১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরেনসিক রিপোর্টে আটকে আছে অভিনেত্রী হিমুর মৃত্যুর রহস্য

◉পুলিশের হাতে ময়নাতদন্তসহ প্রয়োজনীয় রিপোর্ট
◉জামিনে মুক্ত বন্ধু জিয়া
◉আগামী ১ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য

ডিএনএ ও মোবাইল ফোনের ডিজিটাল ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য আটকে আছে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর রহস্য। রিপোর্ট দুটি হাতে পেলেই তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মামলার পর হিমুর বন্ধু জিয়াউদ্দিন ওরফে উরফিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তবে তিনি বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। এরই মধ্যে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের হাতে চলে এসেছে ময়নাতদন্তসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রতিবেদন। দুটি রিপোর্ট এখনো আটকে থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারছেন না তদন্তকারী কর্মকর্তা। তবে আগামী ১ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

 

 

মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ময়নাতদন্তসহ প্রয়োজনীয় রিপোর্ট এরই মধ্যে হাতে পেয়েছে পুলিশ। তবে হিমুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের ফরেনসিক টেস্টের জন্য সিআইডিতে দেওয়া হয়েছে, যার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। এছাড়া অভিনেত্রীর ডিএনএ রিপোর্টও সম্পন্ন হয়নি। এই রিপোর্টের জন্য এখনও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে পারেনি পুলিশ। এগুলো পেলেই হিমুর মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। কয়েক দফায় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১ জুলাই ধার্য করেছেন আদালত।

 

 

মামলার প্রতিবেদন দাখিলের বিলম্ব হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাব্বির হোসেন বলেন, মোবাইল ফোনের ডিজিটাল ফরেনসিক আর লাশের ডিএনএ রিপোর্ট দুইটি এখনও পাইনি। বাকি সবগুলো রিপোর্ট পেয়েছি। রিপোর্টগুলো হাতে পেলেই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে। তিনি বলেন, চেষ্টা করছি চলতি জুন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেব।

 

 

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ নভেম্বর বিকেলে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে হুমায়রা হিমুকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নেন তার বন্ধু উরফি ও মিহির। পরে বিকাল চারটা ৪৬ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সেদিন রাতে জিয়াউদ্দিন ওরফে উরফিকে আসামি করে মামলা রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন হিমুর খালা নাহিদ আক্তার।

 

মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে উরফি (৩৬) হিমুর বয়ফ্রেন্ড। ঘটনার ছয় মাস আগে থেকে তিনি নিয়মিত হিমুর বাসায় যাতায়াত করেন এবং মাঝে মধ্যে বাসায় রাত্রী যাপন করেন। ১ নভেম্বর বয়ফ্রেন্ড উরফির মোবাইল নম্বর ও ভিগো আইডি ব্লক দেন হিমু। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝামেলা হয়। ২ নভেম্বর বিকেল ৩টার দিকে রুফি বাসায় এসে কলিং বেল দিলে মিহির (হিমুর মেকাপম্যান) বাসার মেইন দরজা খুলে দিলে রুফি বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। মিহির তার রুমে চলে যায়। বিকাল ৫টার দিকে রুফি মিহিরের রুমে গিয়ে চিৎকার করতে করতে বলে হিমু আত্মহত্যা করেছে। তখন মিহির তাকে জিজ্ঞাসা করে আপনি তো রুমেই ছিলেন। তখন সে বাথরুমে ছিল বলে জানায়। ওই সময় হিমু রুমের সিলিং ফ্যানের হুকের সঙ্গে রশি লাগিয়ে ঝুলে ছিলেন। মিহির সঙ্গে সঙ্গে হিমুর রুমে ঢুকে গলায় রশি লাগানো ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পায়। রুমে থাকা দুটি কাঁচের গ্লাস ভাঙা অবস্থায় দেখতে পায়। তাৎক্ষণিক তারা দুজন হিমুকে নামিয়ে উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন রুফি হিমুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দুইটি নিয়ে কৌশলে চলে যান।

 

মামলার বাদী নাহিদ আক্তার দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, হিমু মৃত্যুর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো এর কোনো সুরাহা হয়নি। যাকে আসামি করেছি, তিনি জামিনে বেরিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলা তদন্তের স্বার্থে সবসময় তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করছেন। আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়ে হিমুকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে নাহিদ আক্তার বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

জনপ্রিয় সংবাদ

সোনারগাঁয়ে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করায় গুড়িয়ে দেয়া হয় দু’টি প্রতিষ্ঠান, একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

ফরেনসিক রিপোর্টে আটকে আছে অভিনেত্রী হিমুর মৃত্যুর রহস্য

আপডেট সময় : ০৫:১১:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪

◉পুলিশের হাতে ময়নাতদন্তসহ প্রয়োজনীয় রিপোর্ট
◉জামিনে মুক্ত বন্ধু জিয়া
◉আগামী ১ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য

ডিএনএ ও মোবাইল ফোনের ডিজিটাল ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য আটকে আছে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর রহস্য। রিপোর্ট দুটি হাতে পেলেই তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মামলার পর হিমুর বন্ধু জিয়াউদ্দিন ওরফে উরফিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তবে তিনি বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। এরই মধ্যে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের হাতে চলে এসেছে ময়নাতদন্তসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রতিবেদন। দুটি রিপোর্ট এখনো আটকে থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারছেন না তদন্তকারী কর্মকর্তা। তবে আগামী ১ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

 

 

মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ময়নাতদন্তসহ প্রয়োজনীয় রিপোর্ট এরই মধ্যে হাতে পেয়েছে পুলিশ। তবে হিমুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের ফরেনসিক টেস্টের জন্য সিআইডিতে দেওয়া হয়েছে, যার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। এছাড়া অভিনেত্রীর ডিএনএ রিপোর্টও সম্পন্ন হয়নি। এই রিপোর্টের জন্য এখনও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে পারেনি পুলিশ। এগুলো পেলেই হিমুর মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। কয়েক দফায় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১ জুলাই ধার্য করেছেন আদালত।

 

 

মামলার প্রতিবেদন দাখিলের বিলম্ব হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাব্বির হোসেন বলেন, মোবাইল ফোনের ডিজিটাল ফরেনসিক আর লাশের ডিএনএ রিপোর্ট দুইটি এখনও পাইনি। বাকি সবগুলো রিপোর্ট পেয়েছি। রিপোর্টগুলো হাতে পেলেই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে। তিনি বলেন, চেষ্টা করছি চলতি জুন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেব।

 

 

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ নভেম্বর বিকেলে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে হুমায়রা হিমুকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নেন তার বন্ধু উরফি ও মিহির। পরে বিকাল চারটা ৪৬ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সেদিন রাতে জিয়াউদ্দিন ওরফে উরফিকে আসামি করে মামলা রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন হিমুর খালা নাহিদ আক্তার।

 

মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে উরফি (৩৬) হিমুর বয়ফ্রেন্ড। ঘটনার ছয় মাস আগে থেকে তিনি নিয়মিত হিমুর বাসায় যাতায়াত করেন এবং মাঝে মধ্যে বাসায় রাত্রী যাপন করেন। ১ নভেম্বর বয়ফ্রেন্ড উরফির মোবাইল নম্বর ও ভিগো আইডি ব্লক দেন হিমু। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝামেলা হয়। ২ নভেম্বর বিকেল ৩টার দিকে রুফি বাসায় এসে কলিং বেল দিলে মিহির (হিমুর মেকাপম্যান) বাসার মেইন দরজা খুলে দিলে রুফি বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। মিহির তার রুমে চলে যায়। বিকাল ৫টার দিকে রুফি মিহিরের রুমে গিয়ে চিৎকার করতে করতে বলে হিমু আত্মহত্যা করেছে। তখন মিহির তাকে জিজ্ঞাসা করে আপনি তো রুমেই ছিলেন। তখন সে বাথরুমে ছিল বলে জানায়। ওই সময় হিমু রুমের সিলিং ফ্যানের হুকের সঙ্গে রশি লাগিয়ে ঝুলে ছিলেন। মিহির সঙ্গে সঙ্গে হিমুর রুমে ঢুকে গলায় রশি লাগানো ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পায়। রুমে থাকা দুটি কাঁচের গ্লাস ভাঙা অবস্থায় দেখতে পায়। তাৎক্ষণিক তারা দুজন হিমুকে নামিয়ে উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন রুফি হিমুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দুইটি নিয়ে কৌশলে চলে যান।

 

মামলার বাদী নাহিদ আক্তার দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, হিমু মৃত্যুর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো এর কোনো সুরাহা হয়নি। যাকে আসামি করেছি, তিনি জামিনে বেরিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলা তদন্তের স্বার্থে সবসময় তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করছেন। আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়ে হিমুকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে নাহিদ আক্তার বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।