লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রিকশাচালকের পা ভেঙে দিলেন পুলিশ সদস্য। রিকশাচালকের পা ভেঙে দেওয়ার খবরে আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা করেন রিকশাচালকরা।
ঢাকা জেলার শিল্পাঞ্চল সাভারে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রিকশাচালকের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই পুলিশ সদস্য ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের এক বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এঘটনায় একটি আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে তারা।
শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১১টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গেন্ডা এলাকায় ফজলু নামের ওই রিকশাচালককে লোহার রড (পাইপ) দিয়ে দু’পায়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে তাকে সাভার সুপার ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
এদিকে রিকশাচালককে পুলিশ পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দেওয়ার খবর আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সকাল সোয়া ১১টার দিকে সাভার থানা রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করে রিকশাচালকরা।
আহত রিকশাচালক মো. ফজলু দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর থানার বনসাপুর এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে ফজলু। প্রায় ২২ বছর ধরে সাভারে বসবাস করছেন আহত রিকশা চালক ।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হলেন -ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের র্যাকার চালক মো. সোহেল রানা। শুক্রবার র্যাকারচালক সোহেল রানা ও মোস্তফা সড়কে দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলেন।
আহত রিকশাচালক ফজলু সবুজ বাংলা’কে বলেন, আমি দীর্ঘ বছর ধরে সাভারে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি । প্রতিদিনের নেয় আজও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেন দিয়ে যাচ্ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ করে পাকিজার সামনে থেকে মোটরসাইকেলযোগে র্যাকারচালক সোহেলসহ দুইজন ধাওয়া করেন। গেন্ডা বাস স্ট্যান্ডের কাছে গেলে আমাকে ধরে ফেলে তারা। আমাকে রিকশা থামাতে বললে সাইড করে থামাতে চাই। পরে তিনি একটি লোহার রড দিয়ে প্রথমে বাম পায়ে আঘাত করেন। আমি হাত দিয়ে প্রতিহত করতে চাইলে তিনি ডান পায়ে সেই লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেন। এরপর আমি রাস্তায় পড়ে যাই, আর উঠে দাঁড়াতে পারি নাই। পেটানো দেখে স্থানীয়রা এসে ওই পুলিশকে ঘিরে ধরে । তখন তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, আমি ভুল করেছি, এখন রিকশাচালককে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করতে দেন। পরে স্থানীয়রা চলে যায়। কিন্তু আমাকে অপর একটি রিকশায় তুলে দিয়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে তিনি চলে যান। আমার কথা হলো আমার রিকশা আমি চালিয়ে যাবো, কিন্তু আমার পা ভেঙে দিল কেন?
বিক্ষুব্ধ এক রিকশাচালক বলেন,আমরা গরিব মানুষ, ফজলুর ওপর বর্বরতা দেখে বিচারের দাবিতে সড়কে দাঁড়িয়েছি। র্যাকারের এই সোহেল ১ সপ্তাহ যেতে না যেতেই রিকশা ধরে দুই হাজার করে টাকা নেয়।
এঘটনায় অভিযুক্ত সোহেল রানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে র্যাকারচালক মোস্তফা বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই রিকশাচালককে মারিনি। তবে আমি আজ র্যাকারের দায়িত্বে রয়েছি। আমার নাম তো মোস্তফা, আহতের কাছে জানতে চাইলেই বলবে কে পা ভেঙে দিয়েছে। আমি তো ওর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আমি ডিউটিতে এসেই দেখি এসব ঘটনা। সোহেল ডিউটিতে এবং ঘটনাস্থলে ছিলেন। আমি বলেছি আগে চিকিৎসা করো পরে যা হওয়ার হবে। একথা বলে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
এ ব্যপারে ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক পুলিশের অ্যাডমিন হোসেন শহীদ চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
























