০৪:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষাঙ্গনে ধর্মঘটের ডাক কোটাবিরোধীদের

◉ রাজধানীসহ বিভিন্ন সড়ক-রেল অবরোধ
◉ কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল

সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ অবস্থান ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গত মঙ্গলবার থেকে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা প্রথা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার ৬ ঘন্টা অবরোধের পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে শাহাবাগ ছাড়েন। শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শুক্রবার অনলাইন-অফলাইনে বৈঠক, শনিবার বিকাল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি এবং রোববার সব। সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে এ ঘোষণা দেন দলনিরপেক্ষ ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সদস্যসচিব ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, হাইকোর্ট শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রহসন করছে। তারা কি এমন পরিপত্র জারি করলো যে, ৫ বছরের মধ্যে সেটা আবার বাতিল করতে হচ্ছে? আমরা হাইকোর্টের বিরুদ্ধে না। তারা নিজেদের মতো কাজ করে যাবে কিন্তু আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করে ঘরে ফিরব।’

তিনি আরও বলেন, আমরা দুপুর থেকেই শাহবাগ মোড় অবরোধের পর আজকের মতো কর্মসূচি শেষ করছি। আজকে আমরা ফিরে যাচ্ছি কিন্তু আগামীতে আরও বেশি শক্তি সঞ্চয় করে রাজপথে নামবো। আজকে সারা দেশে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আমরা আশা করি, আমাদের দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন।’ এসময় তিনি এই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

এর আগে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল (নিয়মিত আপিল) করতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি মামলার শুনানি মুলতবি রাখা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। শুনানিতে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে বলেন, আপাতত হাইকোর্টের রায় যেভাবে আছে, সেভাবে থাকুক। রায় প্রকাশ হলে আপনারা নিয়মিত আপিল দায়ের করেন। আমরা শুনবো। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু।

এর আগে বেলা ১১টার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে মিছিল ও স্লোগান নিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অবস্থান নেন তারা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর-টিএসসি হয়ে বেলা সোয়া ১২টায় শাহবাগ মোড়ে জড় হন তারা। তাদের অবরোধের পর ঢাকা কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন অবরোধ কর্মসূচিতে। এসময় শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে আশপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে শাহবাগ অচল হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকার পর অবরোধ তুলে নিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

অবরোধের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। বিশেষ করে শাহবাগ হয়ে রাজধানীর যেসব এলাকায় যানবাহন চলাচল করত সেসব এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, হাতিরপুল, সেন্ট্রাল রোডে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার পর যানজট তীব্র আকার ধারণ করে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) সোহেল রানা বলেন, যানজট যাতে সৃষ্টি না হয় আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করছি। শাহবাগ থেকে শুরু হওয়া তিন রাস্তায় ডাইভারশন করে দেওয়া হয়েছে। তবে রাস্তায় গাড়ির চাপ রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমরা কাজ করছি। এদিকে শাহবাগ ছাড়াও পুরান ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টা থেকে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড় অবরোধ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। এতে সদরঘাট ও ধোলাইখাল সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঘন্টাখানেক পর অবরোধ তুলে নেন তারা। খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। চতুর্থ দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হাটহাজারী-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের অবরোধ থেকে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন মুক্ত হলে এই রুটে যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। এর আগে এদিন দুপুর সোয়া ১টার দিকে বাকৃবি জব্বারের মোড় সংলগ্ন রেললাইনে এই ট্রেন অবরোধ করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা।

গত মঙ্গলবার থেকে চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলোÑ ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ছাড়া); সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষাঙ্গনে ধর্মঘটের ডাক কোটাবিরোধীদের

আপডেট সময় : ০৯:২২:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

◉ রাজধানীসহ বিভিন্ন সড়ক-রেল অবরোধ
◉ কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল

সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ অবস্থান ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গত মঙ্গলবার থেকে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা প্রথা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার ৬ ঘন্টা অবরোধের পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে শাহাবাগ ছাড়েন। শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শুক্রবার অনলাইন-অফলাইনে বৈঠক, শনিবার বিকাল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি এবং রোববার সব। সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে এ ঘোষণা দেন দলনিরপেক্ষ ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সদস্যসচিব ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, হাইকোর্ট শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রহসন করছে। তারা কি এমন পরিপত্র জারি করলো যে, ৫ বছরের মধ্যে সেটা আবার বাতিল করতে হচ্ছে? আমরা হাইকোর্টের বিরুদ্ধে না। তারা নিজেদের মতো কাজ করে যাবে কিন্তু আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করে ঘরে ফিরব।’

তিনি আরও বলেন, আমরা দুপুর থেকেই শাহবাগ মোড় অবরোধের পর আজকের মতো কর্মসূচি শেষ করছি। আজকে আমরা ফিরে যাচ্ছি কিন্তু আগামীতে আরও বেশি শক্তি সঞ্চয় করে রাজপথে নামবো। আজকে সারা দেশে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আমরা আশা করি, আমাদের দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন।’ এসময় তিনি এই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

এর আগে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল (নিয়মিত আপিল) করতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি মামলার শুনানি মুলতবি রাখা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। শুনানিতে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে বলেন, আপাতত হাইকোর্টের রায় যেভাবে আছে, সেভাবে থাকুক। রায় প্রকাশ হলে আপনারা নিয়মিত আপিল দায়ের করেন। আমরা শুনবো। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু।

এর আগে বেলা ১১টার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে মিছিল ও স্লোগান নিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অবস্থান নেন তারা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর-টিএসসি হয়ে বেলা সোয়া ১২টায় শাহবাগ মোড়ে জড় হন তারা। তাদের অবরোধের পর ঢাকা কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন অবরোধ কর্মসূচিতে। এসময় শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে আশপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে শাহবাগ অচল হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকার পর অবরোধ তুলে নিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

অবরোধের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। বিশেষ করে শাহবাগ হয়ে রাজধানীর যেসব এলাকায় যানবাহন চলাচল করত সেসব এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, হাতিরপুল, সেন্ট্রাল রোডে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার পর যানজট তীব্র আকার ধারণ করে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) সোহেল রানা বলেন, যানজট যাতে সৃষ্টি না হয় আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করছি। শাহবাগ থেকে শুরু হওয়া তিন রাস্তায় ডাইভারশন করে দেওয়া হয়েছে। তবে রাস্তায় গাড়ির চাপ রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমরা কাজ করছি। এদিকে শাহবাগ ছাড়াও পুরান ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টা থেকে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড় অবরোধ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। এতে সদরঘাট ও ধোলাইখাল সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঘন্টাখানেক পর অবরোধ তুলে নেন তারা। খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। চতুর্থ দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হাটহাজারী-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের অবরোধ থেকে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন মুক্ত হলে এই রুটে যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। এর আগে এদিন দুপুর সোয়া ১টার দিকে বাকৃবি জব্বারের মোড় সংলগ্ন রেললাইনে এই ট্রেন অবরোধ করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা।

গত মঙ্গলবার থেকে চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলোÑ ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ছাড়া); সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।