যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ২৮ টি পদ অনুমোদনের ৩ বছর পার হলেও জনবল মেলেনি। ফলে জেনারেল হাসপাতালের ধার করা চিকিৎসক সেবিকা দিয়ে চলছে সেখানকার কার্যক্রম। এদিকে, হৃদরোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয় অধিকাংশ যন্ত্রপাতি নষ্ট। ফলে উন্নত চিকিৎসার অভাবে প্রতিনিয়ত ঝরে যাচ্ছে অনেক মহা মূল্যবান প্রাণ।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, ২০২০ সালে ৭৮ জন জনবল চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। এরমধ্যে চিকিৎসকের পদ ছিলো ২০ টি, সেবিকার পদ ছিলো ৩০ টি ও ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদ ছিলো ২৮ টি।
২০২১ সালে ৭৮ পদের মধ্যে ২৮ পদের অনুমোদন মেলে। এরমধ্যে ১২ জন চিকিৎসক, ১ জন নার্সিং সুপারভাইজার, ১২ জন সেবিকা ও ২ জন কার্ডিওগ্রাফার। এরমধ্যে কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ১ জন, জুনিয়র কনসালটেন্ট ১ জন, আবাসিক চিকিৎসক ১ জন, সহকারী রেজিস্ট্রার ১ জন, সহকারী সার্জন ও মেডিকেল অফিসার ৬ জন ও ইমাজেন্সি মেডিকেল অফিসার ২ জন।
এরমধ্যে ১ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট ,১ জন সহকারী রেজিস্ট্রার ও ১ জন রেডিওগ্রাফার যোগদান করেছেন। বাকি পদে জনবল সৃষ্টির ব্যাপারে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি বলে হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ নিশ্চিত করেছেন।
বর্তমানে ১২ পদের বিপরীতে মাত্র দুই জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ও মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক চিকিৎসকরা বাড়তি দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু যন্ত্রপাতির অভাবে তারা রোগীদের উন্নত চিকিৎসা প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রাথমিক ব্যবস্থাপত্রে সুস্থ না হলে রোগীকে অন্যত্র রেফার্ড করে দিচ্ছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনারি কেয়ার ইউনিটের ইকোকার্ডিও গ্রাম, ইটিটি, কার্ডিওয়াক মনিটর, কালার ডপলার, ডিজিটাল ইসিজি মেশিন অবস্থায় অকেজো হয়ে গেছে। ফলে বাড়তি টাকা খরচ করে বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রোগীদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হচ্ছে।
একাধিক রোগী ও স্বজনরা জানান, সকালে চিকিৎসকরা রাউন্ডে আসেন। কিন্তু বিকেলের পর থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসকের দেখা মেলে না। আর জরুরি বিভাগে সহকারি রেজিস্ট্রারের পরিবর্তে দায়িত্ব পালন করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক। জোড়াতালি দিয়েই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাব্ধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, জনবলের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে বারংবার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যন্ত্রপাতি নষ্টের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।


























