➢ ২০২৩ সালে রেলে প্রাণহানি ৫১২, আহত ৪৭৫
➢ সারা দেশে ২৮৫৬টি ক্রসিংয়ের মধ্যে অনুমোদন নেই ১৩৬১টির
➢ ঢাকায় ৫৮টি লেভেলক্রসিংয়ের ২৩টি অরক্ষিত
❖ দুর্ঘটনা রোধে সংস্থাগুলোর সমন্বয় করে রেলওয়ের সিগন্যাল ও সাইরেন দু’টোই সচল করতে হবে : সহকারী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ সাইফুল নেওয়াজ, বুয়েট (এআরআই)
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতিদিনই কেউ না কেউ রেললাইনে হাঁটতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। অরক্ষিত লেভেলক্রসিং আর অসচেতনতায় ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। তারপরও নেই সচেতনতা। এমনইভাবে গতকাল সকালে রাজধানীর মহাখালী লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন আব্দুল আলিম (৫৫)। এমন বাস্তবতায় মৃত্যুফাঁদে পরিণত হচ্ছে দেশের অধিকাংশ লেভেলক্রসিং। রেলওয়ের তথ্যমতে, সারা দেশে ২ হাজার ৯৫৯ কিলোমিটার রেলপথে লেভেলক্রসিং আছে ২ হাজার ৮৫৬টি। এর মধ্যে বৈধ ১ হাজার ৪৯৫টি এবং অবৈধ ১ হাজার ৩৬১টি। কোনো গেটম্যান নেই ৯৬১টিতে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যমতে, ২০২৩ সালে সারা দেশে রেলে ৫১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪৭৫ জন যাত্রী-পথচারী। সংস্থাটি বলছে, গেটম্যান ও সিগন্যাল বারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের উদাসীনতায় রেললাইনে দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার বাড়ছে। বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ সাইফুলন নেওয়াজ বলেন, দুর্ঘটনারোধে সড়কসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করতে হবে। একই সঙ্গে রেললাইনে বিভিন্ন লেভেলক্রসিংয়ের সিগন্যাল বাতি ও রেলের সাইরেন দু’টোই সচল করতে হবে। তবেই দুর্ঘটনা কমে যেতে পারে। গতকাল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর রেল দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০০ মানুষ মারা যায়। রেলওয়ে আইন অনুযায়ী, রেলপথের দুই পাশে ১০ ফুট এলাকায় চলাচল আইনত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ওই সীমানার ভেতর কেউ প্রবেশ করলে তাকে গ্রেপ্তারের বিধান রয়েছে। এমনকি ওই সীমানায় গবাদিপশু প্রবেশ করলে তা বিক্রি করে এর অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিনা পরোয়ানায় দায়ী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা রাখে। রেললাইনে দুর্ঘটনার জন্য বেশ কিছু কারণ শনাক্ত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ। এসবের মধ্যে আছে, অসচেতনভাবে রেললাইন দিয়ে হাঁটাচলা ও পারাপার। রেল মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বৈঠকে দুর্ঘটনা রোধে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়ক রেলক্রসিংয়ের পরিবর্তে ফ্লাইওভার, ওভারপাস, আন্ডারপাস নির্মাণ, অননুমোদিত রেলক্রসিং বন্ধ করার কথা বলা হয়।
সূত্র মতে, রাজধানীসহ আশপাশের ৩৫ কিলোমিটার রেলপথে ৫৮টি লেভেলক্রসিংয়ের ২৩টি অরক্ষিত ও অননুমোদিত। এর মধ্যে কোনোটিতে নেই গেটম্যান ও সিগন্যাল বার। রেলওয়ের সূত্র মতে, সারা দেশে ২ হাজার ৯৫৯ কিলোমিটার রেলপথে লেভেলক্রসিং আছে ২ হাজার ৮৫৬টি। এর মধ্যে বৈধ ১ হাজার ৪৯৫টি এবং অবৈধ ১ হাজার ৩৬১টি। কোনো গেটম্যান নেই ৯৬১টিতে। এসব ক্রসিংয়ের বেশির ভাগ তৈরি হয়েছে এলজিইডি, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তার কারণে। সূত্র জানায়, গত পনেরো বছরে এসব স্থানে প্রায় পাঁচ হাজার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন অন্তত ৪১৯ জন। আহত হয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার।























