এই আয়োজন হওয়ার কথা রয়েছে। এসব আয়োজনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করার চেষ্টায় রয়েছে ক্যাম্পাসগুলো। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরাও এসব আয়োজন বর্জন করা, অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে আসা বা ওয়াকআউট করাসহ বিভিন্ন বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে ভাবছেন।

 

 

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ২২০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে পুলিশ আরো বেশি মারমুখী। বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড় করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ সহিংস আচরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে পুলিশের গুলি ছোড়ার ঘটনাও। তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

 

 

গত বৃহস্পতিবার দেখা গেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি। বৈধ পরিচয়পত্র ছাড়া ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে ভেতরে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। পাশাপাশি পরীক্ষাও চলছে। শুধু কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দুই দিন আগেও হাজারো শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।