১১:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানিকগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলোর বেহাল দশা নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে। জেলার ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শ্রেণিকক্ষের সংকট ও ভবনের অবকাঠামোগত দুরবস্থার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষার মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
এদিকে, জেলার পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ভবনগুলোর তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আখতার। তবে, এখনো পর্যন্ত এসব বিদ্যালয়ের সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ঘিওর উপজেলার ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের বাঠইমুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয় ভবনের পিলারে দেখা দিয়েছে বড় ফাটল, স্তম্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছে মরিচা ধরা রড। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারাও খসে পড়ছে। এমন ভয়াবহ অবস্থার মধ্যেই শিশুদের পাঠদান চলছে। ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের বাঠইমুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র দেখলে অবস্থা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিদ্যালয়ের একতলা ভবনের দুইটি কক্ষ এখন ব্যবহার অনুপযোগী। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের বারান্দায় বসে ক্লাস করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বর্ষার সময় পানি পড়ার কারণে তাদের বই-খাতা ভিজে যায়, আবার গ্রীষ্মকালে অসহনীয় গরমে ক্লাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।
একই অবস্থা উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুরনো টিনশেড ঘরে কোনো রকমে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ঘরটির অবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। বিদ্যালয়ে টয়লেট সংকটও প্রকট। ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র একটি টয়লেট থাকায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় মোট ৬৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি উপজেলার ২৬টি বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ। এর মধ্যে ঘিওর উপজেলায় ১৬টি, সিংগাইর উপজেলায় ৪টি, হরিরামপুর উপজেলায় ২টি, সাটুরিয়া উপজেলায় ২টি, শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলায় ১টি করে বিদ্যালয় রয়েছে।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির হার কমে যাচ্ছে।
বাঠইমুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ের ভবনের অবস্থা খুব খারাপ। স্কুলের ভবন ভাঙাচোরা। পড়াশোনা করতে অনেক কষ্ট হয়। ছাদের ফাটল দিয়ে পানি পড়ে, তাই বারান্দায় বসে ক্লাস করতে হয়। অন্য স্কুলের বিল্ডিং কত সুন্দর। আমাদের স্কুলেও সুন্দর ক্লাসরুম করা হোক।
উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বৃষ্টি হলে ক্লাস রুমে পানি পড়ে, আর গরমের দিনে ফ্যান চালানো যায় না। ক্লাসরুমের দরজা, জানালা ভাঙা। আর সবার জন্য শুধুমাত্র একটা টয়লেট। আমাদের কষ্টের শেষ নেই।
অভিভাবক রাবেয়া আক্তার বলেন, আমার ছেলে উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। স্কুলের অবস্থা দেখে ভয় লাগে। প্রতিদিন আমি তাকে স্কুলে নিয়ে আসি, তারপরও মনে সবসময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে।
তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা রোকেয়া খাতুন বলেন, আমার মেয়ে প্রতিদিন বলে অন্য স্কুলে ভর্তি করাতে। কিন্তু দূরে যাওয়া কষ্টকর, তাই এখানেই পড়াচ্ছি। সরকার দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করুক।
উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের টিনশেড ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী। শ্রেণিকক্ষের সংকট এত বেশি যে বাধ্য হয়ে পুরনো ঘরেই ক্লাস নিতে হচ্ছে। বর্ষায় ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, আর গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরমে ক্লাস করা যায় না।
বাঠইমুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নবনীতা সেন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিশুদের ভিত্তি গড়ার জায়গা। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে আমরা শিক্ষার্থীদের মানসম্মত পরিবেশ দিতে পারছি না শুধুমাত্র সুন্দর ও ভালো শ্রেণী কক্ষের জন্য।
প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) খালেদা মঞ্জুর এ খোদা জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের অবস্থান খুব সুন্দর একটি জায়গায়। আগে আমাদের বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু ভবনের দুরবস্থার কারণে অভিভাবকরা অন্যত্র ভর্তি করাচ্ছেন। অভিভাবকরা বলেন, এই ভবন ঠিক করা না হলে এখানে ভর্তি করা সম্ভব না। এখন সব মিলিয়ে মাত্র ১০০ জন শিক্ষার্থী হবে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আখতার বলেন, মানিকগঞ্জের পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়গুলোর তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যালয়গুলোর নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ জেলার ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন অনিরাপদ পরিবেশে ক্লাস করছে। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত এসব বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা না নিলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
জনপ্রিয় সংবাদ

সোনারগাঁয়ে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করায় গুড়িয়ে দেয়া হয় দু’টি প্রতিষ্ঠান, একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

মানিকগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

আপডেট সময় : ০৭:৩৩:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলোর বেহাল দশা নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে। জেলার ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শ্রেণিকক্ষের সংকট ও ভবনের অবকাঠামোগত দুরবস্থার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষার মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
এদিকে, জেলার পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ভবনগুলোর তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আখতার। তবে, এখনো পর্যন্ত এসব বিদ্যালয়ের সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ঘিওর উপজেলার ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের বাঠইমুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয় ভবনের পিলারে দেখা দিয়েছে বড় ফাটল, স্তম্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছে মরিচা ধরা রড। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারাও খসে পড়ছে। এমন ভয়াবহ অবস্থার মধ্যেই শিশুদের পাঠদান চলছে। ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের বাঠইমুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র দেখলে অবস্থা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিদ্যালয়ের একতলা ভবনের দুইটি কক্ষ এখন ব্যবহার অনুপযোগী। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের বারান্দায় বসে ক্লাস করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বর্ষার সময় পানি পড়ার কারণে তাদের বই-খাতা ভিজে যায়, আবার গ্রীষ্মকালে অসহনীয় গরমে ক্লাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।
একই অবস্থা উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুরনো টিনশেড ঘরে কোনো রকমে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ঘরটির অবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। বিদ্যালয়ে টয়লেট সংকটও প্রকট। ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র একটি টয়লেট থাকায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় মোট ৬৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি উপজেলার ২৬টি বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ। এর মধ্যে ঘিওর উপজেলায় ১৬টি, সিংগাইর উপজেলায় ৪টি, হরিরামপুর উপজেলায় ২টি, সাটুরিয়া উপজেলায় ২টি, শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলায় ১টি করে বিদ্যালয় রয়েছে।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির হার কমে যাচ্ছে।
বাঠইমুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ের ভবনের অবস্থা খুব খারাপ। স্কুলের ভবন ভাঙাচোরা। পড়াশোনা করতে অনেক কষ্ট হয়। ছাদের ফাটল দিয়ে পানি পড়ে, তাই বারান্দায় বসে ক্লাস করতে হয়। অন্য স্কুলের বিল্ডিং কত সুন্দর। আমাদের স্কুলেও সুন্দর ক্লাসরুম করা হোক।
উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বৃষ্টি হলে ক্লাস রুমে পানি পড়ে, আর গরমের দিনে ফ্যান চালানো যায় না। ক্লাসরুমের দরজা, জানালা ভাঙা। আর সবার জন্য শুধুমাত্র একটা টয়লেট। আমাদের কষ্টের শেষ নেই।
অভিভাবক রাবেয়া আক্তার বলেন, আমার ছেলে উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। স্কুলের অবস্থা দেখে ভয় লাগে। প্রতিদিন আমি তাকে স্কুলে নিয়ে আসি, তারপরও মনে সবসময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে।
তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা রোকেয়া খাতুন বলেন, আমার মেয়ে প্রতিদিন বলে অন্য স্কুলে ভর্তি করাতে। কিন্তু দূরে যাওয়া কষ্টকর, তাই এখানেই পড়াচ্ছি। সরকার দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করুক।
উভাজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের টিনশেড ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী। শ্রেণিকক্ষের সংকট এত বেশি যে বাধ্য হয়ে পুরনো ঘরেই ক্লাস নিতে হচ্ছে। বর্ষায় ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, আর গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরমে ক্লাস করা যায় না।
বাঠইমুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নবনীতা সেন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিশুদের ভিত্তি গড়ার জায়গা। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে আমরা শিক্ষার্থীদের মানসম্মত পরিবেশ দিতে পারছি না শুধুমাত্র সুন্দর ও ভালো শ্রেণী কক্ষের জন্য।
প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) খালেদা মঞ্জুর এ খোদা জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের অবস্থান খুব সুন্দর একটি জায়গায়। আগে আমাদের বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু ভবনের দুরবস্থার কারণে অভিভাবকরা অন্যত্র ভর্তি করাচ্ছেন। অভিভাবকরা বলেন, এই ভবন ঠিক করা না হলে এখানে ভর্তি করা সম্ভব না। এখন সব মিলিয়ে মাত্র ১০০ জন শিক্ষার্থী হবে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আখতার বলেন, মানিকগঞ্জের পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়গুলোর তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যালয়গুলোর নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ জেলার ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন অনিরাপদ পরিবেশে ক্লাস করছে। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত এসব বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা না নিলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।