নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় বিএনপির কালো পতাকা কর্মসূচিতে পদবঞ্চিতদের কর্তৃক ককটেল বিস্ফোরণ, যানবাহন ভাঙচুর, জনমনে আতঙ্ক ও ত্রাস সৃষ্টিসহ সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। রাতে মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ৩৭ জনকে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও দুইশো থেকে তিনশো জনকে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিছুর রহমান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে গত বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিলের উদ্দেশে জড়ো হতে থাকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। নেতৃবৃন্দের বক্তব্য চলাকালে আগের দিনের কমিটির বিষয়ে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। এ সময় দু’পক্ষ মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের ওপর হামলা চালায়। তাদের মধ্যে মারামারি ও ধাওয়া পালটা ধাওয়া হয়। পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা এলোপাথাড়ি লাঠিপেটা করে ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন এবং মাইক ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করেন তারা। নগরীর প্রধান সড়কে একটি মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত একটি স্কুটার ও অটোরিকশাসহ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে তাণ্ডব চালায় হামলাকারীরা। প্রেসক্লাব চত্বর ও আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এ সময় সাংবাদিকরা এর ভিডিও ও ছবি ধারণ করতে গেলে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পদবঞ্চিত কর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক লাঠিপেটা করে।
এতে সময় টেলিভিশনের জেলা ভিডিও জার্নালিস্ট আরিফ হোসেন, একাত্তর টিভির স্থানীয় ক্যামেরাপার্সন জামিল হোসেন উল্লাস ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার ফটো সাংবাদিক মেহেদি হাসান সজীব তাদের হামলায় গুরুতর আহত হন। এছাড়া পথচারীসহ আরও অন্তত ৭-৮ জন বিএনপির নেতাকর্মী আহত হন। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলে এই তাণ্ডব। পরে পুলিশ টিয়ার সেল ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করলে বিকেল পাঁচটায় পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে আহত সাংবাদিকদের নগরীর খানপুর এলাকায় ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘থানার উপপরিদর্শক মফিজুর রহমান বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিমের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’


























