পাহাড়ের কোলে আয়তনে দেশের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। প্রতিটি ঋতুতে পাল্টে যায় গাছগাছালি পাহাড় পর্বতে ঘেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ। প্রকৃতির সাজে ভিন্ন রূপ ধারণ করায় যে কেউ দেখলে অনায়াসে বলবে সৌন্দর্যের রানি যেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
ফুল ফোটার ঋতু বললেই মনে আসে ঋতুরাজ বসন্তের কথা। আর গ্রীষ্ম মানেই দাবদাহ। গরমে হাঁসফাস করা এক অতিষ্ট সময়। কিন্তু এর মধ্যেই আশীর্বাদ হয়ে প্রকৃতিতে ফোটে নানা রঙের বাহারি ফুল। তেমনি গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদ্দুরে কৃষ্ণচূড়া, জারুল-সোনালুতে বর্ণিল রূপে সেজেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি। এসব ফুলের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য যেন হার মানায় ঋতুরাজকেও। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখে মনে হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের সঙ্গে ডালে ডালে যেন আগুন লেগেছে। কৃষ্ণচূড়ার লাল আবির গ্রীষ্মকে দিয়েছে এক অন্য মাত্রা। কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাল লাল ফুলে ছেয়ে গেছে। যে দিকে চোখ যায় যেন সবুজের মাঝে লালের মূর্ছনা।
যা প্রতিনিয়ত চবি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে সৌন্দর্যের বাহার। বিকেলের ডুবু ডুবু আলোয় ভেসে উঠে এক অপরূপ চিত্র। এ যেন পাহাড়ের গায়ে একখণ্ড সৌন্দর্যের স্বর্গ।
এদিকে, ঋতুচক্রের আবর্তনে কৃষ্ণচূড়া,সোনালু আর জারুল তার মোহনীয় সৌন্দর্য নিয়ে আবারও হাজির হয়েছে প্রকৃতিতে। প্রকৃতির এই অপরূপ সাজ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। তাইতো ২৩শ একরে কৃষ্ণচূড়া, জারুল আর সোনালু ফুলে প্রশান্তি ছড়াচ্ছে শিক্ষার্থীদের মনে।
এই বিদ্যাপীঠের প্রবেশ পথ রেল স্টেশনে ডালপালা মেলে প্রথমেই দেখা মিলবে গ্রীষ্মের লাল রঙে ফোটা কৃষ্ণচূড়ার। যা দেখে মনে হয় স্বাগত জানাচ্ছে সবাইকে। এছাড়াও আইইআর, আইন অনুষদ প্রাঙ্গণ, শহীদ আব্দুর রব হল, শাহ জালাল হল, সমাজবিজ্ঞান অনুষদসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেয়ে গেছে। দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য সবাইকে মোহিত করছে।
অন্যদিকে ক্যাম্পাসে গ্রীষ্মের তাবদাহে প্রাণের সজীবতা নিয়ে যেসব ফুল ফোটে তার মধ্যে সোনালু উল্লেখযোগ্য। হলুদ রঙে হিমু সাজার প্রতিযোগিতারও কমতি নেই। ক্যাম্পাসের আইন অনুষদ প্রাঙ্গণ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সক্রেটিস চত্ত্বর এবং কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ প্রাঙ্গণে সোনালু ফুলের দেখা মেলে।
ফুলে ফুলে সজ্জিত ক্যাম্পাস যেনো শিল্পীর রঙ তুলিতে আঁকা নয়ন জুড়ানো কোনো ছবি। তাইতো শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ জারুল, সোনালু ফুলের ছবি তুলে কাব্যিক ক্যাপশনে পোস্ট করছেন ফেসবুকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলেন, গ্রীষ্মের ঋতুতে ক্যাম্পাস আপন মনেই সেজেছে বর্ণিল রূপে। কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু ফুলগুলো যেন এক স্বর্গীয় রূপে সাজিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পথগুলো। ক্যাম্পাসে বাহারি রঙের ফুল ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতিতে ঘুরতে আসা বাহিরের মানুষের মুখে শোনা যায়, ক্যাম্পাসে জারুল, বকুল ও গ্রীষ্মকালীন ফুলগুলোর সৌন্দর্য মন কেড়ে নেয় তাদের। ফুলগুলোর ঘ্রাণ ও সৌন্দর্যে মন ও নয়ন জুড়িয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রায় প্রতিটি ঋতুতেই কিছু না কিছু ফুল তাদেরকে মুগ্ধ করে ছুটে নিয়ে আসে প্রকৃতির কাছে। এ রকম মনোমুগ্ধকর ফুলের রঙে মনে পড়ে ছেলেবেলার কথা, গ্রামের কথা, মায়ের কথা।


























