১০:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে হচ্ছে ৫০০ শষ্যার হাসপাতাল

  • সবুজ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০১:৩১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 121
এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন 
অবশেষে দীর্ঘ ১৫ বছর পর  ৫’শ শয্যার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়নের দুয়ার খুলে গেল।,জেলার ২৫  লাখ মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবায় আসছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫’শ শয্যার হাসপাতাল বাস্তবায়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার হাসাপাতাল বাস্তবায়নে আর কোন বাঁধা রইলো না। হাসপাতালটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান এবং প্রশাসনিক কর্মকান্ড ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ক্লিনিক্যাল প্রশিক্ষণের ভূগান্তি যেমন কমবে তেমনি আরো উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবে কক্সবাজারের প্রায় ২৫ লাখ মানুষ। কাটবে শিক্ষক ও কর্মচারী সংকটও।
মঙ্গলবার একনেকে পাশ হওয়া প্রকল্পের নাম ‘অ্যাস্টাবলিশমেন্ট অব ৫০০ বেডেড হসপিটাল অ্যান্ড এনসিলারি ভবন ইন যশোর, কক্সবাজার, পাবনা ও নোয়াখালী  আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল’।
এদিকে একনেকে প্রকল্প অনুমোদনের খবরে খুশি শিক্ষার্থী এবং কক্সবাজারের সাধারণ মানুষ। তারা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু কায়ছার  বলেন, ২০০৮ সালে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ২০১৭ সালে স্থায়ী ক্যাম্পাস পেয়েছি। হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হলে শিক্ষক ও ল্যাব টেকনিশিয়ান সংকট কমে আসবে বলে মনে করছি। তবে হোস্টেল সম্প্রসারণ, অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ এবং পানি সমস্যা দুর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ইন্টার্ণ শিক্ষার্থী রাফসানা বলেন, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল থেকে মেডিকেল কলেজের দুরুত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। হাসপাতাল বাস্তবায়ন হলে ইন্টার্ন প্রশিক্ষণের ভূগান্তির কমার পাশাপাশি পর্যাপ্ত সেবা পাবে কক্সবাজারের মানুষ।
কক্সবাজার চেম্বার অফ কামার্স এন্ড ইডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা  বলেন, নি:সন্দেহে কক্সবাজারের মানুষের জন্য এটি খুশির খবর। তবে আমরা চাই নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হোক।
কবি মানিক বৈরাগী বলেন, মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য আমরা আন্দোলন ও লেখালেখি করে আসছি। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রকল্প একনেকে পাশ হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কক্সবাজারে একটি অত্যাধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে পর্যটন নগরীর স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ উপহার। পর্যটন নগরীর স্বাস্থ্য সেবায় এটি মাইলফলক হবে বলে আশা করা যায়। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ দরিয়া নগরে স্থায়ী হওয়ায় জেলাবাসীর পক্ষ থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
কমেক অধ্যক্ষ ডা. ফরহাদ হোসেন বলেন, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সঙ্গে সংযুক্ত হবে ৫০০ শয্যার একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল এর চেয়ে ভাল খবর আর কি হতে পারে। এতদিন কমেকের নিজস্ব হাসপাতাল না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে প্রতিদিন সকাল-বিকাল ৭/৮ কিলোমিটার দুরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে গিয়ে ক্লাস করতে হয় বলে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা ভাল পরিবেশ পাবে এবং সময়ও বাঁচবে।
তিনি বলেন, হাসপাতাল আর কলেজ ভিন্ন বিষয়। যেহেতু হাসপাতাল হবে সেহেতু সরকার সবধরনের সুযোগ সুবিধা, জনবল নিয়োগ দিবেন। আশা করি সমস্যা হওয়ার কথা না। প্রশ্ন হচ্ছে একনেকে পাশ হওয়ার পর কখন কার্যক্রম শুরু হয় সেটি এখন দেখার বিষয়।
কমেক সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেক ২০০৮ সালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে অস্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রূপ দিতে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজার জানারঘোনায় ৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে। মনোরম ক্যাম্পাসে ১০ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন, ২টি ছাত্রাবাস ও খেলার মাঠসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু  করে। দীর্ঘদিন পর মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ৫শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি বাস্তবায়নের জন্য একনেকে প্রকল্প অনুমোদন হয়। এ কলেজে এক বছর মেয়াদি হাতে-কলমে শিখনসহ (ইন্টার্নশিপ) স্নাতক পর্যায়ের পাঁচ বছর মেয়াদি ‘এমবিবিএস’ শিক্ষাক্রম চালু রয়েছে। বর্তমানে এ মেডিকেলে ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
জনপ্রিয় সংবাদ

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে হচ্ছে ৫০০ শষ্যার হাসপাতাল

আপডেট সময় : ০১:৩১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন 
অবশেষে দীর্ঘ ১৫ বছর পর  ৫’শ শয্যার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়নের দুয়ার খুলে গেল।,জেলার ২৫  লাখ মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবায় আসছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫’শ শয্যার হাসপাতাল বাস্তবায়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার হাসাপাতাল বাস্তবায়নে আর কোন বাঁধা রইলো না। হাসপাতালটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান এবং প্রশাসনিক কর্মকান্ড ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ক্লিনিক্যাল প্রশিক্ষণের ভূগান্তি যেমন কমবে তেমনি আরো উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবে কক্সবাজারের প্রায় ২৫ লাখ মানুষ। কাটবে শিক্ষক ও কর্মচারী সংকটও।
মঙ্গলবার একনেকে পাশ হওয়া প্রকল্পের নাম ‘অ্যাস্টাবলিশমেন্ট অব ৫০০ বেডেড হসপিটাল অ্যান্ড এনসিলারি ভবন ইন যশোর, কক্সবাজার, পাবনা ও নোয়াখালী  আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল’।
এদিকে একনেকে প্রকল্প অনুমোদনের খবরে খুশি শিক্ষার্থী এবং কক্সবাজারের সাধারণ মানুষ। তারা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু কায়ছার  বলেন, ২০০৮ সালে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ২০১৭ সালে স্থায়ী ক্যাম্পাস পেয়েছি। হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হলে শিক্ষক ও ল্যাব টেকনিশিয়ান সংকট কমে আসবে বলে মনে করছি। তবে হোস্টেল সম্প্রসারণ, অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ এবং পানি সমস্যা দুর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ইন্টার্ণ শিক্ষার্থী রাফসানা বলেন, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল থেকে মেডিকেল কলেজের দুরুত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। হাসপাতাল বাস্তবায়ন হলে ইন্টার্ন প্রশিক্ষণের ভূগান্তির কমার পাশাপাশি পর্যাপ্ত সেবা পাবে কক্সবাজারের মানুষ।
কক্সবাজার চেম্বার অফ কামার্স এন্ড ইডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা  বলেন, নি:সন্দেহে কক্সবাজারের মানুষের জন্য এটি খুশির খবর। তবে আমরা চাই নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হোক।
কবি মানিক বৈরাগী বলেন, মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য আমরা আন্দোলন ও লেখালেখি করে আসছি। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রকল্প একনেকে পাশ হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কক্সবাজারে একটি অত্যাধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে পর্যটন নগরীর স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ উপহার। পর্যটন নগরীর স্বাস্থ্য সেবায় এটি মাইলফলক হবে বলে আশা করা যায়। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ দরিয়া নগরে স্থায়ী হওয়ায় জেলাবাসীর পক্ষ থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
কমেক অধ্যক্ষ ডা. ফরহাদ হোসেন বলেন, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সঙ্গে সংযুক্ত হবে ৫০০ শয্যার একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল এর চেয়ে ভাল খবর আর কি হতে পারে। এতদিন কমেকের নিজস্ব হাসপাতাল না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে প্রতিদিন সকাল-বিকাল ৭/৮ কিলোমিটার দুরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে গিয়ে ক্লাস করতে হয় বলে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা ভাল পরিবেশ পাবে এবং সময়ও বাঁচবে।
তিনি বলেন, হাসপাতাল আর কলেজ ভিন্ন বিষয়। যেহেতু হাসপাতাল হবে সেহেতু সরকার সবধরনের সুযোগ সুবিধা, জনবল নিয়োগ দিবেন। আশা করি সমস্যা হওয়ার কথা না। প্রশ্ন হচ্ছে একনেকে পাশ হওয়ার পর কখন কার্যক্রম শুরু হয় সেটি এখন দেখার বিষয়।
কমেক সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেক ২০০৮ সালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে অস্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রূপ দিতে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজার জানারঘোনায় ৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে। মনোরম ক্যাম্পাসে ১০ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন, ২টি ছাত্রাবাস ও খেলার মাঠসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু  করে। দীর্ঘদিন পর মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ৫শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি বাস্তবায়নের জন্য একনেকে প্রকল্প অনুমোদন হয়। এ কলেজে এক বছর মেয়াদি হাতে-কলমে শিখনসহ (ইন্টার্নশিপ) স্নাতক পর্যায়ের পাঁচ বছর মেয়াদি ‘এমবিবিএস’ শিক্ষাক্রম চালু রয়েছে। বর্তমানে এ মেডিকেলে ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।