০৭:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ

চট্টগ্রাম নগরীর সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। যার কারণে চট্টগ্রাম স্টেশনে আটকা পড়েছে কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেস ও ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বুধবার (১০ জুলাই) নগরীর দেওয়ানহাট ওভার ব্রিজের নিচে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও চবি অধিভুক্ত কলেজসমূহের শিক্ষার্থীরা।

মো. শাকিল (৩৩) পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। থাকেন চট্টগ্রাম কর্ণফুলী ক্রসিং এলাকায়৷ সেখানেই তাঁর দোকান। জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা যেতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাড়ে ১১টার দিকে স্টেশনে আসি। তখনই টিকিট নিই। তবে কাউন্টারে শুধু জানিয়েছে আন্দোলন চলছে; দেরি হবে বা শিডিউল বিপর্যয় হবে সেটা বলেননি। এখন ঠিক সময়ে ঢাকা যেতে না পারলে কাজটাও আর হবে না।

নগরীর লালখান বাজারে নিউ মার্কেট থেকে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী জাহিদ বলেন, ‘টাইগারপাস মোড়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে গাড়ি ঘুরিয়ে সিআরবি হয়ে আসছে। সেদিকেও ধীরে ধীরে যানজট বাড়ছে।’

দেওয়ানহাট মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘একাত্তরের পথ ধরো, বাংলা ব্লকেড সফল করো’, ব্লকেড ব্লকেড, বাংলা ব্লকেড’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর চবি সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, চট্টগ্রামে সকাল সন্ধ্যা সড়ক ও রেলপথ অবরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের অবরোধ কার্যক্রম সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলবে। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে এর চাইতে কঠোর কর্মসূচি আসবে সামনে।

জানতে চাইলে ষোলশহর রেল স্টেশন মাস্টার মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, ট্রেন দেওয়ান হাট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দাবি করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে সেটি তাদের হাতে নেই। কর্তৃপক্ষ নির্দেশ না পাওয়ায় তারা অনুমতি দিতে পারেননি।

চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কারণে বেশ কয়েকটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। সর্বশেষ ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর সাড়ে ১২টায় ছাড়ার কথা থাকলেও এখনো স্টেশন ছেড়ে যায়নি। শিক্ষার্থীরা না সরা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে না।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৬ জুন থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে, মানববন্ধন, সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মহাসড়ক অবরোধের মত কর্মসূচি পালন করেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি হলো- সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ

আপডেট সময় : ০৬:২৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

চট্টগ্রাম নগরীর সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। যার কারণে চট্টগ্রাম স্টেশনে আটকা পড়েছে কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেস ও ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বুধবার (১০ জুলাই) নগরীর দেওয়ানহাট ওভার ব্রিজের নিচে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও চবি অধিভুক্ত কলেজসমূহের শিক্ষার্থীরা।

মো. শাকিল (৩৩) পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। থাকেন চট্টগ্রাম কর্ণফুলী ক্রসিং এলাকায়৷ সেখানেই তাঁর দোকান। জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা যেতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাড়ে ১১টার দিকে স্টেশনে আসি। তখনই টিকিট নিই। তবে কাউন্টারে শুধু জানিয়েছে আন্দোলন চলছে; দেরি হবে বা শিডিউল বিপর্যয় হবে সেটা বলেননি। এখন ঠিক সময়ে ঢাকা যেতে না পারলে কাজটাও আর হবে না।

নগরীর লালখান বাজারে নিউ মার্কেট থেকে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী জাহিদ বলেন, ‘টাইগারপাস মোড়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে গাড়ি ঘুরিয়ে সিআরবি হয়ে আসছে। সেদিকেও ধীরে ধীরে যানজট বাড়ছে।’

দেওয়ানহাট মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘একাত্তরের পথ ধরো, বাংলা ব্লকেড সফল করো’, ব্লকেড ব্লকেড, বাংলা ব্লকেড’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর চবি সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, চট্টগ্রামে সকাল সন্ধ্যা সড়ক ও রেলপথ অবরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের অবরোধ কার্যক্রম সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলবে। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে এর চাইতে কঠোর কর্মসূচি আসবে সামনে।

জানতে চাইলে ষোলশহর রেল স্টেশন মাস্টার মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, ট্রেন দেওয়ান হাট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দাবি করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে সেটি তাদের হাতে নেই। কর্তৃপক্ষ নির্দেশ না পাওয়ায় তারা অনুমতি দিতে পারেননি।

চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কারণে বেশ কয়েকটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। সর্বশেষ ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর সাড়ে ১২টায় ছাড়ার কথা থাকলেও এখনো স্টেশন ছেড়ে যায়নি। শিক্ষার্থীরা না সরা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে না।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৬ জুন থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে, মানববন্ধন, সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মহাসড়ক অবরোধের মত কর্মসূচি পালন করেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি হলো- সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।