# পুলিশের আরও ৩৩ কর্মকর্তাকে বদলি
# যেসব পুলিশ কাজে যোগ দেয়নি, তারা অপরাধী
# পূজা উৎযাপন নির্বিঘ্ন করতে সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে
# পাহাড়ে শান্তি নিশ্চিতে ব্যবস্থা, মাদকের গডফাদারদের শাস্তি নিশ্চিত করব
এবার পুলিশ রিফর্মের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই মধ্যে কমিটি কাজ করছে। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবে সরকার। এর বাইরেও এবার পুলিশ, বিজিবি ও আনসারে আসছে বড় নিয়োগ। কনস্টেবল পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। আজকালের মধ্যে এসআই নিয়োগেরও বিজ্ঞপ্তি যাবে। আনসার ও বিজিবিতেও নতুন নিয়োগের ব্যবস্থা করছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা শেষে পুলিশ রিফর্ম নিয়ে করা এক প্রশ্নে জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসব কথা জানান। এদিকে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার আরও ৩৩ কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৩৩ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ পুলিশ শাখা-১ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ পদায়ন করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন উপ-সচিব আবু সাঈদ। এই কর্মকর্তাদের এসবি, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, সারদা পুলিশ একাডেমি, ট্যুরিস্ট পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, সিআইডি, ডিএমপি ও এন্টি টেরোরিজম ইউনিটে পদায়ন করা হয়েছে।
এদিকে গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বেলা ১১টায় শুরু হওয়া আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা দুপুর ১টায় শেষ হয়। পরে ব্রিফ করেন দুই উপদেষ্টা। ব্রিফিংয়ের শুরুতেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ও সিদ্ধান্তের তথ্য জানান। শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্ট আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া শ্রমিকদের অস্থিরতা নিয়ে সরকারের নানা উদ্যোগ তুলে ধরেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ রিফর্মের কাজ চলছে। এজন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তারা একটি রিপোর্ট করবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এখনও দায়িত্বে যোগ দেয়নি, তারা এখন আর পুলিশ নেই। তারা আমাদের কাছে অপরাধী। তিনি বলেন, পুলিশে নতুন নিয়োগ শুরু করেছি। কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। আজকালের মধ্যে এসআই নিয়োগেরও বিজ্ঞপ্তি যাবে। আমরা আনসার ও বিজিবিতেও নতুন নিয়োগের ব্যবস্থা করছি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পূজা যেন নির্বিঘ্নে হতে পারে, সেজন্য আমাদের যত পদক্ষেপ প্রয়োজন সব পদক্ষেপই নেবো। আমরা আশা করি, অতীতের চেয়ে এবারই ভালো পূজা হবে। এজন্য সবার সাহায্য ও সহযোগিতা আমাদের দরকার।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব ভালো বলবো না। তবে সন্তোষজনক। এটাকে কীভাবে আরও ভালো করা যায় উপদেষ্টা কমিটির সভায় আলোচনা করা হয়েছে। আমি আশা করব, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নতির দিকে যাবে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করি।
পার্বত্য অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি আপাতত ভালো। এই পরিস্থিতি যেন বিরাজ করে, সে পদক্ষেপ নিতে আলোচনা হয়েছে। এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তির পর ইউপিডিএফ কিন্তু হাতিয়ার সমর্পণ করেনি, জেএসএস হাতিয়ার সমর্পণ করেছে। এই ইউপিডিএফ জেএসএস এর মধ্যেও ভেতরে ভেতরে ঝামেলা আছে। অন্যান্য নাগরিক যারা আছে, তাদের মধ্যেও অভ্যন্তরীণ একটা ঝামেলা আছে। সবাই যেন মিলেমিশে থাকতে পারে, পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসে, সেই ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। অনেক সময় অস্ত্র এবং ট্রেনিং তারা বাইরে থেকেও পাচ্ছে, সেটা যেন না পায়। আমাদের ব্যবস্থা করতে হবে।
মাদকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মাদক কিন্তু আমাদের সমাজের জন্য বিরাট অভিশাপ। এটা থেকে আমরা কীভাবে মুক্তি পাব, সেজন্য আপনাদেরও সহযোগিতা দরকার। মাদক আসছে, এটা ধরা হচ্ছে। আমরা শুধু বহনকারীদের ধরলে হবে না, গডফাদারদেরও ধরতে হবে। গডফাদারদের না ধরলে কিন্তু মাদক বন্ধ করা মুশকিল। অনেক সময় দেখা যায়, গডফাদাররা ধরা পড়লেও তাড়াতাড়ি জামিন পেয়ে যায়। তারা যেন বিচারের আওতায় আসে এবং উপযুক্ত শাস্তি হয়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন মাজার ও দরগায় কীভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা যায় সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। গার্মেন্টসে অস্থিরতা নিয়েও বিশদ আলোচনা হয়েছে। এর বাইরেও সন্ত্রাসী ও জঙ্গিরা যেন ছাড়া না পায় সে ব্যাপারেও কথা হয়েছে।


























