০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদারগঞ্জে নতুন গ্যাস কূপ খনন শুরু

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামে গ্যাস অনুসন্ধানে কূপ খনন কাজ শুরু হয়েছে। নতুন কূপ থেকে গড়ে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গ্যাস পাওয়া যাবে ২৫ থেকে ৩০ বছর। উত্তোলন করা গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েবের সভাপতিত্বে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান, ডিরেক্টর (অপারেশন্স) রফিকুল ইসলাম, বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.শোয়েব, জেনারেল ম্যানেজার (ড্রিলিং) গাজী মো. মাহবুবুল হক, জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আফসানা তাসলিমা। চলতি বছর এপ্রিলে কূপ খনন কাজ শেষ হবে। এই কূপে গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিত হলে অত্র এলাকার শেরপুর, ঘাটাইলে আরও ৩টি কূপ খনন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

জামালপুরের মাদারগঞ্জে নতুন গ্যাস কূপ খনন শুরু হয়েছে -সবুজ বাংলা

বাপেক্স জানিয়েছে, জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৬৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে মাদারগঞ্জের ২৮০০ মিটার গভীরতার এই কূপটি খনন করা হচ্ছে। ২৮০০ মিটার কূপ খননের পর ২৮০ বিসিএফ গ্যাস পাওয়া গেলে ভোক্তা পর্যায় বিবেচনায় এর বাজার মূল্য দাঁড়াবে ১৬ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা (বাপেক্স মার্জিন বিবেচনায় ৩,১৭১ কোটি)। এই গ্যাস জামালপুরের সরিষাবাড়ী যমুনা সার কারখানাসহ জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন যুক্ত হবে ১০ এমএমএসসিএফ গ্যাস। বাপেক্সের প্রকৌশলী ও শ্রমিকসহ ২২০ জন খননকাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
বাপেক্স কর্মকর্তারা জানান, এক্সপ্লোরেশন ব্লক-৮ এর জামালপুর-মাদারগঞ্জ এলাকায় ১৯৮৪ সালে সংগৃহীত সাইসমিক উপাত্ত থেকে প্রথম লিড/প্রসপেক্টের ধারণা পাওয়া যায়। বেশ কয়েকবার এই জায়গায় জরিপ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৪-২০১৫ মাঠ-মৌসুমে উক্ত এলাকায় দ্বিমাত্রিক সাইসমিক জরিপ ও ২০১৫-২০১৬ সালে ঈষড়ংব-মৎরফ ংবরংসরপ ংঁৎা- সম্পাদন করা হয়। সেই তথ্য অনুযায়ী এ জায়গায় গ্যাস পাওয়া যাবে। গঙঊঈঙ/ঔএও, চবঃৎড়নধহমষধ ্ ইচও কর্তৃক যৌথভাবে বিদ্যমান তথ্য-উপাত্ত স্টাডি করে ব্লক ৮ ও ১১ এর লিড/প্রসপেক্ট মূল্যায়ন এবং দ্বিমাত্রিক সাইসমিক উপাত্তের ভিত্তিতে বেসিন মডেলিং করে। উক্ত গবেষণা অনুযায়ী সনাক্তকৃত ৩টি প্রসপেক্ট (২অ, ২ই, ২ঈ) এর মধ্যে ২ই প্রসপেক্টটি সর্বোচ্চ সম্ভাবনাময় হিসেবে র‌্যাংঙ্কি করে। এই প্রসপেক্টে জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ নামে কূপ খনন স্থান সহ অন্যান্য কারিগরি প্যারামিটার নির্ধারণ করা হয়।
কূপটির ড্রিলিং ও রিগ ইনচার্জ মো. রকিবুল হাসান বলেন, ‘গত ১২ জানুয়ারি কূপ খননের স্থানে ড্রিলিং রিগ স্থাপন করা হয়েছে। ৯০ দিন চলবে এই খননকাজ। প্রাথমিকভাবে কূপটি মাটির নিচে ২ হাজার ৮০০ মিটার পর্যন্ত খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনটি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। খনন শেষে প্রতিটি জোন থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হতে পারে। উত্তোলন করা গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।

গ্যাসের সংকট কমাতে সরকার আগামী দুই বছরে সারা দেশে ১০০টি নতুন গ্যাস কূপ খনন করা হবে এবং পুরোনো ৩১টি গ্যাস কূপ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তবে আগামী ৫ থেকে ১০ বছরে নতুন আবাসিক সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে না। আর যারা অর্থ দিয়েছেন তারা সেই অর্থ ফেরত নিতে পারবেন বলে জানান তিনি। গ্যাস মজুদের জায়গার স্বল্পতা থাকায় বৃহৎ আকারে আমদানি সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরকার মজুদের জায়গা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব।
দেশের অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে বাড়তি গ্যাস প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

মাদারগঞ্জে নতুন গ্যাস কূপ খনন শুরু

আপডেট সময় : ০৫:১২:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামে গ্যাস অনুসন্ধানে কূপ খনন কাজ শুরু হয়েছে। নতুন কূপ থেকে গড়ে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গ্যাস পাওয়া যাবে ২৫ থেকে ৩০ বছর। উত্তোলন করা গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েবের সভাপতিত্বে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান, ডিরেক্টর (অপারেশন্স) রফিকুল ইসলাম, বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.শোয়েব, জেনারেল ম্যানেজার (ড্রিলিং) গাজী মো. মাহবুবুল হক, জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আফসানা তাসলিমা। চলতি বছর এপ্রিলে কূপ খনন কাজ শেষ হবে। এই কূপে গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিত হলে অত্র এলাকার শেরপুর, ঘাটাইলে আরও ৩টি কূপ খনন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

জামালপুরের মাদারগঞ্জে নতুন গ্যাস কূপ খনন শুরু হয়েছে -সবুজ বাংলা

বাপেক্স জানিয়েছে, জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৬৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে মাদারগঞ্জের ২৮০০ মিটার গভীরতার এই কূপটি খনন করা হচ্ছে। ২৮০০ মিটার কূপ খননের পর ২৮০ বিসিএফ গ্যাস পাওয়া গেলে ভোক্তা পর্যায় বিবেচনায় এর বাজার মূল্য দাঁড়াবে ১৬ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা (বাপেক্স মার্জিন বিবেচনায় ৩,১৭১ কোটি)। এই গ্যাস জামালপুরের সরিষাবাড়ী যমুনা সার কারখানাসহ জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন যুক্ত হবে ১০ এমএমএসসিএফ গ্যাস। বাপেক্সের প্রকৌশলী ও শ্রমিকসহ ২২০ জন খননকাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
বাপেক্স কর্মকর্তারা জানান, এক্সপ্লোরেশন ব্লক-৮ এর জামালপুর-মাদারগঞ্জ এলাকায় ১৯৮৪ সালে সংগৃহীত সাইসমিক উপাত্ত থেকে প্রথম লিড/প্রসপেক্টের ধারণা পাওয়া যায়। বেশ কয়েকবার এই জায়গায় জরিপ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৪-২০১৫ মাঠ-মৌসুমে উক্ত এলাকায় দ্বিমাত্রিক সাইসমিক জরিপ ও ২০১৫-২০১৬ সালে ঈষড়ংব-মৎরফ ংবরংসরপ ংঁৎা- সম্পাদন করা হয়। সেই তথ্য অনুযায়ী এ জায়গায় গ্যাস পাওয়া যাবে। গঙঊঈঙ/ঔএও, চবঃৎড়নধহমষধ ্ ইচও কর্তৃক যৌথভাবে বিদ্যমান তথ্য-উপাত্ত স্টাডি করে ব্লক ৮ ও ১১ এর লিড/প্রসপেক্ট মূল্যায়ন এবং দ্বিমাত্রিক সাইসমিক উপাত্তের ভিত্তিতে বেসিন মডেলিং করে। উক্ত গবেষণা অনুযায়ী সনাক্তকৃত ৩টি প্রসপেক্ট (২অ, ২ই, ২ঈ) এর মধ্যে ২ই প্রসপেক্টটি সর্বোচ্চ সম্ভাবনাময় হিসেবে র‌্যাংঙ্কি করে। এই প্রসপেক্টে জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ নামে কূপ খনন স্থান সহ অন্যান্য কারিগরি প্যারামিটার নির্ধারণ করা হয়।
কূপটির ড্রিলিং ও রিগ ইনচার্জ মো. রকিবুল হাসান বলেন, ‘গত ১২ জানুয়ারি কূপ খননের স্থানে ড্রিলিং রিগ স্থাপন করা হয়েছে। ৯০ দিন চলবে এই খননকাজ। প্রাথমিকভাবে কূপটি মাটির নিচে ২ হাজার ৮০০ মিটার পর্যন্ত খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনটি জোনে প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। খনন শেষে প্রতিটি জোন থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হতে পারে। উত্তোলন করা গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।

গ্যাসের সংকট কমাতে সরকার আগামী দুই বছরে সারা দেশে ১০০টি নতুন গ্যাস কূপ খনন করা হবে এবং পুরোনো ৩১টি গ্যাস কূপ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তবে আগামী ৫ থেকে ১০ বছরে নতুন আবাসিক সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে না। আর যারা অর্থ দিয়েছেন তারা সেই অর্থ ফেরত নিতে পারবেন বলে জানান তিনি। গ্যাস মজুদের জায়গার স্বল্পতা থাকায় বৃহৎ আকারে আমদানি সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরকার মজুদের জায়গা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব।
দেশের অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে বাড়তি গ্যাস প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার।