০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ফেসবুক ও টিকটকের কাছে উসকানিমূলক আচরণের জবাব চাইবে সরকার

ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে বিটিআরসির নির্দেশ

ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিটিআরসির এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড ইন্সপেকশন ডিরেক্টরেট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এসময় এ বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক কর্মকর্তা জানান, সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সচল করা হয়েছে। এখন ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক করার বিষয়ে একমত হয়েছেন প্রতিমন্ত্রী ও বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সে নির্দেশনা আইআইজি অপারেটরদের জানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
পাশাপাশি গুগলের ক্যাশ সার্ভার চালুর নির্দেশনাও দিয়েছে বিটিআরসি। ফলে এখন থেকে ইউটিউব ও গুগলে সার্ভিস পেতে আর কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না ব্যবহারকারীদের।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে গত ১৮ জুলাই রাত থেকে দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। পাঁচদিন পর ২৩ জুলাই রাতে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করে সরকার। বুধবার রাত থেকে সব জায়গায় ব্রডব্যান্ড চালু করা হয়।
বিটিআরসি জানিয়েছে, আগামী রবি বা সোমবার মোবাইল ইন্টারনেট চালু হতে পারে। তবে ব্রডব্যান্ড চালু হলেও ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটের স্বাভাবিক গতি পাচ্ছিলেন না। এরপর গুগলের ক্যাশ চালু ও ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো আপাতত বন্ধই থাকছে। তবে ভিপিএন ব্যবহার করে বহু ব্যবহারকারী এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন।
অন্যদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও উসকানিমূলক প্রচারণা ঠেকাতে সহায়তা করেনি ফেসবুক। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষ থেকে দফায় দফায় ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউবকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও সহিংসতামূলক কনটেন্ট ব্লক করেনি এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
নিজেদের প্ল্যাটফর্মে গুজব, অপপ্রচার, উসকানি ও সহিংসতামূলক প্রচার-প্রচারণা ঠেকাতে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে, ফেসবুক-টিকটক কর্তৃপক্ষের কাছে তার জবাব চাইবে বিটিআরসি। তারা জবাব না দিলে অথবা তা সন্তোষজনক না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি।
এ প্রসঙ্গে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, রোববার বিটিআরসির সঙ্গে বসে ঠিক করা হবে ফেসবুক ও টিকটক কর্তৃপক্ষকে কীভাবে, কী ধরনের চিঠি দেওয়া হবে। বার্তা পাঠানোর পর তাদের তিনদিনের মধ্যে বিটিআরসিতে হাজির হয়ে জবাব দিতে বলা হবে।
কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে জানতে চাইলে পলক বলেন, তাদের জবাব পেলে আমরা তা বিশ্লেষণ করে দেখবো। কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কী রেসট্রিকশন (নিষেধাজ্ঞা) দেওয়া হবে, সেটা তখন ভাবা হবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া; বিশেষ করে ফেসবুক ও টিকটকের কোনো জবাবদিহি নেই। না বাংলাদেশ সরকারের কাছে আছে, না তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে আছে। ফেসবুক-টিকটক তাদের যে প্রাইভেসি সেটিংস কিংবা পলিসি গাইডলাইন যেগুলো দিয়ে রাখে, এগুলো একেবারেই তারা নিজেরাও মানে না।
তিনি বলেন, তারা একেক দেশের জন্য একেক ধরনের আচরণ করে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপপ্রচার হচ্ছে, সে বিষয়ে তাদের এক ধরনের অবস্থান। ইসরায়েল যে ফিলিস্তিনের ওপর নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে, সেখানে ফেসবুক বা অন্যান্য যে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম আছে, তাদের ভূমিকাটা কী?
তিনি বলেন, অথচ আমাদের এখানে র‌্যাবের গাড়ি ভাঙচুর করছে, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করছে, পুলিশকে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীরা হত্যা করছে; সেই ভিডিওগুলো ছড়িয়ে উসকানি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো ব্লক করা হচ্ছে না। যে গ্রুপগুলো থেকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য-উপাত্ত, ভয়ানক হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো বিটিআরসি থেকে বারবার বলার পরও তারা ব্লক করছে না।

জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

ফেসবুক ও টিকটকের কাছে উসকানিমূলক আচরণের জবাব চাইবে সরকার

ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে বিটিআরসির নির্দেশ

আপডেট সময় : ০৯:২৯:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪

ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিটিআরসির এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড ইন্সপেকশন ডিরেক্টরেট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এসময় এ বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক কর্মকর্তা জানান, সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সচল করা হয়েছে। এখন ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক করার বিষয়ে একমত হয়েছেন প্রতিমন্ত্রী ও বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সে নির্দেশনা আইআইজি অপারেটরদের জানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
পাশাপাশি গুগলের ক্যাশ সার্ভার চালুর নির্দেশনাও দিয়েছে বিটিআরসি। ফলে এখন থেকে ইউটিউব ও গুগলে সার্ভিস পেতে আর কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না ব্যবহারকারীদের।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে গত ১৮ জুলাই রাত থেকে দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। পাঁচদিন পর ২৩ জুলাই রাতে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করে সরকার। বুধবার রাত থেকে সব জায়গায় ব্রডব্যান্ড চালু করা হয়।
বিটিআরসি জানিয়েছে, আগামী রবি বা সোমবার মোবাইল ইন্টারনেট চালু হতে পারে। তবে ব্রডব্যান্ড চালু হলেও ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটের স্বাভাবিক গতি পাচ্ছিলেন না। এরপর গুগলের ক্যাশ চালু ও ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো আপাতত বন্ধই থাকছে। তবে ভিপিএন ব্যবহার করে বহু ব্যবহারকারী এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন।
অন্যদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও উসকানিমূলক প্রচারণা ঠেকাতে সহায়তা করেনি ফেসবুক। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষ থেকে দফায় দফায় ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউবকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও সহিংসতামূলক কনটেন্ট ব্লক করেনি এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
নিজেদের প্ল্যাটফর্মে গুজব, অপপ্রচার, উসকানি ও সহিংসতামূলক প্রচার-প্রচারণা ঠেকাতে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে, ফেসবুক-টিকটক কর্তৃপক্ষের কাছে তার জবাব চাইবে বিটিআরসি। তারা জবাব না দিলে অথবা তা সন্তোষজনক না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি।
এ প্রসঙ্গে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, রোববার বিটিআরসির সঙ্গে বসে ঠিক করা হবে ফেসবুক ও টিকটক কর্তৃপক্ষকে কীভাবে, কী ধরনের চিঠি দেওয়া হবে। বার্তা পাঠানোর পর তাদের তিনদিনের মধ্যে বিটিআরসিতে হাজির হয়ে জবাব দিতে বলা হবে।
কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে জানতে চাইলে পলক বলেন, তাদের জবাব পেলে আমরা তা বিশ্লেষণ করে দেখবো। কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কী রেসট্রিকশন (নিষেধাজ্ঞা) দেওয়া হবে, সেটা তখন ভাবা হবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া; বিশেষ করে ফেসবুক ও টিকটকের কোনো জবাবদিহি নেই। না বাংলাদেশ সরকারের কাছে আছে, না তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে আছে। ফেসবুক-টিকটক তাদের যে প্রাইভেসি সেটিংস কিংবা পলিসি গাইডলাইন যেগুলো দিয়ে রাখে, এগুলো একেবারেই তারা নিজেরাও মানে না।
তিনি বলেন, তারা একেক দেশের জন্য একেক ধরনের আচরণ করে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপপ্রচার হচ্ছে, সে বিষয়ে তাদের এক ধরনের অবস্থান। ইসরায়েল যে ফিলিস্তিনের ওপর নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে, সেখানে ফেসবুক বা অন্যান্য যে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম আছে, তাদের ভূমিকাটা কী?
তিনি বলেন, অথচ আমাদের এখানে র‌্যাবের গাড়ি ভাঙচুর করছে, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করছে, পুলিশকে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীরা হত্যা করছে; সেই ভিডিওগুলো ছড়িয়ে উসকানি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো ব্লক করা হচ্ছে না। যে গ্রুপগুলো থেকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য-উপাত্ত, ভয়ানক হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো বিটিআরসি থেকে বারবার বলার পরও তারা ব্লক করছে না।