০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে  চিকিৎসক সংকটে দুর্ভোগ 

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট বিরাজ করছে। মাত্র ৪৯ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম। সেই অনুযায়ী রোগীর তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা একদমই কম। এতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ১০০ শয্যার জনবল দিয়ে ২৫০ শয্যার কার্যক্রম পরিচালনা করার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিগত দিনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন করে ৩২ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ সৃষ্টির জন্য মন্ত্রনালয়ে লিখিত আবেদন জানালেও কোন সাড়া মেলেনি।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি এই হাসপাতালে মোট চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৫৪টি। বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ৪৯ জন। ৫ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে ৩ জন সিনিয়র কনসালটেন্ট ও ২ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট। সেই ১০০ শয্যা হাসপাতালের জনবল দিয়ে চলছে আড়াই শয্যার কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা হলেও গড় রোগী ভর্তি থাকে ৫শ’ এর বেশি।  বাড়তি এসব রোগীরা চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন ওয়ার্ডের মেঝে আর বারান্দায় থেকে। ফলে ৪৯ জন চিকিৎসকের পক্ষে রোগীদের নিয়মানুযায়ী চিকিৎসাসেবা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এ হাসপাতালে বিগত দিনে যেসব উন্নত ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন তারা অধিকাংশই পদোন্নতি নিয়ে মেডিকেল কলেজে যোগদান করেছেন। বর্তমানে এসব চিকিৎসকরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করলেও কাজ করে থাকেন নিজেদের ইচ্ছামত।

সূত্র জানায়, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আলাদা প্রশাসন  হওয়ায় তারা ইচ্ছামত কাজ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। এদের প্রতি কড়াকড়ি আরোপ করতেও পারেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা যদি হাসপাতালে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতেন তাহলে চিকিৎসক সংকট অনেকটা কাটতো।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চিকিৎসক সংকট থাকার পরও বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নিয়মানুযায়ী দায়িত্ব পালন করেন না। ফলে রোগীদের জন্য শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়ায় সহকারি রেজিস্ট্রার ও মেডিকেল অফিসাররা। চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একদিকে চিকিৎসক সংকট অন্যদিকে, অবহেলায় হাসপাতালটিতে নামকাওয়াস্তে চলছে সেবা। একটু জটিল রোগী ভর্তি হলেই রেফার্ড করা হয় অন্য কোন হাসপাতালে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সহকারি রেজিস্ট্রার চিকিৎসক জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সঠিকভাবে হাসপাতালে না আসার কারণে তাদের ও মাঝে মধ্যেই ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে দিশেহারা হতে হয় তাদের। তবু সবকিছু তারা নিরবে সহ্য করছেন।

এই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুণ অর রশিদ জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। অল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে অনেক সময় রোগীদের কাঙ্খিত সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়না। নতুন পদ সৃষ্টি করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।
জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে  চিকিৎসক সংকটে দুর্ভোগ 

আপডেট সময় : ১১:৪৩:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট বিরাজ করছে। মাত্র ৪৯ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম। সেই অনুযায়ী রোগীর তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা একদমই কম। এতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ১০০ শয্যার জনবল দিয়ে ২৫০ শয্যার কার্যক্রম পরিচালনা করার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিগত দিনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন করে ৩২ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ সৃষ্টির জন্য মন্ত্রনালয়ে লিখিত আবেদন জানালেও কোন সাড়া মেলেনি।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি এই হাসপাতালে মোট চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৫৪টি। বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ৪৯ জন। ৫ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে ৩ জন সিনিয়র কনসালটেন্ট ও ২ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট। সেই ১০০ শয্যা হাসপাতালের জনবল দিয়ে চলছে আড়াই শয্যার কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা হলেও গড় রোগী ভর্তি থাকে ৫শ’ এর বেশি।  বাড়তি এসব রোগীরা চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন ওয়ার্ডের মেঝে আর বারান্দায় থেকে। ফলে ৪৯ জন চিকিৎসকের পক্ষে রোগীদের নিয়মানুযায়ী চিকিৎসাসেবা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এ হাসপাতালে বিগত দিনে যেসব উন্নত ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন তারা অধিকাংশই পদোন্নতি নিয়ে মেডিকেল কলেজে যোগদান করেছেন। বর্তমানে এসব চিকিৎসকরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করলেও কাজ করে থাকেন নিজেদের ইচ্ছামত।

সূত্র জানায়, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আলাদা প্রশাসন  হওয়ায় তারা ইচ্ছামত কাজ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। এদের প্রতি কড়াকড়ি আরোপ করতেও পারেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা যদি হাসপাতালে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতেন তাহলে চিকিৎসক সংকট অনেকটা কাটতো।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চিকিৎসক সংকট থাকার পরও বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নিয়মানুযায়ী দায়িত্ব পালন করেন না। ফলে রোগীদের জন্য শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়ায় সহকারি রেজিস্ট্রার ও মেডিকেল অফিসাররা। চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একদিকে চিকিৎসক সংকট অন্যদিকে, অবহেলায় হাসপাতালটিতে নামকাওয়াস্তে চলছে সেবা। একটু জটিল রোগী ভর্তি হলেই রেফার্ড করা হয় অন্য কোন হাসপাতালে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সহকারি রেজিস্ট্রার চিকিৎসক জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সঠিকভাবে হাসপাতালে না আসার কারণে তাদের ও মাঝে মধ্যেই ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে দিশেহারা হতে হয় তাদের। তবু সবকিছু তারা নিরবে সহ্য করছেন।

এই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুণ অর রশিদ জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। অল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে অনেক সময় রোগীদের কাঙ্খিত সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়না। নতুন পদ সৃষ্টি করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।