জাপানের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শক্তি কোম্পানি জাপান’স এনার্জি ফর অ্যা নিউ এরা (জেরা), যাদের বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা কম- বেশি ৬১,০০০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে জাপানের বিদ্যুতের ৩০% ও ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য দেশে ১৩,৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। সেই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে তৈরি করেছে দেশের বৃহৎ গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ৭১৮ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টটি নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে অবস্থিত। এটি নির্মাণে জাপানিজ প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ভারতীয় রিলায়েন্স পাওয়ার হলেও এর মালিকানা জাপানের বহুজাতিক কোম্পানি জেরার। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে জেরার সঙ্গে চুক্তিপত্র সম্পাদন হয় বিপিডিবির। গত ২৬ অক্টোবর শেষ হয় পরীক্ষামূলক কার্যক্রমও। চুক্তি অনুযায়ী, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল) এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ করবে। এজন্য সংস্থাটির সঙ্গে জিএসএ (গ্যাস সাপ্লাই এগ্রিমেন্ট) সই হয়। কেন্দ্রটি ২২ বছর পিডিবিকে বিদ্যুৎ সূত্র: বিপিডিবি সরবরাহ করবে। এ কেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ক্রয়ে বিপিডিবির ৫ টাকা ৮৪ পয়সা ব্যয় হবে। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য প্রায় এক বছর আগে প্রস্তুত হলেও গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় কেন্দ্রটি নিয়ে
মুখে পড়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের বন্ধু রাষ্ট্র জাপানের বিনিয়োগ। অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে একই সময়ে গড়ে ওঠা সামিট ও ইউনিকের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছে। অথচ সব রকমের প্রস্তুতি থাকার পরও অদৃশ্য কারণে জাপানের বিনিয়োগের গড়ে ওঠা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এখনো উৎপাদনে যেতে পারেনি। জানা গেছে, মেঘনাঘাটে সামিট মেঘনাঘাট-২ বিদ্যুৎকেন্দ্র চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল এবং ইউনিক মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি উৎপাদন শুরু করেছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে জেরা মেঘনাঘাটে গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। ফলে প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়ায় তারা বাণিজ্যিক উৎপাদনে (সিওডি) যেতে পারছে না। কেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে না পারলেও জেরাকে গুণতে হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ঋণের কিস্তি। সম্প্রতি জেরার পক্ষ থেকে অন্তবর্তী সরকারের কাছে গ্যাস সরবরাহ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। চুক্তি থাকার পরেও গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে না এই প্রতিষ্ঠানে। জ্বালানী খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করেও প্রয়োজনীয় গ্যাস পাচ্ছে না। এই অবস্থায় বাংলাদেশে জাপানিজ বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা যেতে পারে ও বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে। অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছের বন্ধু রাষ্ট্র জাপানের বিনিয়োগ। অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে একই সময়ে গড়ে ওঠা সামিট ও ইউনিকের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছে। অথচ সব রকমের প্রস্তুতি থাকার পরও অদৃশ্য কারণে জাপানের বিনিয়োগের গড়ে ওঠা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এখনো উৎপাদনে যেতে পারেনি। জানা গেছে, মেঘনাঘাটে সামিট মেঘনাঘাট-২ বিদ্যুৎকেন্দ্র চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল এবং ইউনিক মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি উৎপাদন শুরু করেছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে জেরা মেঘনাঘাটে গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। ফলে প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়ায় তারা বাণিজ্যিক উৎপাদনে (সিওডি) যেতে পারছে না। কেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে না পারলেও জেরাকে গুণতে হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ঋণের কিস্তি। সম্প্রতি জেরার পক্ষ থেকে অন্তবর্তী সরকারের কাছে গ্যাস সরবরাহ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। চুক্তি থাকার পরেও গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে না এই প্রতিষ্ঠানে। জ্বালানী খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করেও প্রয়োজনীয় গ্যাস পাচ্ছে না। এই অবস্থায় বাংলাদেশে জাপানিজ বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা যেতে পারে ও বাংলাদেশে বিনিয়োগে তারা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। তারা বলছেন, শিগগির কেন্দ্রটি চালু করতে চুক্তি অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা প্রয়োজন। জেরা মেঘনা ঘাট পাওয়ার লিমিটিডের হেড অফ কন্ট্রাক্টস এন্ড কমার্সিয়াল স্মিতেশ বৈদ্য বলেছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বানিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারবে যদি নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ করা হয়। তিনি আরো জনান, আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এই প্রকল্পটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর, অত্যন্ত কর্মদক্ষ টার্বাইন এবং প্রতিযোগিতামূলক দামে বাংলাদেশের জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে যুক্ত হবে। আমাদের বিশ্বাস বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই কেন্দ্রটি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। জ্বালানি ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, জেরার বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অবশ্যই গ্যাস দেওয়া উচিত। আর তা না হলে বিদেশী বিনিয়োগের উপর নেচিবাচক প্রভাব পড়বে। এমন মেসেজ যাবে, ফরেন ইনভেষ্টমেন্টকে ঠিকমতো অপারেট করতে দেওয়া হচ্ছে না।
প্রায় ৩৫ একর জমির ওপর ২০১৯ সালে মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড প্রকল্পের কাজ শুরু করে। জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) থেকে প্রধান সরঞ্জাম ক্রয় এবং স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি করপোরেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট এবং নির্মাণ চুক্তির ভিত্তিতে প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হলেও সরকারের গ্যাসলাইন সঞ্চালন লাইন চালু করতে ধাপে ধাপে বিলম্বের মুখে পড়ে। সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় জেরা নিজ খরচে শাখা পাইপলাইন বসাতে বাধ্য হয়। নানা ঝক্কি-ঝামেলা পেরিয়ে প্রকল্পটি ৮ মাস আগে পরীক্ষামূলক উৎপাদন চালু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ অক্টোবর বাণিজ্যিক অপারেশন অর্জনের জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের সপ্তাহব্যাপী পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন রেকর্ড করা হয়। তিতাসের প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে পরীক্ষামূলক উৎপাদনের শেষদিন ১০০-১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবাহ করা হয়, যা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে এই কেন্দ্রে প্রায় ৮০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড করা হয়। পরীক্ষমূলকভাবে পঞ্চম দিনে ৫৪০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৯০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ রেকর্ড করা হয়। গত ৮ মাসে বিভিন্ন মাত্রায় এখানে তিতাসের গ্যাস ব্যবহার করা হয়। ইতিমধ্যে জেরা তিতাসের সমস্ত বিল পরিশোধও করেছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সরকারের সঙ্গে জেরার আনুষ্ঠানিক চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে গ্যাস কিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কেন্দ্রটি ২২ বছর পিডিবিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পিডিবির কাছে বিক্রি করবে জেরা ৭ দশমিক ৩১২৩ সেন্ট বা ৫ টাকা ৮৪ পয়সা দরে বিক্রি করবে। এই কেন্দ্র বাণ্যিজিক উৎপাদনে যাওয়ার পর উৎপাদিত ৪০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ পিজিসিবির মেঘনাঘাট সাব স্টেশন হয়ে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। জানা গেছে, জেরা মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যেতে মন্ত্রণালয় পিডিবি ও পেট্রোবাংলার কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছে। বাংলাদেশের শক্তিশালী বন্ধু জাপানের অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ বেশ কিছু অবকাঠামো প্রকল্প স্থাপন করা হয়েছে। ওইসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে নানাভাবে অবদান রাখছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অত্যাধুনিক সুবিধা, সবচেয়ে দক্ষ টারবাইন এবং কম শুল্কসহ জেরা মেঘনাঘাট প্রকল্প বাংলাদেশের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার জন্য একটি বড় উদাহরণ সৃষ্টি করবে। জেরা জাপানের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি। এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন দেশে বর্তমান প্রায় ৬১ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করছে। এর মধ্যে জাপানের বিদ্যুতের ৩০ শতাংশ এবং ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য দেশে ১৩ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে জেরা। জেরা তাদের অধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশাপাশি ১৫টি দেশে এলএনজি সরবরাহ করছে। মাতারবাড়ীতে এলএনজি টার্মিনাল করতে আগ্রহী জেরা নতুনভাবে আলোচিত মাতারবাড়ীতে এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করতে আগ্রহ দেখিয়েছে জেরা। জেরা জাপানে ১১টি জমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল পরিচালনা করে। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় এবং খারাপ আবহাওয়ার প্রবণতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের দুটি ভাসমান জাহাজভিত্তিক এফএসআরইউ রয়েছে। এ বছর একটি এফএসআরইউ ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে অপারেশনের জন্য যোগ্য ছিল না, যা উল্লেখযোগ্যভাবে গ্যাস সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জেরার প্রস্তাবনা তারা বাংলাদেশে জমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্প, পুনঃনবায়নযোগ্য প্রকল্প উন্নয়ন (সৌর, বায়ু), বিকল্প শক্তি (হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়া) ও এলএনজি সরবরাহে ভবিষ্যতের বিনিয়োগে আগ্রহী। আগামীতে আরো প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ করার প্রয়াস জাপানের। দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে জেরা বাংলাদেশের জন্য শূন্য কার্বন নির্গমন বিষয় নিয়ে সুবিন্যস্ত পরিসরে কাজ করছে। পাশাপাশি দেশের টেকসই ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। ভবিষ্যতে জেরা বাংলাদেশে স্থায়ী অফিস স্থাপনের চিন্তাভাবনা করছে।
শিরোনাম
গ্যাসের অভাবে চালু হচ্ছে না বিদ্যুৎকেন্দ্র
জেরার ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ
-
টিপু সুলতান - আপডেট সময় : ১০:৩৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪
- ।
- 76
জনপ্রিয় সংবাদ






















